— প্রতিনিধিত্বমূলক চিত্র।
নেশামুক্তি কেন্দ্রে যুবকের অস্বাভাবিক মৃত্যু। পরিবারের অভিযোগ সেখানে অত্যাচারের কারণেই মৃত্যু হয়েছে যুবকের। তদন্তের দাবি জানিয়ে পূর্ব বর্ধমানের ভাতার থানায় অভিযোগ জানিয়েছে পরিবার। অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্ত শুরু হয়েছে বলে জানিয়েছেন ভাতার থানার ওসি অরুণকুমার সোম।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, মৃত যুবকের নাম জামালউদ্দিন মণ্ডল। বয়স ৩৩ বছর। মঙ্গলকোট থানার সাকোনা নপাড়া গ্রামে তাঁর বাড়ি। নেশা ছাড়াতে মাস দুয়েক আগে তাঁকে ভাতার বাজারের নেশামুক্তি কেন্দ্রে ভর্তি করেছিল পরিবার। জামালউদ্দিনের স্ত্রী এবং দুই সন্তান রয়েছে। স্ত্রী গোলচেহারা বিবি জানিয়েছেন, গত প্রায় তিন বছর ধরে তাঁর স্বামী নেশায় আসক্ত হয়ে পড়েছিলেন। গোলচেহারা বিবি বলেন, ‘‘নেশামুক্তি কেন্দ্রে আমার স্বামীর সঙ্গে সরাসরি দেখা করতে দেওয়া হত না। শুধুমাত্র স্বামীর ছবি আমাদের মোবাইলে পাঠানো হত। ফোন করে জানানো হত, চিকিৎসা চলছে। স্বামী ভাল রয়েছেন। সোমবার রাত প্রায় ২টো নাগাদ নেশামুক্তি কেন্দ্র থেকে বাড়িতে ফোন করে জানানো হয়, আমার স্বামীর হার্ট অ্যাটাক হয়েছে। বর্ধমান হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। হাসপাতালে গিয়ে দেখি স্বামী মারা গিয়েছেন।’’
মৃতের স্ত্রীর দাবি, হার্ট অ্যাটাকে মৃত্যুর কথা বলা হলেও তাঁর স্বামীর দেহে একাধিক জায়গায় আঘাতের চিহ্ন ছিল। তাঁদের ধারণা, মারধরেই মৃত্যু হয়েছে জামালউদ্দিনের। মঙ্গলবার এই নিয়ে নেশামুক্তি কেন্দ্রে বিক্ষোভ দেখান মৃতের পরিবারের লোকজন। ভিতরে তখন প্রায় ৩০ জন রোগী। নপাড়া গ্রামের রাকেশ শেখ নামে এক রোগীকে ছাড়িয়ে নিয়ে যেতে আসে তাঁর পরিবার। কিন্তু তালাবন্ধ দেখে তারা পুলিশের দ্বারস্থ হন। ঘটনার পর ভাতার থানার ওসি নেশামুক্তি কেন্দ্রে আসেন। তখনও গেট বন্ধ ছিল। ওসি এক কর্মীর মাধ্যমে কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দেন, ওই যুবককে যাতে ছেড়ে দেওয়া হয়।
গত শনিবার রাতে ওই নেশামুক্তি কেন্দ্র থেকে পাঁচ জন রোগী জানলা ভেঙে পালিয়ে গিয়েছিলেন। পরে তাঁদের ধরে নিয়ে আসা হয়। পাঁচ জনের মধ্যে ছিলেন জামালউদ্দিন। তিনি ভাতারের পাটনা গ্রামে দিদির বাড়িতে গিয়েছিলেন। তখন তিনি সুস্থই ছিলেন। পরের দিন কী ভাবে মৃত্যু হল যুবকের, সেই প্রশ্নই তুলেছে পরিবার।