মঙ্গলকোটে জেলাশাসক। নিজস্ব চিত্র
আবাস যোজনা প্রকল্পে উপভোক্তাদের যোগ্যতা খতিয়ে দেখার ক্ষেত্রে জেলা প্রশাসনের মাথাব্যথা মঙ্গলকোট ও কালনা ২ ব্লক। সেখানে আশাকর্মীরা এখনও সমীক্ষার কাজে নামেননি বলে প্রশাসন সূ্ত্রের খবর। বুধবার জেলাশাসক প্রিয়াঙ্কা সিংলা মঙ্গলকোটে যান। কেন আশাকমীরা সমীক্ষার কাজে রাজি নন, তার খোঁজ নেন। পরে তালিকায় নাম থাকা বেশ কয়েকটি বাড়িতে গিয়ে কথাবার্তা বলে তাঁরা বাড়ি পাওয়ার উপযুক্ত কি না, খোঁজ নেন তিনি।
জেলাশাসক বলেন, ‘‘তালিকায় নাম থাকা উপভোক্তাদের বাড়ি গিয়ে খোঁজখবর করেছি তাঁরা সত্যিই উপযুক্ত কি না। আটটি পরিবারের সঙ্গে কথা বলে আমরা সন্তুষ্ট। তাঁরা বাড়ি পাওয়ার যোগ্য।’’ প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, দু’জন পঞ্চায়েত সদস্যের বাড়িতে গিয়েও সমীক্ষা করেন জেলাশাসক।
বেশ কয়েক বছর আগে প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনার দ্বিতীয় পর্যায়ের (আবাস প্লাস) জন্য উপভোক্তাদের নামের তালিকা তৈরি হয়। সরকারি অনুদানে বাড়ি পাওয়ার ক্ষেত্রে ‘অনুপযুক্ত’ বলে বেশ কিছু জনের নাম বাদ যায়। তার পরেও তালিকায় থাকা সব উপভোক্তা যথাযথ কি না দেখতে আশা, অঙ্গনওয়াড়ি কর্মীদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে নির্দিষ্ট ফর্মে রিপোর্ট দিতে বলেছে রাজ্য। যদিও আশাকর্মীদের অভিযোগ, কাজ শুরুর পর থেকেই স্থানীয় প্রশাসন ও রাজনৈতিক হস্তক্ষেপ আসছে। নিরাপত্তার অভাব বোধ করছেন দাবি করে মঙ্গলকোট, কালনা-সহ কয়েকটি ব্লকে বিক্ষোভ, স্মারকলিপি দিয়েছেন তাঁরা।
এ দিন তালিকায় নাম থাকা মেঘনাদ সাহা, মানিক সাঁতরা, বিজয় টুডু, হাপনমনি টুডুদের দাবি, ‘‘জেলাশাসক এসে আমাদের ভাঙা বাড়ি, কোথা দিয়ে জল পড়ে, কী করি, পরিবারে কে কে রয়েছেন, জানতে চান। শৌচাগার আছে কি না, থাকলে কী হাল, এ সবও দেখেন তিনি।’’ প্রায় আড়াই ঘণ্টা মঙ্গলকোটে ছিলেন জেলাশাসক। প্রশাসনের একটি সূত্রের দাবি, জেলাশাসকের সঙ্গে পুলিশ, অন্য আধিকারিকেরা থাকলেও আশাকর্মীরা ছিলেন না।
মঙ্গলকোটে ৭৪ হাজার ৯১৩টি বাড়িতে সমীক্ষা করার কথা। শনিবারের মধ্যে রিপোর্ট জমা দিতে হবে। কিন্তু আশাকর্মীরা মাঠে না নামায় সময়ে কাজ শেষ হবে কি না, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। একই ছবি কালনা ২ ব্লকেও। ১৫,৩৫৪টি বাড়ির সমীক্ষা বাকি সেখানে। আশাকর্মীরা কাজে গররাজি সেখানেও, জানতে পেরেছে প্রশাসন। বিডিও জগদীশচন্দ্র বারুই (মঙ্গলকোট) বলেন, ‘‘জেলাশাসক ঘুরে যাওয়ার পরে আশাকর্মীরা সমীক্ষার কাজে নামতে রাজি হয়েছেন। কাজও শুরুও হয়েছে।’’ ব্লক প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, পঞ্চায়েতের কর্মীদেরও সমীক্ষার কাজে ব্যবহার করতে চায়ছে মঙ্গলকোট ব্লক। জেলাশাসকের সঙ্গে ছিলেন আবাস প্রকল্পের নোডাল অফিসার তথা জেলা পরিষদের উপ-সচিব নিমাই মণ্ডল। তিনি বলেন, ‘‘সরেজমিন তদন্ত করে উপযুক্ত ব্যক্তিরা যাতে বাড়ি পান, তা দেখা হচ্ছে। আমরা জেলা, মহকুমা স্তরেও কন্ট্রোল রুম খুলেছি।’’ এ দিন বিকেলে মুখ্যসচিব ভিডিয়ো কনফারেন্স করেন জেলাগুলির সঙ্গে। জানা গিয়েছে, রিপোর্টে যাতে কোনও গরমিল না থাকে এবং কন্ট্রোল রুম যাতে সারা দিন খোলা থাকে, তাতে জোর দেওয়া হয়েছে। প্রতিদিনের কাজের রিপোর্টও পাঠাতে বলা হয়।