কুলটির এই স্কুলে জলের সমস্যা। নিজস্ব চিত্র।
পানীয় জলের সঙ্কট দেখা দিয়েছে স্কুল। এর জেরে বন্ধ হওয়ার উপক্রম হয়েছে মিড-ডে মিল রান্না। এমনটাই দাবি করেছেন, আসানসোলের বড়ধেমো অবৈতনিক প্রাথমিক স্কুল কর্তৃপক্ষ। মিড-ডে মিল চালু রাখতে নিজেদের পকেটের টাকা খরচ করে জলের ব্যবস্থা করেছেন বলে জানিয়েছেন শিক্ষক-শিক্ষিকারা। কর্তৃপক্ষের দাবি, পুরসভার কাছে স্কুলের তরফে সমস্যা মেটানোর আবেদন জানানো হলে, জলের সংযোগ নেওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়। কিন্তু অর্থের অভাবে তা নেওয়া সম্ভব হচ্ছে না। যদিও পুর-কর্তৃপক্ষের দাবি, জল-সঙ্কটের কথা স্কুলের তরফে জানানো হয়নি।
৫৮ নম্বর ওয়ার্ডের ধেমোমেন এলাকায় রয়েছে প্রায় ৭০ বছরের পুরনো এই বড়ধেমো অবৈতনিক প্রাথমিক স্কুল। স্কুল সূত্রে জানা গিয়েছে, পড়ুয়ার সংখ্যা ১৬৪ জন। পাঁচ জন শিক্ষক-শিক্ষিকা। স্কুলে একটি নলকূপ আছে। মিড-ডে মিল রান্না, ধোয়া-মাজা, পান করা, শৌচাগারে ব্যবহারের জন্য প্রতিদিন হাজার লিটার জলের প্রয়োজন। স্কুল কর্তৃপক্ষের দাবি, গত প্রায় ছ’মাস ধরে পানীয় জলের চলছে। মাসখানেক ধরে এই সমস্যা তীব্র আকার নিয়েছে। প্রধান শিক্ষিকা জয়ন্তী দত্ত জানিয়েছেন, পরিস্থিতি এমন হয়েছে যে ডেকরেটর্স থেকে ড্রাম ভাড়া করে এনে পুরসভার ট্যাঙ্কের জল মজুত করা হয়েছে। এ জন্য পকেটের টাকা খরচ করছেন স্কুলের শিক্ষক-শিক্ষিকারা। তাঁর দাবি, কিন্তু জল খারাপ বলে ব্যবহার করা যায় না। জলের অভাবে স্কুলে পড়ুয়াদের উপস্থিতিও কমেছে বলে দাবি স্কুল কর্তৃপক্ষের।
প্রধান শিক্ষিকা জয়ন্তী বলেন, “এই পরিমাণ (হাজার লিটার) জল কিনতে হলে প্রতিদিন প্রায় চারশো টাকা খরচ করতে হবে। এই টাকা স্কুলের সঞ্চয়ে নেই।” তাঁর দাবি, “জলের সমস্যা মেটাতে গত বছর ৬ নভেম্বর পুর-কর্তৃপক্ষকে চিঠি দিয়েছিলাম। লাভ হয়নি। গত মঙ্গলবার ফের চিঠি দেওয়া দিয়েছি।” জয়ন্তী জানিয়েছেন, স্কুল লাগোয়া একটি জলের পাইপ গিয়েছে। এতদিন সেই লাইন থেকেই তাঁরা জল পাচ্ছিলেন। ওই পাইপে জল পড়া বন্ধ হওয়ায় বিপত্তি দেখা দিয়েছে। তাঁর দাবি, পুরসভার তরফে এলাকায় সম্প্রতি পাইপ পাতা হয়েছে। পুরসভার তরফে তাঁদের ওই পাইপের সংযোগ নেওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। কিন্তু প্রায় ছ’হাজার টাকা দিয়ে সংযোগ নেওয়ার ক্ষমতা স্কুলের নেই।
এ বিষয়ে জেলা প্রাথমিক শিক্ষা সংসদের চেয়ারম্যান রথীন্দ্রনাথ মজুমদার বলেন, “বিষয়টি আমার জানা নেই। আমি পুর-কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলে ব্যবস্থা নেব।” পুরসভার মেয়র পারিষদ (শিক্ষা) সুব্রত অধিকারী জানান, ওই স্কুলটি যদি সরকারি হয়ে থাকে তবে তাদের পুরসভার জলের সংযোগ নিতে কোনও টাকা এককালীন জমা করতে হবে না। তবে, পাইপ ও অন্য সামগ্রীর খরচ বহন করতে হবে। স্কুলের তরফে আবেদন করা হলেই ব্যবস্থা নেওয়া হবে।” সুব্রতর অবশ্য দাবি, জল সঙ্কটের কথা স্কুলের তরফে জানানো হয়নি। জানালে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।