চলছে ঘুড়ি কেনাকাটা। নিজস্ব চিত্র
বর্ধমানের আকাশে আজ ঘুড়ির মেলা। কলকাতায় বিশ্বকর্মা পুজোর সময় ঘুড়ি ওড়ানো হলেও বর্ধমানে মকর সংক্রান্তির দিন ঘুড়ি ওড়ানো হয়। পরপর তিনদিন বর্ধমানে তিনটি এলাকায় ঘুড়ির মেলা বসে। ঘুড়ির মেলার জন্য প্রায় একমাস আগে থেকে শুরু হয় প্রস্তুতি। নানা উপকরণ দিয়ে সুতোয় মাঞ্জা দেওয়া হয়। এখন অবশ্য বাজারে সহজেই মেলে চাইনিজ সুতো। নানা জায়গায় ঘুড়ির দোকান খোলা হয়।
সংক্রান্তির দিন সকাল থেকেই বর্ধমানের চোখ থাকে আকাশে। বাড়ির ছাদে ছাদে ছেলেমেয়েদের ভিড়। একের পর এক ঘুড়ির লড়াইয়ে মেতে ওঠে সকলে। ঘুড়ির নানা কসরত চলতে থাকে। ঘুড়ি কেটে গেলেই আওয়াজ ওঠে 'ভোকাট্টা'। রাজ আমল থেকেই এই ঐতিহ্য চলে আসছে। এখনো বর্ধমান সেই ধারাবাহিকতা বজায় রেখেছে। আগের চেয়ে সংখ্যায় কম হলেও তাই জমজমাট ঘুড়ির লড়াই।
তবে ঘুড়ি ওড়ানো বা ঘুড়ির মেলার চল হয় রাজ আমলে। ইতিহাসবিদ সর্বজিৎ যশ বলেন, ‘‘মহতাব চাঁদের আমলের শেষ দিকে গোটা শহরে ঘুড়ি ওড়ানো শুরু হয়। রাজবাড়িতে আগে থেকেই ঘুড়ি ওড়ানো হত।’’ পাশাপাশি ময়ূরপঙ্খী নিয়ে তিনি বলেন, ‘‘আগে দামোদরের সদরঘাটে ময়ূরপঙ্খী মেলা হতো। দক্ষিণ দামোদর এলাকার বাসিন্দারা গরুরগাড়িকে ময়ূরের মত সাজিয়ে নিয়ে আসতেন মকর সংক্রান্তিতে। দামোদর পাড়ে ময়ূরপঙ্খী গানের লড়াই হতো। মূলত, রাধা কৃষ্ণ নিয়েই গান হতো ময়ূরপঙ্খী মেলায়।’
তবে রাজ আমলের অবলুপ্তির পর সে সব এখন ইতিহাস। তা ছাড়া দেশের অন্যান্য জায়গায় বিশ্বকর্মা পুজোর সময় ঘুড়ি ওড়ানো হয়। কিন্তু একমাত্র বর্ধমানেই মকর সংক্রান্তিতে ঘুড়ি ওড়ানো হয়।
আরও পড়ুন:‘বেআক্কেল’ শীত, ক্ষীণ রসের ধারা, বাজারে কম পড়েছে সোনালি নলেন
আরও পড়ুন: শুধু কৃষক নয়, জনস্বার্থও বিরোধী মোদীর কৃষি আইন, বললেন কাকলি