সিপিএমের দাবি, দেওয়াল লিখন, দলীয় কার্যালয় পরিচালনার সঙ্গে যুক্ত কর্মীদের চিহ্নিত করে নোটিস পাঠানো হচ্ছে। —ফাইল চিত্র।
ভোটের আগে গোলমাল পাকাতে পারেন, এমন অভিযোগে দুর্গাপুরে কয়েকশো ব্যক্তিকে ফৌজদারি মামলার নোটিস পাঠিয়েছে পুলিশ। তবে বেছে বেছে তাঁদের দলীয় কর্মীদেরই নোটিস পাঠানো হয়েছে বলে অভিযোগ সিপিএমের। এমনকি, শাসক দলের অভিযুক্তদের ছাড়ও দেওয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ। এমনই অভিযোগ জানিয়ে নির্বাচন কমিশনের কাছে চিঠি দিয়েছে সিপিএম। পুলিশ অবশ্য অভিযোগ মানেনি।
পুলিশ সূত্রে জানা যায়, শান্তি-শৃঙ্খলা বজায় রাখতে কারও বিরুদ্ধে অতীতে কোনও গোলমালে জড়িত থাকার অভিযোগ থাকলে কিংবা কারও বিরুদ্ধে অশান্তি পাকানোর সন্দেহ থাকলে ভারতীয় ফৌজদারি দণ্ডবিধির ১০৭ ধারায় সেই ব্যক্তিকে নোটিস পাঠানো যেতে পারে। ভবিষ্যতে তাঁরা কোনও গোলমাল করবেন না, এই মর্মে মুচলেকা (বন্ড) নিয়ে তাঁদের ছেড়ে দেওয়া হয়। সাধারণত যে কোনও নির্বাচনের আগে এ বিষয়ে তৎপর হয় পুলিশ। এ বারেও লোকসভা নির্বাচন উপলক্ষে সেই প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে।
সিপিএমের দাবি, এ পর্যন্ত দুর্গাপুর শহরের তিনটি থানা এলাকার প্রায় সাড়ে তিনশো কর্মীকে নোটিস পাঠানো হয়েছে। যদিও তাঁরা কেউ মুচলেকা দিতে রাজি হননি। তাঁরা আদালতে চ্যালেঞ্জ করে মামলা দায়ের করছেন। সিপিএমের জেলা সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য পঙ্কজ রায়সরকার বলেন, ‘‘অনৈতিক ভাবে বেছে বেছে মিথ্যা অভিযোগ তুলে আমাদের কর্মীদেরই নোটিস পাঠানো হয়েছে। মহকুমাশাসকের কার্যালয়ে আয়োজিত সর্বদলীয় বৈঠকে পুলিশের ভূমিকায় নজরদারির দাবি জানিয়েছিলাম। তার পরেও পরিস্থিতি বদলায়নি।’’
দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯
সিপিএমের অভিযোগ, দুর্গাপুরের গত পুরসভা নির্বাচনে সন্ত্রাসের পরিবেশ তৈরি হয়েছিল। শাসকদল আশ্রিত দুষ্কৃতীদের বাধায় শহরবাসী ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পারেননি। যদিও তৃণমূল নেতৃত্ব সেই অভিযোগ মানতে চাননি। কমিশনের কাছে পাঠানো চিঠিতে সিপিএমের দাবি, দেওয়াল লিখন, দলীয় কার্যালয় পরিচালনার সঙ্গে যুক্ত কর্মীদের চিহ্নিত করে তাঁদের নোটিস পাঠানো হচ্ছে। এমনকি, কোকআভেন থানা এলাকায় তাঁদের কর্মীদের কাছ থেকে ভোটার কার্ডের ফটোকপিও নিচ্ছে পুলিশ। দলের নেতাদের বক্তব্য, শাসক দলকে সুবিধা করে দিতে আতঙ্কের পরিবেশ তৈরি করতে পুলিশ এ সব করছে। আরও অভিযোগ, বিভিন্ন অপরাধমূলক কাজকর্মে জড়িতদের বিরুদ্ধে পুলিশ কোনও ব্যবস্থা নিচ্ছে না।
মহকুমাশাসকের কার্যালয় সূত্রে জানানো হয়েছে, সিপিএমের অভিযোগ সংশ্লিষ্ট দফতরে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে। অভিযোগ উড়িয়ে দিয়ে আসানসোল-দুর্গাপুর পুলিশ কমিশনারেটের এক আধিকারিক বলেন, ‘‘নির্বাচনের সময় এলাকায় আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি ঠিক রাখতে নির্দিষ্ট অভিযোগের ভিত্তিতে এই পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে।’’ তৃণমূলের জেলা কার্যকরী সভাপতি উত্তম মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘সিপিএম অযথা কাঁদুনি গাইছে। নির্বাচনের আগে পুলিশ প্রতি বার এমন আগাম পদক্ষেপ করে থাকে। ওঁদের উচিত পুলিশের কাজে সহযোগিতা করা।’’