এই আবাসনেই চুরির অভিযোগ। বরাকরে। নিজস্ব চিত্র
দরজা ভেঙে কুলটি থানার বরাকর প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রের এক চিকিৎসকের তালাবন্ধ আবাসনে লুটপাটের অভিযোগ উঠেছে। মঙ্গলবার সকালে বিষয়টি জানাজানি হতেই ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মীরা। এর আগেও বার কয়েক ওই স্বাস্থ্যকেন্দ্রেও চুরি হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন তাঁরা।
স্বাস্থ্যকেন্দ্রের বিএমওএইচ অনির্বাণ রায় জানান, হাসপাতালের চিকিৎসক রবি রঞ্জন সোমবার ছুটিতে ছিলেন। তাঁর আবাসনও তালাবন্ধ ছিল। মঙ্গলবার ভোরে হাসপাতালের কর্মীরা ওই চিকিৎসকের আবাসনের দরজা হাট করে খোলা দেখে তাঁকে বিষয়টি জানান। অনির্বাণ বলেন, “আবাসনে গিয়ে দেখা যায়, দুষ্কৃতীরা রাতে যথেচ্ছ লুটপাট চালিয়েছে।”
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, দুষ্কৃতীরা আবাসনের পিছনের দিকের দরজা ভেঙে ঘরে ঢোকে। জানা গিয়েছে, নগদ কয়েক হাজার টাকা-সহ কয়েকটি বৈদ্যুতিন সামগ্রী চুরি গিয়েছে। যে শাবলটি দিয়ে দরজা ভাঙা হয়েছে, দুষ্কৃতীরা সেটি ফেলে গিয়েছে বলে জানা যায়। চুরির খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে যায় পুলিশ। পুলিশ জানায়, ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে।
এ দিকে, চুরিকে কেন্দ্র করে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মীরা। তাঁদের অভিযোগ, বার বার এমন ঘটনা ঘটলেও পুলিশ কোনও কিনারা করতে পারেনি। অনির্বাণ জানান, মাস কয়েক আগে হাসপাতালে ঢোকার মুখে বসানো লোহার বড় গেটটি দুষ্কৃতীরা খুলে নিয়ে গিয়েছে। তাঁর অভিযোগ, “দুষ্কৃতীরা ধরা না পড়ার ফলেই বার বার চুরি, লুটপাট চলছে।” স্থানীয় সূত্রেও জানা গিয়েছে, প্রায় তিনটি আবাসনের লোহার গ্রিল দরজা, জানলা খুলে নিয়ে গিয়েছে দুষ্কৃতীরা।
স্থানীয় সূত্রে এ-ও জানা যাচ্ছে, এই পরিস্থিতিতে কোনও চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মীরা আবাসনে থাকতে চাইছেন না। তাঁরা নিরাপত্তার অভাব বোধ করছেন। ফলে, চিকিৎসা পরিষেবাতেও প্রভাব পড়ছে।
বিষয়টি নিয়ে ক্ষোভপ্রকাশ করেছেন কুলটির বিধায়ক তথা চিকিৎসক অজয় পোদ্দার। তিনি বলেন, “দু’টিই সরকারি এজেন্সি। তার পরেও হাসপাতালের নিরাপত্তা নিয়ে এত চিন্তা হবে কেন। মার্চে পরিবারকল্যাণ দফতরের স্থায়ী কমিটি কুলটি বিধানসভা এলাকায় পরিদর্শনে আসবে। সে সময় স্বাস্থ্যকেন্দ্রটি দেখিয়ে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করার জন্য প্রস্তাব দেওয়া হবে।” যদিও, তৃণমূলের জেলা চেয়ারম্যান তথা প্রাক্তন বিধায়ক উজ্জ্বল চট্টোপাধ্যায়ের বক্তব্য, “স্বাস্থ্য পরিষেবা প্রদানের ক্ষেত্রে রাজনীতি না করে গঠনমূলক পদক্ষেপ করতে হয়। পশ্চিমবঙ্গে এই কাজ শুধু তৃণমূলই করে।”