(বাঁ দিকে) মহিলাকে মারধরের ঘটনা । তৃণমূল নেতা গোপাল তিওয়ারি (ডান দিকে)। — নিজস্ব চিত্র।
কালনায় প্রতিবেশী মহিলার বাড়ি ঢুকে মারধরের অভিযোগে গ্রেফতার হওয়া তৃণমূল নেতা গোপাল তিওয়ারির জামিন মঞ্জুর করল আদালত। শনিবার রাতেই তাঁকে গ্রেফতার করেছিল পুলিশ। গোপালের জামিন নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। সূত্রের খবর, পুলিশ গোপালকে নিজেদের হেফাজতে চায়নি। সেই কারণেই নাকি রবিবার আদালতে গোপালের জামিনের বিরোধিতা করেননি সরকারি আইনজীবী। যদিও আইনজীবীর দাবি, জামিনযোগ্য ধারায় মামলা রুজু করা হয়েছিল গোপালের বিরুদ্ধে।
পূর্ব বর্ধমানের কালনার শ্বাসপুরের দেবনাথপুর এলাকার একটি জমিকে কেন্দ্র করে বিবাদের সূত্রপাত হয়েছিল। অভিযোগকারী মহিলার দাবি, তাঁর বাড়ির লাগোয়া জমিতে পাঁচিল তুলে ঘিরে ফেলা হয়। সেই কাজে বাধা দিতে গেলে আক্রান্ত হতে হয় তাঁকে এবং তাঁর পরিবারকে। আক্রান্ত মহিলার কথায়, ‘‘আমরা বলেছিলাম, যাতায়াতের জায়গাটুকু রাখতে। তা নিয়েই ঝামেলা হয়। শুক্রবার গোপাল এবং তাঁর দলবল আমার শাশুড়িকে মারধর করেছিলেন। শনিবার লোকজন নিয়ে বাড়িতে এসে আমাকে এবং আমার বাড়ির অন্যদের মারধর করে। আমাকে থাপ্পড় মারা হয়।’’
ঘটনার ভিডিয়ো সমাজমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ার পর থেকেই বিতর্ক শুরু হয়। সেই ভিডিয়োতে দেখা যাচ্ছে, অভিযোগকারিণীর বাড়িতে ঢুকে এবং তাঁর দলবল মহিলাকে মারধর করছেন। রেহাই পাননি তাঁর পরিবারের সদস্যেরাও। যদিও এই ভিডিয়ো সত্যতা যাচাই করেনি আনন্দবাজার অনলাইন। অভিযুক্ত গোপালের বিরুদ্ধে শনিবার থানায় অভিযোগ দায়ের করেছিলেন আক্রান্ত মহিলা।
গোপাল কালনা শহর তৃণমূলের সাধারণ সম্পাদক। মহিলার দাবি, বাড়ির সামনের জমিটি তাঁদের নামে থাকলেও ব্যাঙ্কে তা বন্ধক দেওয়া ছিল। তৃণমূল নেতা দাবি করেন, ব্যাঙ্ক থেকে ওই জমি তিনি কিনে নিয়েছেন। তবে জমি কেনার ব্যাপারে তাঁরা কিছু জানতে পারেননি বলে দাবি। মারধরের অভিযোগ অস্বীকার করেছেন গোপাল নিজে। তিনি বলেন, ‘‘আমার কেনা জায়গায় আমি পাঁচিল দিয়েছিলাম, সেই পাঁচিল ওরা ভেঙে দিয়েছে।’’ মহিলার অভিযোগ পাওয়ার পরেই রাতে গোপালকে গ্রেফতার করে পুলিশ। তাঁর বিরুদ্ধে ভারতীয় ন্যায় সংহিতার একাধিক ধারায় মামলা রুজু করা হয়েছিল। রবিবার তাঁকে আদালতে হাজির করানো হলে গোপালের হয়ে জামিনের আবেদন করেন তাঁর আইনজীবী। তবে সেই জামিনের বিরোধিতা করেননি সরকারি আইনজীবী।
মারধরের ঘটনা প্রসঙ্গে পূর্ব বর্ধমান জেলা তৃণমূলের মুখপাত্র তথা কালনার বিধায়ক দেবপ্রসাদ বাগ বলেন, ‘‘আইন কারও হাতে তুলে নেওয়া উচিত নয়। ঘটনাটি শুনেছি। পুলিশ তদন্ত করে দেখুক।’’ পুলিশ সূত্রে খবর, গোপাল জামিন পেলেও তদন্ত চলবে।