উত্তম মুখোপাধ্যায়ের পাশেই শেখ সইফুল (চিহ্নিত)। নিজস্ব চিত্র
দলীয় কর্মী সন্দীপ ঘোষ খুনে অন্যতম প্রধান অভিযুক্ত শেখ সইফুলকে গ্রেফতারের দাবিতে বুধবার মহকুমাশাসকের (দুর্গাপুর) কার্যালয়ের সামনে অবস্থান-বিক্ষোভ করল বিজেপি। বিজেপি-র অভিযোগ, সইফুল শাসক দলের পঞ্চায়েত সদস্য হওয়াতেই পুলিশ তাঁকে ধরতে গড়িমসি করছে। যদিও অভিযোগ অস্বীকার করেছে পুলিশ ও তৃণমূল।
রবিবার রাত সাড়ে ১০ টা নাগাদ কাঁকসার সরস্বতীগঞ্জ ও রূপগঞ্জের মাঝে জঙ্গলের রাস্তায় গুলিতে খুন হন সন্দীপ। বিজেপি অভিযোগ করে, তৃণমূল আশ্রিত বালি মাফিয়া বলে এলাকায় পরিচিত, জাটগড়িয়ার বাসিন্দা সইফুলের নেতৃত্বে হামলা চলে। যদিও এমন অভিযোগ ওঠার পরে থেকেই সইফুল নামে দলে কেউ নেই বলে দাবি করেছিল তৃণমূল। তবে খুনের ঘটনায় তিন জনকে গ্রেফতার করা হয়। কিন্তু বুধবার সন্ধ্যা পর্যন্ত অধরা সইফুল। বিজেপি-র জেলা সভাপতি লক্ষ্মণ ঘোড়ুই অভিযোগ করেছিলেন, সইফুল তৃণমূল-ঘনিষ্ঠ হওয়ায় পুলিশ তাঁকে পালানোর সময় দিচ্ছে।
স্থানীয় সূত্রে খোঁজ নিয়ে জানা গিয়েছে, একসময়ে বেআইনি কয়লার কারবারে যুক্ত সইফুল কিছু দিন ধরে বালির বেআইনি কারবারে যুক্ত বলে অভিযোগ। কারবার চালাতে যাতে অসুবিধা না হয় তার জন্য সইফুলের সঙ্গে তৃণমূলের স্থানীয় নেতাদের সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা বাড়ে বলে বিজেপি-র অভিযোগ। আরও অভিযোগ, গত পঞ্চায়েত ভোটে তৃণমূলের তরফে বিদবিহার ও মলানদিঘি পঞ্চায়েতে ‘বিশেষ দায়িত্ব’ দেওয়া হয় সইফুলকে। এমনকি, তাঁকে বিদবিহার পঞ্চায়েতের জাটগড়িয়া সংসদে প্রার্থীও করে তৃণমূল। এলাকাবাসী ও বিজেপি নেতাদের অভিযোগ, বিনাপ্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয়ী তৃণমূলের পঞ্চায়েত সদস্য শেখ সইফুলের এখন ‘নজর’ পড়েছে কাঁকসা পঞ্চায়েত সমিতির বিভিন্ন ‘টেন্ডারে’র উপরে।
ঘটনার পরে সইফুল নামে দলের কেউ নেই বলে দাবি করেছিলেন দলের তরফে কাঁকসায় দায়িত্বপ্রাপ্ত তৃণমূলের জেলা কার্যকরী সভাপতি উত্তম মুখোপাধ্যায়। অথচ কয়েক মাস আগে বিদবিহার গ্রাম পঞ্চায়েতের বোর্ড গঠনের অনুষ্ঠান মঞ্চে উত্তমবাবুর ঠিক বাঁ দিকে সইফুলকে দেখা গিয়েছিল বলে দাবি। বুধবার বিজেপি-র রাজ্য সহ-সভাপতি বিশ্বম্ভর রায়চৌধুরী বলেন, ‘‘তৃণমূলের পঞ্চায়েত সদস্য বলেই সইফুলকে গ্রেফতার করছে না পুলিশ।’’
উত্তমবাবু অবশ্য বলেন, ‘‘ভিত্তিহীন অভিযোগ। ঘটনার তদন্ত করছে পুলিশ।’’ আসানসোল-দুর্গাপুরের পুলিশ কমিশনার লক্ষ্মীনারায়ণ মিনা বলেন, ‘‘ধৃতদের জেরা করা হচ্ছে। বাকি অভিযুক্তদের খোঁজে তল্লাশি চলছে।’’ এ দিন মোবাইল বন্ধ থাকায় বার বার চেষ্টা করেও শেখ সইফুলের সঙ্গে যোগাযোগ করা যায়নি।