আসানসোলে বামেদের মিছিল। বুধবার। নিজস্ব চিত্র
আসানসোল লোকসভা কেন্দ্রের সিপিএম প্রার্থী গৌরাঙ্গ চট্টোপাধ্যায়ের উপরে হামলার অভিযোগে পাঁচ জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। তবে ধৃতদের পরিচয় নিয়ে তর্জা শুরু হয়েছে সিপিএম-তৃণমূলে। সিপিএমের অভিযোগ, ধৃতেরা প্রত্যেকেই তৃণমূলের মদতে কয়লার বেআইনি কারবারের সঙ্গে জড়িত। অভিযোগ অস্বীকার করেছে তৃণমূল।
মঙ্গলবার বারাবনিতে প্রচার শেষে গাড়িতে ওঠার মুখে গৌরাঙ্গবাবুকে মারধর করা হয় বলে অভিযোগ। ঘটনার পরে সিপিএম অভিযোগ করে, ওই হামলায় তৃণমূল আশ্রিত দুষ্কৃতীরা জড়িত। অভিযোগ অস্বীকার করেছিলেন তৃণমূলের জেলা সভাপতি ভি শিবদাসন। ঘটনার পরে দোষীদের গ্রেফতারের দাবি ও বারাবনি থানার অফিসার ইনচার্জের অপসারণ চেয়ে সরব হয় সিপিএম। হয় পথ অবরোধও।
ওই দিন রাত থেকেই হামলার প্রতিবাদে জেলার নানা প্রান্তে মিছিল করে সিপিএম। পূর্ব ঘোষণা মতো বুধবার বাম নেতা, কর্মীরা রবীন্দ্রভবন থেকে মিছিল করে আসানসোল-দুর্গাপুরের পুলিশ কমিশনার লক্ষ্মীনারায়ণ মিনার দফতরে পৌঁছন। সেখানে একই দাবিতে স্মারকলিপি দেন তাঁরা। মিছিলে ছিলেন সিপিএমের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য মদন ঘোষ, রাজ্য কমিটির সদস্য বংশগোপাল চৌধুরী, দলের নেতা পার্থ মুখোপাধ্যায় প্রমুখ। কমিশনার এ দিন বলেন, ‘‘হামলার অভিযোগে মঙ্গলবার রাতেই পাঁচ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। ঘটনার বিস্তারিত তদন্ত চলছে।’’ অপসারণের দাবি প্রসঙ্গে কমিশনারের প্রতিক্রিয়া: ‘‘এই দাবি উঠেছে। পুরো বিষয়টি নির্বাচন কমিশনের অধীনে। কমিশনের নির্দেশমতো পরবর্তী পদক্ষেপ করা হবে।’’ ধৃতদের এ দিন আসানসোল আদালতে তোলা হয়। বিচারক তাঁদের জামিনের আবেদন মঞ্জুর করেন।
দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯
ধৃতদের পরিচয় সম্পর্কে তর্জা শুরু হয়েছে সিপিএম, তৃণমূলে। সিপিএম নেতা বংশগোপালবাবুর অভিযোগ, ‘‘ধৃতেরা প্রত্যেকেই মদনপুর এলাকার বাসিন্দা। তাঁরা শাসক দলের মদতে কয়লা চুরির সঙ্গে যুক্ত। তৃণমূলের নির্দেশেই এই হামলা চলেছে।’’ যদিও অভিযোগ অস্বীকার করে তৃণমূল নেতা ভি শিবদাসন বলেন, ‘‘প্রশাসন কতখানি সক্রিয় ও নিরপেক্ষ, সেটা দ্রুত গ্রেফতারির ফলেই বোঝা গিয়েছে। সিপিএম আমাদের নামে অপপ্রচার করছে।’’ তবে সিপিএমের অভিযোগের তীর শুধু তৃণমূলের দিকেই নয়। সিপিএম নেতা মদনবাবুর অভিযোগ, ‘‘হামলার পরিকল্পনা তৃণমূল ও বিজেপি যৌথ ভাবে করেছিল।’’
ঘটনাচক্রে, মঙ্গলবার রাতেই আসানসোল জেলা হাসপাতালে গিয়ে গৌরাঙ্গবাবুর স্বাস্থ্য ও চিকিৎসার খোঁজখবর করেছিলেন আসানসোলের বিদায়ী সাংসদ তথা এ বারেও বিজেপি প্রার্থী বাবুল সুপ্রিয়। বুধবার অবশ্য বাবুল বলেন, ‘‘অযথা আমাদের দলের নাম জড়ানো হচ্ছে। গৌরাঙ্গবাবুর উপরে হামলার ঘটনায় বিজেপির কোনও যোগ নেই। আমরা চাই, উনি দ্রুত সুস্থ হন।’’
হাসপাতালের সুপার নিখিলচন্দ্র দাস জানান, গৌরাঙ্গবাবুর শারীরিক অবস্থা স্থিতিশীল।’’