ফাইল চিত্র।
মাছের বাজার, আনাজের বাজারে ভিড়। চায়ের দোকানেও দল বেঁধে আড্ডা চলছে। বিদ্যুৎ দফতর-সহ নানা জায়গায় বিক্ষোভ দেখাচ্ছে, কর্মসূচি করছে রাজনৈতিক দলগুলি। কিন্তু স্বাস্থ্য-বিধি ভাঙার অজস্র উদাহরণ দেখা গেলেও করোনা-আক্রান্তের তেমন সন্ধান নেই কালনা পুর এলাকায়। স্বাস্থ্য দফতরের দাবি, করোনাভাইরাস পরীক্ষা করাতে নমুনা দেওয়ার প্রবণতা এ শহরের অনেকটাই কম। পরীক্ষা সে ভাবে না হওয়াই জানা যাচ্ছে না সংক্রমণ ছড়িয়েছে ঠিক কতটা।
স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, রবিবার পর্যন্ত কালনা মহকুমা হাসপাতালে ৭,৩১২ জনের লালারসের নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে। সম্প্রতি চালু হওয়া ‘অ্যান্টিজেন টেস্ট’ হয়েছে ৭৩৭ জনের। কিন্তু স্বাস্থ্য দফতর এবং প্রশাসনিক কর্তাদের চিন্তায় ফেলেছে পরীক্ষার হার। ২১ অগস্ট মাত্র চার জনের পরীক্ষা হয়েছে। সোমবার পরীক্ষা বাড়াতে উদ্যোগী হন প্রশাসনের কর্তারা। মহকুমাশাসকের কার্যালয়ের সঙ্গে যুক্ত আধিকারিক, কর্মী, দুর্যোগ মোকাবিলা দলের সদস্য মিলিয়ে এ দিন ৪৩ জন লালারসের নমুনা দেন। ধারাবাহিক ভাবে পরীক্ষার সংখ্যা বাড়াতে নানা জায়গায় ফোনও করেন কর্তারা।
কেন পরীক্ষায় ‘অনীহা’? পুরসভার দাবি, পরীক্ষা করাতে একটা ভীতি কাজ করছে অনেকের। তাঁদের ধারণা, ‘পজ়িটিভ’ রিপোর্ট এলে সামাজিক হয়রানির শিকার হতে হবে। বাড়ি ছেড়ে ‘সেফ হাউসে’ গিয়ে থাকতে হবে। সে কারণেই হাসপাতালমুখো হচ্ছেন না তাঁরা। এক পুর-কর্তার কথায়, ‘‘সংক্রমিত লোকজনকে পৃথক করতে না পারলে সমস্যা মিটবে না। উপসর্গহীনেরা কতটা সংক্রমণ ছড়াচ্ছেন সেটাও বোঝা যাচ্ছে না।’’ পুরপ্রশাসক দেবপ্রসাদ বাগ বলেন, ‘‘পরীক্ষার হার বাড়ানোর সবরকম চেষ্টা করা হচ্ছে।’’
কালনা মহকুমা হাসপাতালের সুপার কৃষ্ণচন্দ্র বরাই বলেন, ‘‘জ্বর, সর্দি, কাশির মতো উপসর্গ থাকলেই আমরা হাসপাতালে এসে পরীক্ষার কথা বলছি। পরিকাঠামোর অভাব নেই। হাসপাতালে ভর্তি রোগীদেরও আমরা নিয়মিত পরীক্ষা করছি।’’ এর সঙ্গেই স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে পরীক্ষা করানোয় অনীহা রয়েছে মেনে নিয়েছেন তিনি। তাঁর দাবি, বিষয়টি নিয়ে চিন্তাভাবনা প্রয়োজন।