গাড়ি বার করছে পুলিশ। নিজস্ব চিত্র।
কৃষি আইনের বিরোধিতায় বর্ধমানে বামেদের জাতীয় সড়ক অবরোধে আটকে পড়ল রাজ্যের দুই মন্ত্রীর কনভয়। গাড়ি ঘিরে বিক্ষোভ, ধাক্কাধাক্কি করা হয় বলে অভিযোগ। পুলিশ বিক্ষোভকারীদের সরিয়ে কনভয় পার করানোর ব্যবস্থা করে। দুই মন্ত্রীরই দাবি, তাঁরা কৃষি আইনের বিরোধিতা করলেও এমন ভাবে আন্দোলন উচিত নয়।
শনিবার দুপুর সওয়া ২টো নাগাদ বর্ধমানে ২ নম্বর জাতীয় সড়কের নবাবহাট এলাকার গড় মোড় এলাকায় কৃষকসভা-সহ নানা বাম সংগঠনের কর্মী-সমর্থকেরা রাস্তা অবরোধ শুরু করেন। সড়কের দু’টি লেনেই ব্যানার-পতাকা হাতে বসে পড়েন তাঁরা। দুর্গাপুর থেকে বর্ধমানের দিকে যাওয়ার লেনের পাশে মঞ্চ বেঁধে বক্তৃতা করেন কৃষকসভার রাজ্য নেতা অমল হালদার, জেলা সম্পাদক সৈয়দ হোসেন, সিপিএমের জেলা সম্পাদক অচিন্ত্য মল্লিকেরা।
কিছুক্ষণ অবরোধ চলার পরেই সেখানে পৌঁছয় রাজ্যের দমকল মন্ত্রী সুজিত বসুর কনভয়। তাঁর গাড়ি ঘিরে অবরোধকারীরা বিক্ষোভ দেখান। খানিকক্ষণ আটকে থাকে দমকল মন্ত্রীর গাড়ি। পুলিশ কোনও রকমে তাঁর কনভয় পার করে দেয়। এর খানিক পরেই রাজ্যের ক্ষুদ্র ও কুটিরশিল্প এ প্রাণিসম্পদ দফতরের মন্ত্রী স্বপন দেবনাথের গাড়ি আসে সেখানে। তখনই বিক্ষোভ চরমে ওঠে। মন্ত্রীর গাড়িতে ধাক্কাধাক্কি করা হয়, পতাকার লাঠি দিয়ে গাড়ির বনেটে মারা হয় বলে অভিযোগ। মন্ত্রীর গাড়ির সামনে চাল চুরি-সহ নানা দুর্নীতির অভিযোগে স্লোগান দেওয়া হয়। চূড়ান্ত বিশৃঙ্খলা তৈরি হয় সড়কে। পুলিশ পরিস্থিতি সামাল দিতে নাজেহাল হয়। পরে, বিক্ষোভকারীদের সরিয়ে মন্ত্রীর গাড়ি বার করে দেওয়া হয়।
এ দিন বুদবুদে দমকল কেন্দ্রের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে যাচ্ছিলেন দুই মন্ত্রী। বিক্ষোভের মুখে পড়া নিয়ে স্বপনবাবুর প্রতিক্রিয়া, ‘‘কৃষি আইন নিয়ে আন্দোলন আমরাই প্রথম করেছি। আন্দোলন করুন, কিন্তু অবরোধের নামে মন্ত্রীদের আটকে বিক্ষোভ দেখানো উচিত নয়। আমি এর নিন্দা করছি।’’ দুর্নীতির অভিযোগ প্রসঙ্গে তাঁর মন্তব্য, ‘‘কেন এ সব বলছেন, তা ওই বিক্ষোভকারীরাই বলতে পারবেন।’’ সুজিতবাবুর দাবি, ‘‘কৃষি আইনের বিরুদ্ধে আমরাও লড়াই করেছি। আন্দোলনে আমাদের নৈতিক সমর্থন থাকলেও, মানুষের অসুবিধা করে আন্দোলন না করাই ভাল। বহু মানুষ গন্তব্যে, অনেক রোগী হাসপাতালে পৌঁছতে পারবেন না।’’
ঘণ্টাখানেক চলার পরে অবরোধ ওঠে। এর জেরে জাতীয় সড়কের দু’টি লেনেই রীতিমতো যানজট হয়। আটকে পড়ে প্রচুর গাড়ি। কৃষকসভার জেলা সম্পাদক সৈয়দ হোসেনের দাবি, ‘‘আমরা মঞ্চে ছিলাম। মন্ত্রীদের গাড়ি আটকানো হয়েছে কি না, জানি না। মানুষ স্বতঃস্ফূর্ত ভাবে আন্দোলন করেছেন।’’