চেয়ার-টেবিল সাফাই। নিজস্ব চিত্র
বিধানসভা ভোটের পর থেকে তালা পড়ে গিয়েছিল দলের জোনাল কমিটি দফতরে। রাজনৈতিক কর্মসূচিও বিশেষ কিছু চোখে পড়ত না। লোকসভা ভোটে দলের প্রার্থী শুক্রবার ঘুরে যান এলাকায়। তার পরেই তিন বছরের মাথায়, শনিবার দুপুরে বর্ধমান উত্তর বিধানসভা কেন্দ্র এলাকায় দেওয়ানদিঘির পার্টি অফিসটি খুলে বসলেন সিপিএম নেতা-কর্মীরা।
সিপিএম নেতাদের দাবি, ‘ঘুরে দাঁড়ানোর’ জন্য লোকসভা ভোটে মরিয়া হয়ে উঠেছেন দলের কর্মী-সমর্থকেরা। তারই অঙ্গ হিসাবে দীর্ঘদিন বন্ধ থাকা দেওয়ানদিঘির অফিসটি খুলল। তবে কেতুগ্রাম, আউশগ্রাম, রায়না ও খণ্ডঘোষে দলের অনেক অফিসেই তৃণমূলের জমানায় লাল পতাকা ওড়েনি। সেগুলি খোলার ব্যাপারে এখনও তেমন তৎপরতা দেখা যায়নি দলের তরফে। জেলা সিপিএম সূত্রে জানা গিয়েছে, বন্ধ থাকা দফতরগুলির অধিকাংশই শাখা-অফিস বা গণসংগঠনের অফিস। নির্বাচন কমিশনের সাহায্যে সেগুলি খোলা গেলেও স্থানীয় নেতা-কর্মীরা ঠিকমতো কর্মসূচি পালন করতে পারবেন কি না, সে নিয়ে সংশয় রয়েছে দলের অন্দরেই। দলের জেলা সম্পাদক অচিন্ত্য মল্লিক বলেন, ‘‘ওই অফিসগুলি খোলার ব্যাপারে নির্বাচন কমিশনকে চিঠি দেওয়ার কথা এখনই ভাবনায় নেই।’’
এ দিন সকালে সিপিএমের কয়েকজন নেতা-কর্মী দেওয়ানদিঘির তিন তলা কার্যালয়ের তালা খুলে ভিতরে ঢুকে চেয়ার-টেবিল ঝাড়পোঁছ শুরু করেন। সিপিএম কর্মীদের দাবি, ২০১১ সালে বিধানসভা ভোটের পরে বা ২০১২ সালে দফতরের সামনে প্রাক্তন বিধায়ক প্রদীপ তা ও প্রবীণ নেতা কমল গায়েন খুন হওয়ার পরেও এই অফিস বন্ধ হয়নি। এলাকার সিপিএম নেতা মেহেবুব আলমের অভিযোগ, “২০১৬ সালে বিধানসভা ভোটের পরে তৃণমূলের কয়েকজন দফতর বন্ধ করে চলে যেতে বলে। তা না হলে বড় বিপদ হবে বলে হুমকি দেয়। সেই যে দফতর বন্ধ হয়, তার পরে দু’এক বার চেষ্টা করা হলেও খোলা যায়নি। এ বার জেলাশাসককে জানিয়ে দফতর খোলা হল।’’ এ বার অফিস নিয়মিত খুলে রাখার ব্যাপারে স্থানীয় সিপিএম নেতৃত্ব আশাবাদী।
কেতুগ্রাম-রায়না এলাকার সিপিএম কর্মীদের অভিজ্ঞতা অবশ্য অন্য রকম। তাঁরা জানান, ২০১১ সালের পরে এলাকায় বেশ কয়েকটি দফতর বন্ধ হয়ে পড়ে। ২০১৪ সালে লোকসভা ভোট ও ২০১৬ সালে বিধানসভা ভোটের আগে ঘটা করে দফতর খোলা হয়। কিন্তু কয়েকদিন পর থেকেই কর্মী-সমর্থকের ভিড় কমতে থাকে। শেষে বন্ধই হয়ে যায় অফিস।
সিপিএমের জেলা সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য উদয় সরকারের অবশ্য দাবি, “সন্ত্রাসের সামনে দাঁড়িয়েও অনেকগুলি পার্টি অফিস খোলা গিয়েছে।’’ আউশগ্রামের রামনগরে পাঁচ দিন আগে একটি পার্টি অফিসে লাল পতাকা তোলা গিয়েছে বলে দাবি করেন দলের জেলা কমিটির সদস্য মহম্মদ আলমগীর মণ্ডল।
জেলা তৃণমূলের অন্যতম সাধারণ সম্পাদক উত্তম সেনগুপ্তের প্রতিক্রিয়া, “সিপিএমের কর্মীই নেই, তাই পার্টি অফিস খোলার লোক পাচ্ছে না। কোথাও সন্ত্রাসের সামান্য গন্ধও নেই।’’