কালনার ঘুঘুডাঙার বাঁশের সাঁকো। নিজস্ব চিত্র।
গুরজোয়ানি নদীর উপরে প্রায় দু’শো ফুট লম্বা একটি বাঁশের সাঁকো রয়েছে কালনার নান্দাই পঞ্চায়েতের ঘুঘুডাঙা গ্রামে। নানা কাজের জন্য এই সাঁকো দিয়েই নিত্য যাতায়াত প্রায় ১০টি গ্রামের বাসিন্দাদের। তবে বর্ষা এলেই সাঁকো নিয়ে দুর্ভোগ বাড়ে। অভিযোগ, কখনও সাঁকো ভেঙে পরে নদীতে। আবার কখনও সেতু থেকে পড়ে জখম হন বাসিন্দারা। ঘুঘুডাঙার বাসিন্দাদের দাবি, বাঁশের সাঁকো সরিয়ে পাকা সেতুর জন্য আড়াই দশক ধরে আবেদন নিবেদন করেও কোনও লাভ হয়নি।
ঘুঘুডাঙা গ্রামে প্রায় ৪০০ ঘর মানুষের বাস। গ্রাম থেকে বাইরে বেরোনোর এক মাত্র ভরসা বাঁশের সাঁকোটি। বাসিন্দারা জানিয়েছেন, গ্রামে রয়েছে প্রাথমিক বিদ্যালয়, অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্র। সাঁকো পেড়িয়েই শিক্ষকদের গ্রামে পৌঁছতে হয়। উচ্চ বিদ্যালয়ে পড়তে গেলে সাঁকো পেড়িয়ে ছাত্রছাত্রীদের যেতে হয় কাছাকাছি নতুনগ্রাম উচ্চ বিদ্যালয়ে। সাইকেল, মোটর সাইকেলের মতো ছোটখাট যানবাহন চলাচল করে সাঁকোর উপর দিয়ে। তবে বর্ষা এলে যাতায়াতের সমস্যা তো বাড়েই সঙ্গে কাদা মাটিতে পিচ্ছিল হয়ে যাওয়া সাঁকো থেকে নদীতে পড়ে জখমও হন অনেকে বলে অভিযোগ। নৌকা চলাচল করে। তবে নদীতে জল বাড়ায় নৌকা থেকে পড়ে যাওয়ার ঘটনাও ঘটেছে বলে দাবি।
ঘুঘুডাঙার বাসিন্দা মনিরুল শেখ বলেন, “২৫ বছর ধরে আমরা কংক্রিটের সেতুর জন্য আবেদন করে আসছি। কাজের কাজ কিছু হয়নি। বাঁশের সাঁকো মাঝে মধ্যেই ভেঙে পড়ে। কখনও পঞ্চায়েত, কখনও নিজেরা চাঁদা তুলে সাঁকোটি সারানো হয়। জানিনা এই দুর্ভোগ আর কত দিন চলবে।” গ্রামবাসীর ক্ষোভ, প্রতিবার ভোটের প্রতিশ্রুতিতে পাকা সেতু তৈরির কথা ওঠে। মাঝে মধ্যে কয়েকবার মাটি পরীক্ষা, ইঞ্জিনিয়ারদের ফিতে ফেলে মাপজোক করতেও দেখা গিয়েছে। তবে শেষ পর্যন্ত পাকা সেতু হয়ে ওঠেনি। সেতুটি পাকা হলে সারগড়িয়া, আটকেটিয়া, বৃদ্ধপাড়া, মোসলেমাবাদ, কৈলাশপুর-সহ ১৫টি গ্রামের মানুষের এসটিকেকে রোডের সঙ্গে যোগাযোগ সহজ হবে বলে দাবি তাঁদের।
নান্দাই পঞ্চায়েতের উপপ্রধান শাহনওয়াজ মোল্লা বলেন, “পঞ্চায়েতের নিজস্ব তহবিলের অবস্থা ভাল নয়। তবু গত ছ’মাসে ঘুঘুডাঙা গ্রামে বাঁশের সাঁকোটি দু’বার সংস্কার করা হয়েছে। পাকা সেতুর জন্য ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি। বিধায়ক তথা প্রাণিসম্পদ উন্নয়ন দফতরের মন্ত্রীও সেতুটি যাতে পাকা হয় সে ব্যাপারে চেষ্টা চালাচ্ছেন।”