বড়িরা ‘এ’ সম্প্রসারণ প্রকল্পে মাটি কাটার কাজ। নিজস্ব চিত্র
একটি খোলামুখ খনির সম্প্রসারণ এবং একটি নতুন খোলামুখ খনি খোলার জন্য জমি অধিগ্রহণ প্রক্রিয়া শেষ করার কথা জানিয়েছে রাষ্ট্রায়ত্ত কয়লা উত্তোলক সংস্থা ‘ভারত কোকিং কোল লিমিটেড’ (বিসিসিএল)। তবে কয়লা উত্তোলনের বরাত দেওয়া হয়েছে দু’টি বেসরকারি সংস্থাকে। খনি চালুর জন্য বন ও পরিবেশ দফতরের ছাড়পত্র মিলেছে বলেও জানিয়েছেন কর্তৃপক্ষ। তাঁদের আশা, এই দুই খনিতে স্থায়ী ও অস্থায়ী মিলে প্রত্যক্ষ ভাবে প্রায় ৪৫০ জনের কর্মসংস্থানের সুযোগ ঘটবে।
বিসিসিএল সূত্রে জানা যায়, চাঁচ ভিক্টোরিয়া এরিয়ার অন্তর্গত কুলটির বড়িরা ‘এ’ খোলামুখ খনির সম্প্রসারণ ও পূর্ব রামনগরে খোলামুখ খনি খোলার প্রক্রিয়া শুরু হয় প্রায় বছর দেড়েক আগে। করোনা-পরিস্থিতির জন্য কথা থাকলেও চলতি অর্থবর্ষে কাজ শুরু করা যায়নি। তবে শেষ পর্যন্ত তোড়জোড় শুরু হয়েছে। চাঁচ ভিক্টোরিয়া দামাগড়িয়া প্রজেক্টের এজেন্ট রাজু গুপ্ত জানান, পূর্ব রামনগরে অধিগৃহীত জমিতে প্রায় ২৫ লক্ষ টন কয়লা মজুত আছে। এই পরিমাণ কয়লা তুলতে সময় লাগবে প্রায় চার বছর। পাশাপাশি, বড়িরা ‘এ’-র সম্প্রসারণ প্রকল্পের জন্য অধিগৃহীত জমিতে আট লক্ষ টন কয়লা মজুত আছে। এই কয়লা তুলতে সময় লাগবে প্রায় আড়াই বছর। রাজুবাবু বলেন, ‘‘কিছু প্রাথমিক কাজ বাকি আছে। সেগুলি মিটিয়ে দ্রুত খনন প্রক্রিয়া শুরু হবে।’’
সংস্থার চাঁচ ভিক্টোরিয়া এরিয়ার ডেপুটি পার্সোনেল ম্যানেজার সুমন্ত রায় জানান, যাঁরা দু’একর জমি দিয়েছেন, তাঁরা একটি স্থায়ী চাকরি পাচ্ছেন। যাঁরা দু’একর জমি দিতে পারেননি তাঁরা জমির বর্তমান দাম ও ক্ষতিপূরণ পাচ্ছেন। যে দু’টি বেসরকারি ঠিকা সংস্থা কয়লা তোলার বরাত পেয়েছে তারা যেন স্থানীয়দের নিয়োগ করে, সে বিষয়ে পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। বিসিসিএল সূত্রে জানা যায়, বড়িরা ‘এ’ সম্প্রসারণ প্রকল্পে ইতিমধ্যেই মাটি কাটার কাজ শুরু হয়েছে। পূর্ব রামনগর প্রকল্প এলাকায় একটি ইটভাটা ও কুরকুটিয়া বস্তি নামে ৪০টি আদিবাসী পরিবারের একটি বস্তি স্থানান্তরের প্রক্রিয়া চলছে। ওই পরিবারগুলিকে পুনর্বাসন দেওয়ার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। সে কাজ শেষ হলেই বস্তি খালি করে নভেম্বরের মধ্যে মাটি কাটার প্রক্রিয়া শুরু হবে।
কুরকুটিয়া বস্তির স্থানীয় বাসিন্দা সূরয হাঁসদা-সহ কয়েকজন দাবি করেন, ‘‘আমরা উঠে যেতে রাজি। কারণ, এখানে জমি বন্ধ্যা। অন্য কোনও কাজের ব্যবস্থা নেই। ফলে, খনি কর্তৃপক্ষকে জমি দান করে দাম ও ক্ষতিপূরণ নেব।’’ এ দিকে, বিষয়টি নিয়ে সিটু নেতা সুজিত ভট্টাচার্য বলেন, ‘‘বেসরকারি সংস্থাকে দিয়ে খনন করানোর তীব্র বিরোধী আমরা। তবে নতুন খনি হবে, সেটা স্বাগত।’’ একই প্রতিক্রিয়া আইএনটিইউসি নেতা হারাধন মণ্ডলেরও। তবে তাঁর সংযোজন, ‘‘কোনও কাজে স্থায়ী শ্রমিকেরা যা বেতন পান, অস্থায়ী শ্রমিকেরাও যেন তা-ই পান, সে দাবি জানিয়েছি।’’