ধৃত ডাকাতেরা। — নিজস্ব চিত্র।
রাতে ডোমজুড়ের জালান কমপ্লেক্সের এক গুদামের পাহারার দায়িত্বে ছিলেন এক জন মাত্র নিরাপত্তারক্ষী। তাই তাঁকে কব্জা করে ডাকাতি করতে অসুবিধা হয়নি ১০-১২ জনের। গুদামের মধ্যে থাকা দামি জিনিস লুট করে পালিয়েছিলেন তাঁরা। তবে ঘটনার ১২ ঘণ্টা কাটতে না কাটতেই ডাকাতির ঘটনার কিনারা করল হাওড়া সিটি পুলিশ। ডাকাতদলের চার জনকে গ্রেফতার করে তারা। পাশাপাশি উদ্ধার করা হয় চুরি যাওয়া সমস্ত মালপত্র।
পুলিশ সূত্রে খবর, শনিবার গভীর রাতে জালান কমপ্লেক্সের গুদামে হানা দেয় একদল ডাকাত। তখন সেই গুদামে পাহারা দিচ্ছিলেন এক জন নিরাপত্তারক্ষী। তাঁর হাত-মুখ সহজেই বেঁধে ফেলে ডাকাতেরা। তার পর ওই গুদামের দরজা ভেঙে ভেতরে ঢুকে পড়ে তারা। তার পর মজুত থাকা চার টন দামি জিঙ্ক ধাতব বার নিয়ে চম্পট দেয় ডাকাতেরা। এমনকি, ঘটনাস্থল ছাড়ার সময় সিসিটিভি ক্যামেরার ফুটেজ স্টোরেজের যন্ত্র ডিভিআর তুলে নিয়ে যায়।
খবর পেয়ে রাতেই ঘটনাস্থলে যায় ডোমজুড় থানার পুলিশ। ঘটনার তদন্তে নামেন হাওড়া সিটি পুলিশের গোয়েন্দারা। নিরাপত্তারক্ষীর বয়ান রেকর্ড করেন তাঁরা। একই সঙ্গে ওই গুদামের আশপাশের রাস্তার সিসি ক্যামেরার ফুটেজ খতিয়ে দেখেন গোয়েন্দারা। সেই ফুটেজ থেকে ডাকাতদের গাড়ির খোঁজ পান তাঁরা।
পুলিশ জানতে পারে ওই গাড়ির মালিকের নাম অবিনাশ সিংহ। মালিপাঁচঘড়া থানার বাসিন্দা অবিনাশকে জিজ্ঞাসাবাদ করে পুলিশ জানতে পারে সুব্রত সেন ওরফে ছোটকা শনিবার গাড়িটি ভাড়া নিয়েছিলেন। তদন্তে পুলিশ আরও জানতে পারে, ছোটকা এবং তাঁর সঙ্গী বিশালকুমার সাউ এই ডাকাতির পরিকল্পনা করেছিলেন। এ ছাড়াও বিকাশকুমার জয়সওয়াল এবং রাকেশকুমার সাউ নামে দু’জনের নামও উঠে আসে।
পুলিশ জানতে পারে ডাকাতির সময় গাড়ির চালকের আসনে ছিলেন সুব্রত। গাড়িতে মাল তোলার কাজ করেছিলেন বিকাশ। আর লুট করা সমস্ত মাল বিক্রি করা হয় রাকেশ নামে এক ব্যবসায়ীর কাছে। ঘুসুড়িতে তাঁর গুদামে হানা দিয়ে পুলিশ সমস্ত মাল উদ্ধার করে। প্রাথমিক তদন্তে জানা গিয়েছে, এই ডাকাতির ঘটনায় ছ’জনের সরাসরি যোগ রয়েছে। তবে বাকি আর কারা এই ঘটনার সঙ্গে জড়িত, তাঁদের খোঁজে তল্লাশি চালানো হচ্ছে বলে খবর। ধৃতদের বিরুদ্ধে ডাকাতির একাধিক ধারায় মামলা রুজু করে তদন্ত শুরু করেছে ডোমজুড় থানার পুলিশ। গাড়ির মালিক-সহ ধৃত চার জনকে রবিবার হাওড়া আদালতে হাজির করানো হয়।