প্রতীকী ছবি।
করোনার জন্যে গত বছর পুজো মরসুমে মদ বিক্রিতে ‘ভাটা’ চলেছিল। এ বার অবশ্য পূর্ব বর্ধমান জেলায় ‘সুরা’র টানে দোকানে ভালই ভিড় হয়েছে বলে তথ্যে উঠে আসছে। আবগারি দফতরের হিসেবে, গত বার পুজোর পাঁচ দিনের চেয়ে এ বার পুজোয় মদের বিক্রি অন্তত আট কোটি টাকা আয় বেড়েছে। দফতরের এক শীর্ষ কর্তার দাবি, “গত বছর ষষ্ঠী থেকে দশমী পর্যন্ত জেলায় ১৪ কোটি টাকার মতো মদ বিক্রি হয়েছিল। এ বার সেটাই দাঁড়িয়েছে ২২ কোটি টাকায়।’’
রাজ্য সরকারের রাজস্বের একটা বড় অংশ আসে আবগারি দফতর থেকে। রাজ্যে বিষাক্ত চোলাই খেয়ে মৃত্যুর ঘটনা বার বার ঘটেছে। চোলাই মদ বন্ধের ক্ষেত্রে রাজ্য সরকার কঠোর অবস্থান নেওয়ায় চোলাই, পচাই, ধেনোর বিক্রিতে বেশ কিছুটা রাশ টানা সম্ভব হয়েছে বলে আবগারি দফতর সূত্রে দাবি করা হয়। এতে লাভবান হয়েছেন লাইসেন্স প্রাপ্ত মদ বিক্রেতারা। পাশাপাশি, মদের লাইসেন্স বেশি করে দেওয়ায় মদ বিক্রিও বেড়েছে।
বর্তমানে পূর্ব বর্ধমানে লাইসেন্স প্রাপ্ত ৩১২টি সক্রিয় মদের দোকান রয়েছে। আবগারি দফতরের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, এ বার পুজোয় ষষ্ঠী থেকে দশমী পর্যন্ত পাঁচ দিনে জেলায় দিশি মদ বিক্রি হয়েছে চার লক্ষ ২৪ হাজার ২৯৩ লিটার, গত বারের পুজোর ওই সময় দিশি মদ বিক্রি হয়েছে তিন লক্ষ নয় হাজার ৬০৮ লিটার। বিলিতি মদ গত বার বিক্রি হয়েছিল ৬৯ হাজার ৯৭৪ লিটার, এ বার বিক্রি হয়েছে এক লক্ষ ৫৩ হাজার ৪২ লিটার।
গত বছর যেখানে ৩১ হাজার ৮০৭ লিটার বিয়ার বিক্রি হয়েছিল, এ বার পুজোর পাঁচ দিনে বিয়ার বিক্রি হয়েছে এক লক্ষ ৬৮ হাজার ৪২২ লিটার।
আবগারি দফতর সূত্রে জানা যায়, এ বার বোতল পিছু দিশি মদের দাম বেড়েছে ন্যূনতম ২০ টাকা। বিভিন্ন ব্র্যান্ডের বিলিতি মদের দাম ৩০ শতাংশ হারে বেড়েছে। কিছুটা দাম কমেছে বিয়ারের। দফতরের এক কর্তা বলেন, “পুজোর সময় গরম ছিল। তার উপরে বিয়ারের দাম তুলনামূলক কম হওয়ায় বিক্রি বেড়েছে।’’
আবগারি দফতর সূত্রে জানা যায়, ২০১৮ সালে পূর্ব বর্ধমান জেলা পুজোর মাসে ১০০ কোটি টাকার মদ বিক্রি করেছিল। ২০১৯ সালে ১৫০ কোটি টাকার উপরে মদ বিক্রি হয়। কিন্তু গত বছর পুজোর মাসে মদ বিক্রি অনেকটাই কমে গিয়েছিল। তবে লকডাউনের পরে মাত্র কয়েক ঘণ্টায় জেলায় প্রায় এক কোটি ৭৫ লক্ষ টাকার মদ বিক্রি হয়েছিল। দফতরের কর্তাদের আশা, “এ বারও মনে হচ্ছে, পুজোর মাসে মদের বিক্রি ১৫০ কোটি টাকা ছাড়িয়ে যাবে।’’