পরীক্ষাকেন্দ্রে ঢোকার মুখে পরীক্ষার্থীরা। কুলটিতে। নিজস্ব চিত্র
দু-একটি ঘটনা ছাড়া মাধ্যমিক পরীক্ষার প্রথম দিন, বৃহস্পতিবার নির্বিঘ্নে কেটেছে। স্কুল পরিদর্শকের দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, ১০২টি কেন্দ্রে পরীক্ষা দিয়েছে ২২ হাজার ১৩০ জন। বিদ্যালয় পরিদর্শক (মাধ্যমিক) সুনীতি সাঁপুই জানিয়েছেন, অনুপস্থিত ছিল ৫১৪ জন।
পুলিশ জানায়, এ দিন পাণ্ডবেশ্বরের রাখালচন্দ্র বালিকা বিদ্যালয়ের এক পরীক্ষার্থী দিদি-জামাইবাবুর সঙ্গে মোটরবাইকে পাণ্ডবেশ্বরের পানশিউলি উচ্চ বিদ্যালয়ের কেন্দ্রে পরীক্ষা দিতে যাচ্ছিল। মহাল মোড়ের কাছে উল্টো দিক থেকে আসা বাইকের সঙ্গে ধাক্কা লাগে। দু’টি বাইকের চার আরোহীকে উদ্ধার করে পাণ্ডবেশ্বর প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নিয়ে যাওয়া হয়। তিন জনকে ছেড়ে দেওয়া হয়। পরীক্ষার্থীর চোট লাগেনি। কিন্তু সে অজ্ঞান হয়ে গিয়েছিল। জ্ঞান ফেরার পরে তাকে দুর্গাপুর মহকুমা হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। খবর পেয়ে দুর্গাপুর মহকুমার মাধ্যমিক পরীক্ষার আহ্বায়ক কলিমুল হক পুলিশের উপস্থিতিতে প্রশ্নপত্র পাঠিয়ে, হাসপাতালেই তার পরীক্ষার ব্যবস্থা করেন। কিন্তু সুস্থ না হওয়ায় পরীক্ষায় বসতে পারেনিওই ছাত্রী।
এ দিকে, পরীক্ষা দিতে এসে তিন জন সিসি পরীক্ষার্থী ভুলবশত গত বছরের অ্যাডমিট কার্ড নিয়ে বারাবনির জামগ্রাম হাইস্কুলে চলে এসেছিল। বিষয়টি জেনে বারাবনি থানার পুলিশ অফিসার তাদের এ বছরের অ্যাডমিট কার্ড বাড়ি থেকে আনার ব্যবস্থা করেন। নির্বিঘ্নেই তারা পরীক্ষা দেয়। ওই সার্কেলের সেন্টার সেক্রেটারি অর্ণব রায় জানিয়েছেন, পানুড়িয়া উচ্চ বিদ্যালয়ের তিন ছাত্রী ভুল অ্যাডমিট কার্ড এনেছিল। পরীক্ষা শুরুর আগেই পুলিশের উদ্যোগে তাদের এ বছরের অ্যাডমিট কার্ড পৌঁছে দেওয়া হয়েছে। পরীক্ষায় বসতে সমস্যা হয়নি। দুর্গাপুরে এক পরীক্ষার্থী ভুল করে অন্য কেন্দ্রে চলে যাওয়ায়, ট্রাফিক গার্ডের সিভিক ভলান্টিয়ার সজল লায়ক তাকে নিজের বাইকে করে পরীক্ষাকেন্দ্রে পৌঁছে দেন।
এ দিন পরীক্ষার্থীদের ফুল ও পেন দিয়ে শুভেচ্ছা জানায় পুলিশ ও তৃণমূলের নেতারা। আসানসোলের মেয়র বিধান উপাধ্যায়ও শুভেচ্ছা জানান। পরীক্ষাকেন্দ্রের আশপাশে খোলা থাকা ফটোকপির দোকান বন্ধ করে দেয় পুলিশ। কী কী নিয়ে কেন্দ্রে ঢোকা যাবে, তা শিক্ষকদের তরফে পরীক্ষার্থীদের জানানো হয়।
পরীক্ষা শেষে কাঁকসার শেখ সলমান, প্রভাত গোপ, সীমা ঘোষেরা বলে, “পরীক্ষা শুরুর আগে পর্যন্ত একটু টেনশন ছিল। তবে প্রশ্নপত্র হাতে পেয়ে ভয় কেটে যায়। পরীক্ষা ভাল হয়েছে।” জেলা ডিস্ট্রিক্ট মনিটরিং টিমের সদস্য রাজীব মুখোপাধ্যায় জানান, প্রথম দিন সুষ্ঠু ভাবেই পরীক্ষা হয়েছে। স্কুল পরিদর্শক সুনীতি বলেন, “দুর্ঘটনার কারণে এক জন পরীক্ষা দিতে পারেনি। তবে জেলা শিক্ষা দফতর হাসপাতালে পরীক্ষা দেওয়ার সব রকম ব্যবস্থা করেছিল।”