কাজোড়া মোড়ে ২ নম্বর জাতীয় সড়ক অবরোধ। নিজস্ব চিত্র
কেন্দ্রীয় ও রাজ্য সরকারের নানা নীতির বিরুদ্ধে রবিবার দুর্গাপুরে ‘জেল ভরো’ কর্মসূচি পালন করল সিটু, আইএনটিইউসি-সহ বিভিন্ন শ্রমিক সংগঠন। এ দিন বাঁকুড়া মোড়ের কাছে দুর্গাপুর-বাঁকুড়া রাজ্য সড়ক প্রায় আধ ঘণ্টা অবরোধ করে বিক্ষোভ দেখান বিভিন্ন শ্রমিক সংগঠনের কর্মী-সমর্থকেরা। এর জেরে যানজট হয়। কোকআভেন থানার পুলিশ বিক্ষোভকারীদের প্রতীকী গ্রেফতারের কথা ঘোষণার পরে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়।
এ দিন বিভিন্ন সংগঠন অভিযোগ করে, করোনা পরিস্থিতিতে লকডাউনের মাঝে কেন্দ্রীয় সরকার বিভিন্ন রাষ্ট্রায়ত্ত শিল্প বিক্রির ব্যবস্থা করেছে। কর্মসূচিতে যোগ দেন দুর্গাপুরের সিপিএম সন্তোষ দেবরায়, সিটু নেতা পঙ্কজ রায়সরকার প্রমুখ। পঙ্কজবাবু বলেন, ‘‘মুখে আত্মনির্ভরতার কথা বলে দেশ বিক্রি করে দেওয়ার ব্যবস্থা চলছে লকডাউনের পরিস্থিতিতে। ভবিষ্যৎ প্রজন্ম দিশাহীনতায় ভুগবে।’’ তাঁর আরও অভিযোগ, করোনা মোকাবিলায় কেন্দ্রীয় ও রাজ্য দুই সরকারই ব্যর্থ। তিনি বলেন, ‘‘বলা হচ্ছে আতঙ্ক ছড়াবেন না। অথচ পিপিই কিট নেই। পরীক্ষা হচ্ছে না। হাসপাতালে শয্যা নেই। বেসরকারি হাসপাতালে ব্যাপক হারে বিল নেওয়া হচ্ছে। পরিস্থিতি মোকাবিলায় দুই সরকারই ব্যর্থ। সাধারণ মানুষ অসহায়।’’ এই পরিস্থিতিতে রাজ্য সরকারের বিদ্যুৎ বিল মকুব করা দরকার বলেও দাবি করেন বিক্ষোভকারীরা। তবে, এ দিনের কর্মসূচিতে স্বাস্থ্যবিধি না মানার অভিযোগ ওঠে বিক্ষোভকারীদের বিরুদ্ধে। যদিও তাঁরা তা মানেননি।
এ দিন সিটি সেন্টারে বিভিন্ন বামপন্থী শ্রমিক সংগঠন এবং আইএনটিইউসি কেন্দ্রীয় সরকারের বিভিন্ন নীতির বিরোধিতা করে। ‘যৌথ সংগ্রাম কমিটি’ পদযাত্রা বার করে। পদযাত্রা থেকে কেন্দ্রীয় ও রাজ্য, দুই সরকারের বিরুদ্ধেই স্লোগান ওঠে। এডিডিএ ভবনের সামনে আয়োজিত কর্মসূচিতে উপস্থিত ছিলেন সিটু নেতা বিনয়েন্দ্রকিশোর চক্রবর্তী, প্রাক্তন সিপিএম বিধায়ক বিপ্রেন্দু চক্রবর্তী, ডিএসপি-র সিটু নেতা বিশ্বরূপ বন্দ্যোপাধ্যায়, আইএনটিইউসি নেতা বিকাশ ঘটক, বিশ্বজিৎ বিশ্বাস, এআইটিইউসি নেতা তরুণ দাস প্রমুখ।
‘ভারত ছাড়ো’ আন্দোলনের ৭৮তম বর্ষপূর্তি এবং ‘দেশ বাঁচাও দিবস’ উপলক্ষে আইএনটিইউসি প্রভাবিত ‘ডিএমসি সাফাইকর্মী ইউনিয়ন’ সিটি সেন্টারের রিকল পার্ক থেকে মিছিল বার করে। কেন্দ্রীয় সরকারের বিলগ্নিকরণের প্রস্তাবের বিরুদ্ধে স্লোগান ওঠে মিছিল থেকে। মিছিল শেষ হয় গাঁধী মোড়ে গাঁধী মূর্তির পাদদেশে। মিছিলের নেতৃত্বে ছিলেন কর্মী সংগঠনের নেতা সুভাষ সাহা-সহ অন্যেরা। একই বিষয়ে এ দিন সিপিএম কাঁকসার মলানদিঘিতে প্রায় আধ ঘণ্টা ধরে অবস্থান-বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করে।
যদিও যাবতীয় অভিযোগ অস্বীকার করেছেন বিজেপি ও তৃণমূল নেতৃত্ব। তৃণমূলের জেলার অন্যতম কোঅর্ডিনেটর বিশ্বনাথ পাড়িয়াল বলেন, ‘‘রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে তোলা অভিযোগ ঠিক নয়। সব ক্ষেত্রেই অত্যন্ত সাফল্যের সঙ্গে কাজ করা হচ্ছে।’’ কেন্দ্রীয় সরকারের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ প্রসঙ্গে বিজেপি নেতা অমিতাভ বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রতিক্রিয়া, ‘‘বিরোধীদের কাছে এখন বলার মতো কিছু নেই। তাই মিথ্যা অভিযোগ করে প্রচারে থাকতে চাইছেন।’’