প্রতীকী ছবি।
একের বদলে অন্য জন চাকরি করছেন! তা-ও ‘ভুয়ো’ নথি জমা দিয়ে। ইসিএলের বাঁকোলা এরিয়ার ঘটনা। এমনই অভিযোগ করে এবং ‘ভুয়ো’ ব্যক্তিকে সরিয়ে প্রকৃত ব্যক্তিকে চাকরির দেওয়ার দাবিতে বুধবার বাঁকোলা এরিয়া কার্যালয়ে ঘণ্টাখানেক ঘেরাও করে বিক্ষোভ দেখাল ‘ভুঁইয়া সমাজ উত্থান সমিতি’। পরে, কর্তৃপক্ষের আশ্বাসে বিক্ষোভ থামে। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, অভিযুক্তকে ইতিমধ্যেই গ্রেফতার করা হয়েছে।
বাঁকোলা এরিয়া কর্তৃপক্ষের এক আধিকারিক জানান, বিষয়টি নিয়ে তদন্ত চলছে। পুলিশ জানায়, অভিযোগের ভিত্তিতে সুখদেবকে এপ্রিলের মাঝামাঝি গ্রেফতার করা হয়েছে। ধৃত এই মুহূর্তে জেল হেফাজতে রয়েছেন।
বাঁকোলার বাসিন্দা শিবা ভুঁইয়া জানান, তাঁর ঠাকুরদা কৃষ্ণ ভুঁইয়া বাঁকোলা কোলিয়ারিতে কাজ করতেন। ১৯৯৪-এ অসুস্থার কারণে তাঁর মৃত্যু হয়। পরে, ১৯৯৬-এ শিবার বাবা কেদার ভুঁইয়াকে নিকটাত্মীয় হিসেবে সংস্থা নিয়োগপত্রও পাঠায় বলে দাবি। কেদার তাঁর মা কৌশল্যাকে সঙ্গে নিয়ে নিয়োগপত্র জমা দিতে এরিয়া কার্যালয়ে যাচ্ছিলেন। অভিযোগ, সে সময়ে স্থানীয় বাসিন্দা সুখদেব পাসোয়ান কেদারের কাছ থেকে নিয়োগপত্র কেড়ে নেন এবং কৌশল্যাকে মারধর করেন। শিবার অভিযোগ, “এর পরে, বাবার নিয়োগপত্রে নিজের ছবি সাঁটিয়ে সুখদেব কাজে যোগ দেন! এত দিন কাজও করেছেন।”
শিবাদের পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, ২০০৬-এ কেদারের মৃত্যু হয়েছে। এখন শিবার বয়স ২২ বছর। শিবার দাবি, “ঠাকুরদার পোষ্য হিসেবে চাকরি চেয়েছি। ইসিএলকে বার বার সুখদেবের বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপ করার আর্জি জানিয়েও লাভ হয়নি।” এর পরেই, সুখদেবের বিরুদ্ধে ২০২১-এর ডিসেম্বরে অণ্ডাল থানায় অভিযোগ এবং দুর্গাপুর আদালতে প্রতারণা ও ভয় দেখানোর অভিযোগ করেন শিবারা।
কিন্তু এত দিন বিষয়টি নিয়ে অভিযোগ জানানো হয়নি কেন? কেদারের স্ত্রী মিনার দাবি, “বিষয়টি নিয়ে মুখ খুললে আমাকে, আমার শাশুড়ি ও ছেলেকে খুনের হুমকি দিয়েছিলেন সুখদেব।” কেদারের মা কৌশল্যার সংযোজন: “সুখদেব প্রভাবশালীদের ঘনিষ্ঠ বলে, এত বছর আমরা ভয়ে কিছু করতে পারিনি! কেদার বেশ কয়েক বছর সুখদেবের ভয়ে অন্যত্র থাকত।” প্রভাবশালী বলতে তিনি কাদের কথা বলছেন, তা অবশ্য ভাঙেননি কৌশল্যা। শিবাদের পাশে দাঁড়ায় ‘ভুঁইয়া সমাজ উত্থান সমিতি’ও।
সংগঠনটির পাণ্ডবেশ্বর ব্লক সভাপতি কৃষ্ণ ভুঁইয়া বলেন, “পরিবারটিকে প্রাপ্য সুবিধা দিতে হবে। পরিবারের সদস্যরা কোনও ক্ষতিপূরণও পাননি।” যদিও, সুখদেবের পরিবারের নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক সদস্য দাবি করেছেন, ‘ভিত্তিহীন’ অভিযোগ করা হচ্ছে।