শতায়ু ভোটারদের সঙ্গে। নিজস্ব চিত্র
১৯৫১-৫২ সালের লোকসভা নির্বাচনে ভোট দিয়েছিলেন ওঁরা। তাঁরা ভোট দেবেন ২০১৯-এও!— জেলায় নথিভুক্ত ১৯ জন এমনই শতায়ু ভোটারকে সামনে এনে ভোটদানে উৎসাহ বাড়াতে চাওয়ার কথা জানাল নির্বাচন কমিশন। মঙ্গলবার দুর্গাপুর মহকুমার নানা এলাকার বাসিন্দা এমনই তিন জনকে সংবর্ধনাও জানিয়েছে প্রশাসন।
দুর্গাপুর শহরের ২১ নম্বর ওয়ার্ডের নেতাজি কলোনির বাসিন্দা শেফালি সমাদ্দার। ভোটার কার্ড অনুযায়ী তাঁর বয়স এখন ১০৪ বছর। বয়সের ভারে চলাফেরায় সমস্যা রয়েছে তাঁর। অন্য বার রিকশায় চড়ে ভোট দিতে গেলেও এ বার তাঁদের জন্য গাড়ির ব্যবস্থা করেছে প্রশাসন। শেফালিদেবী জানান, ‘‘দেশ স্বাধীনের পরে প্রথম লোকসভা ভোটেও ভোট দিয়েছি। এ বারেও আমি ভোট দেব। আমি চাই, সবাই আমার মতো ভোট দিন।’’ এ দিন শেফালিদেবীর বাড়ি গিয়ে তাঁকে সংবর্ধনা জানান দুর্গাপুরের মহকুমা রিটার্নিং অফিসার তথা মহকুমাশাসক (দুর্গাপুর) অনির্বাণ কোলে, দুর্গাপুরের ডেপুটি লেবার কমিশনার অরুণিমা বিশ্বাস, ডেপুটি ম্যাজিস্ট্রেট অভিজিৎ সামন্ত প্রমুখ। অনির্বাণবাবু বলেন, ‘‘শেফালিদেবীকে যাতে লাইনে দাঁড়িয়ে ভোট দিতে না হয়, সেই ব্যবস্থা করা হবে।’’
কাঁকসা ব্লকের সরস্বতীগঞ্জের বাসিন্দা হারাধন সাহা। তাঁর দাবি, তিনি ১৯১০ সালে জন্মেছেন। যদিও ভোটার কার্ড অনুযায়ী তিনি একশো পেরিয়েছেন। এখনও টানটান চেহারা। প্রত্যেক নির্বাচনে হেঁটেই যান স্থানীয় প্রাথমিক স্কুলের বুথে। গ্রামের প্রথম ভোটটি দেন তিনিই। এখনও বাড়ির গরু-বাছুর দেখাশোনা করেন, চাষের কাজ তদারকি করেন। ফি দিন ভোরে এক গ্লাস তুলসি পাতার রস খান। আতস কাচ দিয়ে খবরের কাগজ পড়েন। কানে সামান্য কম শোনা ছাড়া তেমন কোনও শারীরিক সমস্যা নেই। তিনি বলেন, ‘‘এ পর্যন্ত একটি নির্বাচনও বাদ যায়নি। অথচ অনেকেই শুনি, ভোট দিতে যান না। এটা ঠিক নয়। গণতন্ত্রে সবার ভোটদান করা জরুরি।’’ কাঁকসা ব্লকেরই গোপালপুরের হাটতলার নফর রায়ের বয়স এখন ১০৫ বছর। কোমরের সমস্যার জন্য দাঁড়াতে পারেন না। তবে ভোট দেন প্রতি নির্বাচনেই। এ বারেও তার ব্যতিক্রম হবে না বলে জানান তিনি। নফরবাবু বলেন, ‘‘গণতান্ত্রিক অধিকার আমাদের সবার প্রয়োগ করা উচিত।’’
দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯
এ দিন শতায়ু ভোটারদের ইভিএম ও ভিভিপ্যাট যন্ত্রের ব্যবহার দেখানো হয়। ছিলেন বিডিও (কাঁকসা) সুদীপ্ত ভট্টাচার্য।