তালিতে নতুন সেতুর কাজ চলছে। নিজস্ব চিত্র।
চার মাস আগের ঘটনা। রেলগেটে যান্ত্রিক গোলযোগে অসুস্থ শিশুকে নিয়ে আটকে পড়ে একটি অ্যাম্বুল্যান্স। এক ঘণ্টারও বেশি রেলগেট বন্ধ থাকায় দু’দিকে তিন থেকে চার কিলোমিটার জুড়ে যানজট বেধে যায়। হাতে স্যালাইনের নল, নাকে অক্সিজেন মাস্ক লাগানো অবস্থায় বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে যাওয়া ঝাড়খণ্ডের শিশুটিও আটকে থাকে ততক্ষণ। দেড় ঘণ্টা পরে দুপুর দেড়টা নাগাদ হাসপাতালের দিকে রওনা দেয় অ্যাম্বুল্যান্সটি।
সোমবার, সপ্তাহের শুরুর দিনে আবারও তালিত রেলগেটে ভোগান্তির শিকার হলেন বহু মানুষ। সকালে ডিম বোঝাই পিক আপ ভ্যান উল্টে যায় লাইনে। রেল এবং সড়ক চলাচল ব্যহত হয়। বহু দূরপাল্লার ট্রেন, প্যাসেঞ্জার ট্রেন আটকে পড়ে। বর্ধমান-বোলপুর রাস্তার দু’দিকেও গাড়ির লম্বা লাইন পড়ে যায়। নিত্যযাত্রীদের দাবি, সারা বছরই ভোগায় এই রেলগেট।
দীর্ঘ জমিজট কাটিয়ে প্রায় দু’বছর পরে এই এলাকায় রেল উড়ালপুল তৈরির কাজ শুরু হয়েছে। তবে আগামী দু’বছর উড়ালপুল তৈরিতেই চলে যাবে। তার পরে যদি পরিস্থিতির উন্নতি দেখা যায়, আশায় এলাকাবাসী। সম্প্রতি সাংসদ কীর্তি আজাদ একাধিক বার রেল কর্তৃপক্ষ ও জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষের সঙ্গে বৈঠক করেন। তার পরেই শুরু হয় কাজ। এলাকাবাসীর দাবি, বর্ধমান-আসানসোল লাইনে রাজধানী, শতাব্দী, বন্দে ভারতের মতো গুরুত্বপূর্ণ ট্রেন যাতায়াত করে। চলে প্রচুর দূরপাল্লা বা লোকাল ট্রেনও। ফলে, বেশির ভাগ সময়েই তালিত রেলগেটটি বন্ধ থাকে। এক বার রেলগেট বন্ধ হলেই লাগে যানজট। জট কাটাতে কখনও কখনও চার-পাঁচ ঘণ্টাও লেগে যায়। আবার বীরভূম, আউশগ্রাম যাওয়া এবং বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে আসা রোগীদের ভরসাও এই পথই।
স্থানীয় বাসিন্দা শেখ জাহাঙ্গীর, নিত্যযাত্রী শিপ্রা কর্মকার বলেন, ‘‘রেলগেটে বিপত্তি নতুন কিছু নয়। মাঝেমধ্যে এই ধরনের ঘটনায় নাকাল হতে হয় সাধারণ মানুষকে। রেলগেট পড়ে থাকায় প্রতিদিন নির্দিষ্ট গন্তব্যে পৌঁছতে দেরি হয়।’’ দ্রুত কাজ শেষ করে হয়রানি লাঘব করার দাবি করেছেন তাঁরা।
রেল সূত্রে জানা গিয়েছে, এখানে একটি চার লেনের ওভারব্রিজ হবে। মোট দৈর্ঘ্য হবে ২.২ কিলোমিটার। এর মধ্যে সংযোগকারী রাস্তা থাকবে। সাড়ে দশ মিটার করে এক একটি লেন হবে। প্রতি লেনে তিনটি করে গাড়ি চলাচল করতে পারবে। এই প্রকল্পের জন্য মোট বরাদ্দ ধরা হয়েছে ২৬১ কোটি টাকা।