জামুড়িয়ায় এই গুদামগুলিই বিলি করা হয়নি। —নিজস্ব চিত্র
উদ্দেশ্য ছিল জামুড়িয়া বাজারকে যানজটমুক্ত করা। সে জন্য বছর ১৭ আগে জামুড়িয়া বাইপাসের পাশে ব্যবসায়ীদের জন্য গুদামঘর তৈরি করা হয়েছিল। কিন্তু সেগুলি বন্ধ হয়ে পড়ে আছে। অবিলম্বে গুদামঘরগুলি চালু করে শহরের ‘শ্রী’ ফেরানোর দাবি তুলেছেন স্থানীয় বাসিন্দারা।
জামুড়িয়া বাজারে ছোট-বড় মিলিয়ে পাঁচশোর বেশি দোকান আছে। বাজারের রাস্তার দু’পাশে হকারও বসছে। এ ছাড়া, পার্কিং-জ়োন না থাকায় যত্রতত্র যানবাহন দাঁড় করিয়ে রাখতে বাধ্য হন ক্রেতা থেকে বিক্রেতারা। এ সবের জেরে যনজটের শিকার শহরবাসী। পূর্বতন জামুড়িয়া পুরসভার প্রাক্তন চেয়ারম্যান, সিপিএমের তাপস কবি জানান, ২০০৬-এ জামুড়িয়া পুরসভার উদ্যোগে বাইপাসের ধারে গুদামঘর তৈরি করা হয়েছিল। পরিকল্পনা ছিল, বাজারের বড় ব্যবসায়ীরা তাঁদের আমদানি করা সমস্ত মালপত্র সেখানে গুদামজাত করবেন। পরে, প্রয়োজন মতো ছোট যানবাহনে মালপত্র চাপিয়ে বাজারে নিয়ে যাবেন। এতে দিনের বেলায় বাজারে বড় গাড়ি ঢুকবে না। এতে যানজট হবে না। তাপসের দাবি, তাঁরা দু’বার বিজ্ঞপ্তি জারি করে ব্যবসায়ীদের স্বল্প ভাড়ায় গুদামঘরগুলি ব্যবহার করতে বলেছিলেন। তাতে সাড়া পাননি। এর পরে তাঁরা পরিকল্পনা নেন, ব্যবসায়ীদের সঙ্গে আলোচনা করে বিষয়টির নিষ্পত্তি করার। তাঁর অভিযোগ, “২০১১-য় রাজ্যে ক্ষমতা বদলের পরে এই বিষয়টি নিয়ে আর উদ্যোগী হয়নি নতুন প্রশাসন। বর্তমানে সেগুলি জীর্ণ হয়ে যাচ্ছে।”
স্থানীয় বাসিন্দা বিশ্বনাথ যাদব, পরিতোষ বাউড়ি, বিষ্ণু পাঠকেরা বলেন, “জামুড়িয়া পুরসভা আসানসোল পুরসভার সঙ্গে যুক্ত হওয়ার পরে ভেবেছিলাম যানজট সমস্যা মিটবে। আদতে তা হয়নি।” বণিক সংগঠন জামুড়িয়া চেম্বার অব কর্মাসের সভাপতি জয়প্রকাশ দোকানিয়ার দাবি, “গুদাম তৈরি হওয়ার পরে ব্যবসায়ীদের বড় অংশ সেগুলি ভাড়া নেওয়ার জন্য লিখিত আবেদন জানিয়েছিলেন। তাতে গুরুত্ব দেওয়া হয়নি। হকারদের দৌরাত্ম্যে বেদখল হয়ে যাওয়া ফুটপাত, দখলমুক্ত করতে একাধিক বার প্রশাসনের কাছে জানানো হয়েছে। তা-ও হয়নি।” তিনি বলেন, “এ ছাড়া প্রশাসনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছিল, বাজারের গুরুত্বপূর্ণ এলাকা সিনেমা মোড়ে এক সঙ্গে একটির বেশি বাস দাঁড়াবে না। যেটি দাঁড়াবে সেটি যাত্রী ওঠা-নামা করিয়ে চলে যাবে। কিন্তু তা-ও হচ্ছে না। পুরসভা চাইলে বণিক সংগঠন সব রকম ভাবে পাশে দাঁড়াবে।”
পুরসভার ১ নম্বর বরো চেয়ারম্যান শেখ সানদার বলেন, “গুদামগুলি জীর্ণ হয়ে পড়ায় কয়েকবছর আগে সংস্কার করা হয়েছে। ফের সংস্কারের পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। তা হলেই বিলির ব্যবস্থা করা হবে।”