laxmi puja

লক্ষ্মীপুজোয় সরস্বতীর আরাধনা, ৭৫ বছর ধরে হাতে লেখা পত্রিকা প্রকাশ করছে বর্ধমানের আনগুনা

মোবাইলে এখন ফাইভ জি-র গতি। তার সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বদলে গিয়েছে মুদ্রণের কলাকৌশলও। কিন্তু গত ৭৫ বছর ধরে প্রতি কোজাগরী লক্ষ্মী পূর্ণিমায় হাতে লেখা পত্রিকা প্রকাশ করে আসছেন একদল সাহিত্যপ্রেমী।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

বর্ধমান শেষ আপডেট: ০৯ অক্টোবর ২০২২ ১৮:২১
Share:

চলছে পত্রিকা লেখার কাজ। — নিজস্ব চিত্র।

মোবাইলে এখন ফাইভ জি-র গতি। তার সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বদলে গিয়েছে মুদ্রণের কলাকৌশলও। কিন্তু গত ৭৫ বছর ধরে প্রতি কোজাগরী লক্ষ্মী পূর্ণিমায় হাতে লেখা পত্রিকা প্রকাশ করে আসছেন এক দল সাহিত্যপ্রেমী। পূর্ব বর্ধমানের রায়না থানার আনগুনা গ্রাম এখন পরিচিত হয়ে উঠেছে সেই সাহিত্য পত্রিকা সৌজন্যেই। যার নাম ‘প্রভাত সাহিত্য পত্রিকা’।

Advertisement

আনগুনা গ্রামের ‘প্রভাত স্মৃতি সঙ্ঘ’-এর উদ্যোগে প্রকাশিত হয়ে আসছে এই পত্রিকা। ৮x ১২ ইঞ্চি মাপের এই পত্রিকার পাতার সংখ্যা ২০০-র বেশি। তাতে থাকে নামজাদা সাহিত্যিক থেকে শুরু করে নবাগতদের লেখালিখিও। ১৯৪৭ সালে আনগুনা গ্রামের কয়েক জন সাহিত্যপ্রেমী প্রথম এই পত্রিকা প্রকাশের উদ্যোগ নিয়েছিলেন। তার পর থেকে বয়ে চলেছে সেই ধারা। লক্ষ্মী পুজোর দিন সন্ধ্যায় গ্রামের মন্দিরে আনুষ্ঠানিক ভাবে প্রকাশিত হয় এই পত্রিকা।

পত্রিকার সঙ্গে যুক্ত অমিত রায় নামে আনগুনা গ্রামের এক বাসিন্দার কথায়, ‘‘কাজি নজরুল ইসলাম, কালিদাস রায়, সত্যজিৎ রায়, সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়, সত্য বন্দ্যোপাধ্যায়, নবনীতা দেবসেন-- এমন বহু নামজাদা সাহিত্যিকের লেখনীতে সমৃদ্ধ হয়েছে এই পত্রিকা। শুধু বিখ্যাত সাহিত্যিকদের লেখাই নয়, আনগুনা-সহ আশপাশের গ্রামের সাহিত্যপ্রেমীদের লেখা কবিতা, গল্প সবই গুরুত্ব দিয়ে আমাদের পত্রিকায় প্রকাশিত হয়ে আসছে।’’

Advertisement

লক্ষ্মী পুজোর অনেক আগে থেকেই শুরু হয় পত্রিকা প্রকাশনার কাজ। উদ্যোক্তারা জানান, লেখা পাওয়ার পর তা কোনও ছাপাখানায় পাঠানো হয় না। তা পত্রিকা প্রকাশনার দায়িত্বে থাকা সদস্যরা নির্দিষ্ট মাপে কাটা কাগজের উপর লিখে ফেলেন মুক্তাক্ষরে। সেই সঙ্গে পাতায় পাতায় থাকে নানা অলঙ্করণও। প্রতি বার প্রকাশিত হওয়া পত্রিকাগুলি এখনও সযত্নে রাখা রয়েছে।

ওই পত্রিকা গোষ্ঠীর সদস্য শিল্পা কার্ফা বলেন, ‘‘মুদ্রণ শিল্পে এখন যতই উন্নতি ঘটুক না কেন, আমাদের হাতে লেখা এই সাহিত্য পত্রিকার আভিজাত্যই আলাদা।’’

শিল্পার সুরে সুর মিলিয়ে ওই গোষ্ঠীর আরও এক সদস্য সুস্মিতা হাজরা বলেন, ‘‘প্রভাত সাহিত্য পত্রিকা বাংলার সাহিত্য চর্চাকে অন্য পর্যায়ে তুলে নিয়ে গিয়েছে। তা এই গ্রাম শুধু নয়, এই বাংলারও গর্ব।’’

প্রতি লক্ষ্মীপুজোয় পত্রিকা প্রকাশের অপেক্ষা থাকে গোটা গ্রাম।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement