ধৃত প্রফুল্ল কুণ্ডু। নিজস্ব চিত্র
কয়েক কোটি টাকার আর্থিক প্রতারণার অভিযোগে বুধবার বিকেলে দুর্গাপুরের সিটি সেন্টার থেকে প্রফুল্ল কুণ্ডু নামে এক বেসরকারি লগ্নি সংস্থার কর্ণধারকে গ্রেফতার করল উত্তরপ্রদেশ পুলিশ।
উত্তরপ্রদেশের সালেমপুর থানার পুলিশ জানায়, প্রফুল্ল-সহ কয়েকজন ২০০৯-এ উত্তরপ্রদেশের ওই এলাকায় একটি বেসরকারি অর্থলগ্নি সংস্থা খুললেও ২০১৪-য় ‘সেবি’ তা বন্ধ করে দেয়। কিন্তু ততদিনে কয়েক কোটি টাকা বাজার থেকে তোলে সংস্থাটি, দাবি পুলিশের। স্থানীয় লগ্নিকারীরা এজেন্টদের উপরে অর্থ ফেরতের দাবিতে চাপ সৃষ্টি করলে ২০১৭-এ তাঁরা থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন।
এর পরেই গোপন সূত্রে খবর পেয়ে সালেমপুর থানার সাদা পোশাকের পুলিশ ওই সংস্থার কয়েকজন এজেন্টকে সঙ্গে নিয়ে এ দিন সকালে সিটি সেন্টারের আলাউদ্দিন খান বীথিতে প্রফুল্লের বাড়িতে হানা দেয়। প্রফুল্লকে আটক করে গাড়িতে তোলা হলে পরিবারের লোকজন আপত্তি জানিয়ে সিটি সেন্টার ফাঁড়িতে ফোন করেন। প্রফুল্লকে নিয়ে সিটি সেন্টার ফাঁড়িতে যায় উত্তরপ্রদেশ পুলিশ। সিটি সেন্টার ফাঁড়ির পুলিশ প্রফুল্লকে ফের বাড়িতে পাঠায়। বাড়ির উপরে নজর রাখার দায়িত্ব দেওয়া হয় উত্তরপ্রদেশের এক পুলিশকর্মীকে। প্রয়োজনীয় আইনি প্রক্রিয়া ও কাগজপত্রের জটিলতা মেটার পরে, বিকেলে প্রফুল্লকে গ্রেফতার করে উত্তরপ্রদেশ পুলিশ। দুর্গাপুর আদালতের মাধ্যমে তাঁকে তিন দিনের ট্রানজ়িট রিমান্ডে সালেমপুর থানায় নিয়ে যাওয়া হয়েছে বলে জানায় উত্তরপ্রদেশ পুলিশ। এ দিন আরও এক অভিযুক্তের বাড়িতেও তল্লাশি চালানো হয়।
পুলিশের কাছে প্রফুল্লের দাবি, বাঁকুড়ায় একটি প্রকল্প গড়ে তোলার জন্য তিনি লগ্নিকারীদের কাছ থেকে অর্থ নিয়েছিলেন। কিন্তু সেবি-র নিষেধাজ্ঞার জেরে তা তিনি করতে পারেননি। পুলিশ জানায়, অভিযুক্ত তাঁদের কাছে দাবি করেছেন, মোট ন’কোটি টাকা তিনি তুলেছিলেন। পাঁচ কোটি টাকা তিনি সংস্থার উত্তরপ্রদেশের এক অংশীদারকে ফেরতও দেন। আরও চার কোটি টাকা দেবেন। কিন্তু আইনি জটিলতার জন্য সম্পত্তি বিক্রি করে টাকা ফেরত দিতে পারছেন না। যদিও তাঁর সংস্থার এজেন্টদের দাবি, বাজার থেকে এর চেয়ে বেশি অর্থ তোলা হয়েছিল।
উত্তরপ্রদেশ পুলিশের তদন্তকারী আধিকারিক জানান, এর আগেও কয়েকবার অভিযুক্তকে ধরতে এসেও খালি হাতে ফিরতে হয়েছিল। বারবার তদন্তকারী আধিকারিক বদলে যাওয়ায় তদন্তের গতি ব্যাহত হয়েছে বলেও জানিয়েছেন তিনি। পুলিশের দাবি, অভিযুক্ত এর আগে পশ্চিমবঙ্গে অন্য একটি বেসরকারি অর্থলগ্নি সংস্থা খুলে প্রতারণার অভিযোগে গ্রেফতারও হয়েছিলেন।