(বাঁ দিকে) বিদ্যুৎ চক্রবর্তী। বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। — ফাইল ছবি।
বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য পদ থেকে বিদ্যুৎ চক্রবর্তীকে সরানো উচিত বলে নির্দেশনামায় পর্যবেক্ষণ বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের। মানস মাইতি নামে এক অধ্যাপক তথা বিজ্ঞানীকে প্রকল্প থেকে সরিয়ে দিয়েছিলেন বিদ্যুৎ। ওই অধ্যাপক হাই কোর্টে মামলা করেন। তার পরিপ্রেক্ষিতেই এই পর্যবেক্ষণ বিচারপতির।
মামলাকারীর আইনজীবী বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্য এবং শামিম আহমেদ জানিয়েছেন, ২০০৫ সাল থেকে বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ে কাজ করছেন মানস। সিইআরএন নামে একটি প্রকল্পেও কাজ করছেন তিনি। ২০২১ সালে উপাচার্যের কোনও এক সিদ্ধান্তের প্রতিবাদ করেছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের অধ্যাপকেরা। তার পর তাঁদের আটকে রাখা হয় বলে অভিযোগ। ছ’ঘণ্টার বেশি সময় ধরে অধ্যাপকদের আটকে রাখা হয়। এই ঘটনার প্রতিবাদ করেন মানস। পুলিশ ডেকে এনে অধ্যাপকদের ছাড়াতে সাহায্য করেন। এর পরেই মানসকে শোকজ় করেন উপাচার্য। শোকজ়ে বলা হয়, তিনি অন্য বিভাগের বিষয়ে কেন ঢুকলেন। বিভাগীয় তদন্তও শুরু হয়। এই শোকজ়ের নোটিসকে চ্যালেঞ্জ করে কলকাতা হাই কোর্টে গিয়েছিলেন মানস।
মানসের করা মামলায় বিচারপতি অমৃতা সিংহ বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ পক্ষপাতমূলক কাজ করছে। মানসের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক পদক্ষেপ করতে পারবেন না কর্তৃপক্ষ। এর পর ২০২২ সালের জুলাইয়ে সিইআরএন প্রকল্প থেকে মানসকে সরানোর জন্য উক্ত কর্তৃপক্ষকে চিঠি লেখেন বিদ্যুৎ। কলকাতা হাই কোর্টে আবার মামলা করেন মানস। গত বছর ১৩ জুলাই বিচারপতি মৌসুমী ভট্টাচার্য জানান যে, বিদ্যুৎ উপাচার্য হওয়ার যোগ্য নন। মানসকে প্রকল্প থেকে সরানোর বিষয়টি আদালত খারিজ করে।
মানসকে সরানোর জন্য সিইআরএন কর্তৃপক্ষকে চিঠি দিয়েছিলেন বিদ্যুৎ। তিনি প্রশ্ন তোলেন, এক কর্তৃপক্ষকে দেওয়া কর্তৃপক্ষের চিঠি মানস কী ভাবে পেলেন? ওই বিভাগকে আবার চিঠি লেখেন বিদ্যুৎ। মানসকে সাসপেন্ড করতে বলেন। গত বছর হাই কোর্টের বিচারপতি সৌগত ভট্টাচার্য ওই সাসপেনশন খারিজ করেন। তার পর প্রকল্প থেকে সরানোর সিদ্ধান্ত নেন বিদ্যুৎ। তার পর আবার হাই কোর্টে মামলা করেন মানস। এই মামলায় মঙ্গলবার বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের পর্যবেক্ষণ, উপাচার্য পদ থেকে বিদ্যুৎকে সরানো উচিত। এই নিয়ে কেন্দ্রীয় বিজ্ঞান এবং প্রযুক্তি মন্ত্রককে পরামর্শও দিয়েছেন বিচারপতি। তিনি প্রশ্ন তুলেছেন, কী ভাবে উপাচার্য হলেন বিদ্যুৎ? বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে তিনি নির্দেশ দেন, সাত দিনের মধ্যে মানস যাতে প্রকল্পে কাজ করতে পারেন, তা নিশ্চিত করতে হবে।