চলছে পুকুর, ডোবা পরিষ্কার করার কাজ। সোমবার। নিজস্ব চিত্র jayantamosan@gmail.com
ডেঙ্গি আক্রান্তের সংখ্যা ক্রমশ বাড়ছে দুর্গাপুর পুর-এলাকায়। সোমবার শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত দুর্গাপুরের পলাশডিহা-সহ নানা এলাকায় মোট ৫০ জন ডেঙ্গি আক্রান্তের সন্ধান মিলেছে বলে স্বাস্থ্য দফতর জানিয়েছে। পরিস্থিতির মোকাবিলায় এ দিন জেলা স্বাস্থ্য দফতর সৃজনী প্রেক্ষাগৃহে পুরসভার স্বাস্থ্যকর্মীদের নিয়ে বিশেষ বৈঠক করে। পাশাপাশি, এ দিনই রাজ্য পুর ও নগরোন্নয়ন দফতর বিভিন্ন পুরসভাকে নিয়ে আয়োজিত ভার্চুয়াল বৈঠকে ডেঙ্গি রোধে প্রয়োজনীয় পরামর্শ ও নির্দেশ দেয়।
জেলার ডেপুটি সিএমওএইচ (৩) কেকা মুখোপাধ্যায় বলেন, “দুর্গাপুরে ৫০ জন আক্রান্তের খবর পাওয়া গিয়েছে। প্রশাসন ও পুরসভা প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আছে।”
স্বাস্থ্য দফতর সূত্রের খবর, গত ১৬ জুলাই দুর্গাপুর মহকুমা হাসপাতালে ৩২ নম্বর ওয়ার্ডের পলাশডিহার ডেঙ্গি আক্রান্ত এক বাসিন্দাকে ভর্তি করানো হয়। পরে, ওই এলাকা থেকেই মোট ১৪ জন ডেঙ্গি আক্রান্তের সন্ধান মেলে। শনিবার ফের রক্ত পরীক্ষা করা হয়। এ বার আরও ১২ জনের ‘এনএস ১ অ্যান্টিজেন’ পজ়িটিভ রিপোর্ট পাওয়া যায় বলে জানান পুরপ্রশাসকমণ্ডলীর সদস্য তথা স্বাস্থ্য দফতরের ভারপ্রাপ্ত রাখি তিওয়ারি। এ ছাড়াও আরও দু’-একটি ওয়ার্ডেও এক-দু’জন আক্রান্ত হওয়ার খবর পাওয়া গিয়েছে। সব মিলিয়ে সোমবার পর্যন্ত ডেঙ্গি আক্রান্তের সংখ্যাটা ৫০। তাঁদের মধ্যে পাঁচ জন বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। সোমবার আরও অনেকের রক্তপরীক্ষা করা হয়েছে। তবে সে রিপোর্ট রাত পর্যন্ত আসেনি।
দুর্গাপুর পুরসভা সূত্রের খবর, শনিবার ‘স্টেট আরবান ডেভলপমেন্ট অথরিটি’র (সুডা) পতঙ্গবিদ বিশ্বরূপ মিত্র এলাকা পরিদর্শন করেন। পুরসভার স্বাস্থ্যকর্মীরা এলাকার বাসিন্দাদের নিয়মিত সচেতন করছেন। জমা জল দেখলেই ফেলে দেওয়া হচ্ছে। আগাছা সাফ করা, কীটনাশক স্প্রে করা হচ্ছে। জ্বর হলেই স্বাস্থ্যকেন্দ্রে যাওয়া, হাসপাতাল ও স্বাস্থ্যকেন্দ্রে গিয়ে রক্ত পরীক্ষা করানোর পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। সোমবার থেকে এলাকায় পুকুর সাফ করার কাজ শুরু হয়েছে। এ জন্য ৩৫ জনের বিশেষ দল গড়েছে পুরসভা।
মূলত শহরের একটি জায়গায় ডেঙ্গি আক্রান্তের বাড়বাড়ন্ত দেখে জেলা স্বাস্থ্য দফতর এ দিন পুরসভার স্বাস্থ্যকর্মীদের নিয়ে বৈঠক করে। কেকা বলেন, “মূলত শহরের একটি জায়গা থেকেই আক্রান্ত হওয়ার খবর পাওয়া যাচ্ছে। ডেঙ্গি যাতে শহরের অন্যত্র না ছড়ায়, সে দিকে নজর রেখে ওই এলাকা আবর্জনা মুক্ত করা এবং দেখা মাত্র জমা জল সরিয়ে ফেলার ব্যবস্থা করছে পুরসভা।”
বিষয়টি নিয়ে সচেতন হওয়ার ডাক দিয়েছে আদিবাসী সংগঠনগুলিও। ‘দিসম আদিবাসী গাঁওতা’ নামে একটি সংগঠনের তরফে বিশ্বনাথ সরেন বলেন, “সবাইকে সচেতন হতে হবে। বাড়িতে বা আশপাশে আবর্জনা জমিয়ে রাখলে হবে না। জল যেন জমে না থাকে। ডেঙ্গি প্রতিরোধে এলাকাবাসীকে পুরসভা, প্রশাসনের কাজে সহযোগিতাকরতে হবে।”