আসানসোলের কাজী নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়। —নিজস্ব চিত্র।
কাজী নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্মলগ্ন থেকে এখানে র্যাগিং সংক্রান্ত কোনও অভিযোগ সে ভাবে ঘটেনি। তবুও, যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের ঘটনার প্রেক্ষিতে আচার্য সিভি আনন্দ বোসের সঙ্গে বৈঠকের পরে কাজী নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়ে অ্যান্টি-র্যাগিং কমিটিকে নতুন করে সাজানো হচ্ছে বলে জানালেন উপাচার্য দেবাশিস বন্দ্যোপাধ্যায়। মনস্তত্ত্ব বিভাগের বিশেষজ্ঞদের দিয়ে পড়ুয়াদের মানসিক বিকাশ সম্পর্কে সচেতন থাকা ও হস্টেলগুলিতে কড়া নজরদারির বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
যাদবপুরের ঘটনার প্রেক্ষিতে অন্য বিশ্ববিদ্যালয়গুলির কী অবস্থা, তা জানতে চেয়ে উপাচার্যদের সঙ্গে শুক্রবার বৈঠক করেন আচার্য। এর পরেই শনিবার উপাচার্য বলেন, “অতীতে এখানে এ বিষয়ে কিছু ঘটেনি। আমরা তবুও সতর্ক। আচার্য কিছু নির্দেশ দিয়েছেন। সে মতো পদক্ষেপ করা হচ্ছে। র্যাগিং ও অন্য যে কোনও বিষয়ে পড়ুয়া বা অভিভাবকদের কোনও অভিযোগ থাকলে সরাসরি আমার সঙ্গে যোগাযোগ করুন।”
বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা গিয়েছে, এখানেও অ্যান্টি-র্যাগিং কমিটি আছে। সেটির খোলনলচে বদলানো হবে। র্যাগিং ঘটার পরে কমিটি ব্যবস্থা নেবে, এমনটা চাইছেন না কর্তৃপক্ষ। র্যাগিং যাতে না ঘটে, তা নিশ্চিত করতে বিশ্ববিদ্যালয়ের মনস্তত্ত্ব বিভাগের বিশেষজ্ঞদের দিয়ে প্রতিটি বিভাগের পড়ুয়াদের মাসে ন্যূনতম দু’বার কাউন্সেলিং করানো হবে। এ ছাড়া, তৈরি করা হচ্ছে ‘স্ট্রেস ম্যানেজমেন্ট সেল’। সেটিকে অ্যান্টি-র্যাগিং কমিটির সঙ্গে জুড়ে দিয়ে পড়ুয়াদের কাউন্সেলিং করার পাশাপাশি তাঁদের চাপমুক্তকরা হবে।
উপাচার্য জানিয়েছেন, আচার্যের সঙ্গে বৈঠকে মনোবিদেরা তাঁদের পর্যবেক্ষণের কথা জানিয়েছেন। তাঁরা জানাচ্ছেন, সাম্প্রতিক সময়ে পড়ুয়াদের মধ্যে নানা ধরনের চাপ বাড়ছে। এর মধ্যে পরীক্ষা, পরিবারের আর্থিক অবস্থা, প্রতিযোগিতায় টিকে থাকা ও সম্পর্কঘটিত টানাপড়েনের মতো চাপ রয়েছে। এগুলি পড়ুয়াদের মনে প্রভাব ফেলছে। এ সব থেকে পড়ুয়াদের মুক্ত করা হলে র্যাগিংয়ের মতো নানা বিষয় অনেকটাই রোখা যাবে বলে পর্যবেক্ষণ বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্তাদের। পাশাপাশি, হস্টেলগুলিতে নজরদারি, সিসিটিভি-র সংখ্যা বাড়ানো হচ্ছে বলে বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রের খবর। হস্টেল সুপারের দায়িত্ব ও সচেতনতার উপরেও জোর দেওয়া হচ্ছে। বিশেষ অনুমতি ছাড়া বিশ্ববিদ্যালয় ও হস্টেল চত্বরে বহিরাগতদের প্রবেশ কঠোর ভাবে নিষিদ্ধ করা হচ্ছে।