ছবি সংগৃহীত
গ্রামীণ অর্থনীতির উন্নয়নের লক্ষ্যে ‘মাটির সৃষ্টি’ প্রকল্পের সূচনা করেছেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। পশ্চিম বর্ধমান-সহ দক্ষিণবঙ্গের ছ’টি জেলায় এই প্রকল্প রূপায়িত হওয়ার কথা। তবে তৃণমূল প্রকল্পটিকে স্বাগত জানালেও, বিরোধীরা প্রকল্পের বাস্তবায়ন নিয়ে সংশয় প্রকাশ করেছেন।
প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, এই প্রকল্পে একশো দিনের কাজ, স্বয়ম্ভর গোষ্ঠীগুলিকে যুক্ত করা হয়েছে। সঙ্গে রয়েছে কৃষি ও উদ্যানপালন দফতরও। উদ্যানপালন দফতর প্রযুক্তিগত সহয়তা ও প্রয়োজনীয় পরামর্শ দেবে। পশ্চিম বর্ধমান জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, কৃষিকাজের উন্নতির জন্য ‘কমিউনিটি ডেভলপমেন্ট’, স্বয়ম্ভর গোষ্ঠীর মাধ্যমে ‘স্যানিটাইজ়ার’, ‘মাস্ক’, সাবান-সহ নানা সামগ্রী তৈরির পরিকল্পনা করা হয়েছে। ‘রায়ত’ জমির (ব্যক্তিগত জমি) ক্ষেত্রে সরকার চুক্তির ভিত্তিতে কাজ করবে।
বৃহস্পতিবার পশ্চিম বর্ধমান জেলা পঞ্চায়েত ও গ্রামোন্নয়ন আধিকারিক তমোজিৎ চক্রবর্তী জানান, ইতিমধ্যেই কয়েক হাজার একর পতিত জমিতে কাজ করার পরিকল্পনা করা হয়েছে। ইতিমধ্যেই চিহ্নিত জমির পরিমাণ প্রায় পাঁচশো একর। প্রকল্পের জন্য কাঁকসা, দুর্গাপুর-ফরিদপুর, পাণ্ডবেশ্বর, জামুড়িয়া, রানিগঞ্জ, সালানপুর, বারাবনি, আসানসোলে জমি চিহ্নিতকরণের কাজ চলছে।
পশ্চিম বর্ধমান জেলা পরিষদের কর্মাধ্যক্ষ (কৃষি) অনুভা চক্রবর্তী জানান, বার্নপুরে ‘ইস্কো’, দুর্গাপুরে দুর্গাপুর স্টিল প্ল্যান্ট (ডিএসপি), খনি এলাকায় ইসিএলের অধীন প্রায় ১০ হাজার একর ‘পতিত’ জমি পড়ে রয়েছে। ওই তিনটি সংস্থার সঙ্গে চুক্তির ভিত্তিতে সেই জমি কাজে লাগানো যায় কি না, তা-ও খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
তবে প্রকল্প নিয়ে ইতিমধ্যেই শুরু হয়েছে রাজনৈতিক চাপান-উতোর। কর্মসংস্থানের ক্ষেত্রে ‘রং’ দেখা চলবে না, এই বার্তা দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। এ দিন সেই বিষয়টিকেই উস্কে দিয়ে রানিগঞ্জের সিপিএম বিধায়ক রুনু দত্ত বলেন, “উনি (মুখ্যমন্ত্রী) রাজনৈতিক রং না দেখে কাজ করতে বললেও, ওঁর দলেরই নীচের তলার কর্মীরা তা মানেন না। বিরোধী দলের সমর্থক মজুরেরা তাই কতটা কাজ পাবেন, তা নিয়ে সংশয় রয়েছে।” বিজেপির আসানসোল জেলা সভাপতি লক্ষ্মণ ঘোড়ুইয়ের অভিযোগ, “মুখ্যমন্ত্রী রাজ্যে ক্ষমতায় আসার পরে ১৮০টি প্রকল্প ঘোষণা করলেও কোনওটার কাজই সম্পূর্ণ হয়নি। এই সরকার যে কোনও কাজেই রাজনৈতিক রং দেখে। এ ক্ষেত্রেও তার অন্যথা
হবে বলে মনে হয় না।” তবে তৃণমূলের জেলা সভাপতি জিতেন্দ্র তিওয়ারির প্রতিক্রিয়া, “সবেই রাজনীতির রং দেখাটা বিরোধীদের অভ্যাস। মুখ্যমন্ত্রীর ঘোষণা করা এই প্রকল্প গ্রামের অর্থনীতিকে এগিয়ে নিয়ে যাবে।”