জগদানন্দপুরের রাধাগোবিন্দ জিউ মন্দির। নিজস্ব চিত্র
দীর্ঘদিন সংস্কার না হওয়ায় মন্দিরের পাথরে ফাটল ধরেছে। গজিয়েছে আগাছা। সম্প্রতি এই মন্দিরে যাতায়াত করেছেন রাজনীতির নানা পক্ষের নেতাদের। তার পরেই মন্দির সংস্কারের বিষয়ে দাবি উঠেছে কাটোয়া ২ ব্লকের জগদানন্দপুরে। এলাকার প্রাচীন রাধাগোবিন্দ জিউ মন্দিরের পূর্ণাঙ্গ সংস্কার চেয়ে ভারতীয় পুরাতত্ত্ব সর্বেক্ষণের দ্বারস্থ হয়েছেন সেবায়েত ও গ্রামবাসীর একাংশ।
২০২১ সালে বিধানসভা ভোটের আগে দলের কর্মসূচিতে কাটোয়ায় এসে বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি জে পি নড্ডা এই মন্দিরে পুজো দেন। মন্দিরের সামনে ফাঁকা মাঠে নেমেছিল তাঁর হেলিকপ্টার। দিন কয়েক আগে তৃণমূলের ‘নবজোয়ার যাত্রা’ কর্মসূচিতে দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ও এই মন্দিরে এসে পুজো দিয়ে যান। তার পরেই মন্দির সংস্কারের জন্য লিখিত আর্জি জমা দেওয়া হয়েছে বলে স্থানীয় সূত্রের খবর। উপযুক্ত সংস্কারের জন্য প্রায় সাড়ে চার লক্ষ টাকা প্রাথমিক ভাবে ব্যয় হতে পারে বলেও একটি হিসাব তৈরি করে দেওয়া হয়েছে বলে এলাকাবাসীর একাংশের দাবি। তাঁদের ধারণা, নেতাদের আসা-যাওয়া বেড়েছে, তাই মন্দির সংস্কারে উদ্যোগী হবে সব পক্ষই।
জগদান্দপুর পঞ্চায়েত ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, প্রায় দু’শো বছর আগে প্রায় ১০০ ফুট উঁচু গোলাপি বেলেপাথর দিয়ে পঞ্চচূড়ার মন্দিরটি তৈরি করা হয়। পাথরের উপরে রয়েছে কারুকাজ। কথিত রয়েছে, সেই সময়ে বেলেপাথর আনতে দাঁইহাটের ভাগীরথী থেকে জগদানন্দপুর গ্রাম পর্যন্ত খাল কাটা হয়। মন্দিরের গর্ভগৃহে রয়েছে রাধা-গোবিন্দের মূর্তি। প্রতিদিন ভোরে মঙ্গলারতি থেকে শুরু করে নানা ধর্মীয় আচরণ পালিত হয়। দূরদূরান্ত থেকে পর্যটকেরা এই মন্দির দেখতে আসেন। মন্দিরের সেবায়েত তথা জগদান্দপুর পঞ্চায়েতের সদস্য সুদীপ ঘোষচৌধুরী বলেন, “মন্দিরের চূড়ার নানা জায়গায় বড় বড় গাছ গজিয়ে উঠেছে। পাথর ফেটে যাচ্ছে। যে কোনও সময়ে দুর্ঘটনা ঘটে যেতে পারে। মন্দিরের সামগ্রিক উন্নয়নের আর্জি নেতাদের জানিয়েছি। দিন কয়েক আগে ভারতীয় পুরাতত্ত্ব সর্বেক্ষণের কাছেও গ্রামবাসী লিখিত ভাবে আবেদন জানিয়েছেন।’’ পঞ্চায়েতের প্রধান গৌতম ঘোষাল বলেন, ‘‘এই মন্দির কাটোয়ার গর্ব। মন্দিরটি আকর্ষণীয় করে তুললে এলাকার পর্যটনে উন্নতি হবে।’’
কাটোয়ার বিধায়ক রবীন্দ্রনাথ চট্টোপাধ্যায়ের আশ্বাস, “প্রাচীন মন্দিরটির যাতে উপযুক্ত সংস্কার হয়, সে ব্যাপারে সব রকম পদক্ষেপ করা হবে।’’ মহকুমাশাসক (কাটোয়া) অর্চনা পন্ধরিনাথ ওয়াংখেড়ে বলেন, “মন্দির সংস্কারের বিষয়টি খতিয়ে দেখতে সংশ্লিষ্ট দফতরের সঙ্গে কথা বলা হবে।’’