Kolkata Doctor Rape and Murder

নম্বরে ‘কারচুপি’, থানাতেও নালিশ

একই সঙ্গে ‘অভব্য ও অপমানজনক’ আচরণের অভিযোগ তুলে বর্ধমান থানায় সাত জনের নামে লিখিত অভিযোগপত্র জমা দিয়েছেন আন্দোলনকারীরা।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

বর্ধমান শেষ আপডেট: ০৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ০৮:১৯
Share:

পরীক্ষার নম্বরেও ‘কারচুপি’ হয়েছে দাবি করে আন্দোলনকারী জুনিয়র চিকিৎসক ও স্নাতকস্তরের পড়ুয়ারা বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ কর্তৃপক্ষকে চিঠি দিলেন। চিঠির প্রতিলিপি পাঠানো হয়েছে স্বাস্থ্য বিশ্ববিদ্যালয়, স্বাস্থ্যভবন, কেন্দ্রের স্বাস্থ্য ও পরিকল্পনা মন্ত্রক ও স্বাস্থ্য কমিশনের কাছে। চিঠিতে নির্দিষ্ট করে পাঁচ জনের নামে অভিযোগ রয়েছে বলে খবর। নতুন করে খাতা দেখার দাবিও তোলা হয়েছে।

Advertisement

একই সঙ্গে ‘অভব্য ও অপমানজনক’ আচরণের অভিযোগ তুলে বর্ধমান থানায় সাত জনের নামে লিখিত অভিযোগপত্র জমা দিয়েছেন আন্দোলনকারীরা। বর্ধমান থানা জানিয়েছে, চিঠি জমা পড়েছে। তদন্ত শুরু হয়েছে। আন্দোলনকারীদের দাবি, অভিযুক্তেরা প্রত্যেকেই ‘বর্ধমান শাখা’র সদস্য। দুর্নীতিতে নাম জড়িয়ে যাওয়া বর্ধমানের বাসিন্দা অভীক দে-র ঘনিষ্ঠ তাঁরা। আন্দোলনকারী এক পিজিটি-র দাবি, “প্রতিটি বিষয়ে অনার্স-সহ পাশ করা বেশ কঠিন। কিন্তু পাঁচ জন ‘গ্র্যান্ড অনার্স’ নিয়ে এমবিবিএস হয়েছেন। তাঁরা এখন ইন্টার্ন। ঘটনাচক্রে, তাঁরা প্রত্যেকেই ‘অভীক-ঘনিষ্ঠ’। সকলেই জানেন, পরীক্ষা ব্যবস্থায় অভীকের হাত বিস্তৃত ছিল। সে কারণে আমাদের ধারণা, বর্ধমান মেডিক্যালে পরীক্ষাতেও কারচুপি হয়েছে।” আন্দোলনকারীদের দাবি, স্বাস্থ্য বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পাঠানো প্রশ্নপত্র ‘বর্ধমান শাখার’ সদস্যদের কাছে পৌঁছে যেত। পরীক্ষককেও ‘হাতে’ নিয়ে নিতেন তাঁরা। সিসি ক্যামেরার নজরদারির বাইরে থেকে যেতেন ‘বর্ধমান শাখার’ সদস্যেরা।

বর্ধমান মেডিক্যালের এক হাউস স্টাফ বলেন, “অনার্স পেতে গেলে ৭৫% নম্বর পেতে হয়। এমবিবিএসের শেষ বছরে মেডিসিন, শল্য, স্ত্রী রোগ ও প্রসূতি এবং শিশুরোগ বিষয়ে পরীক্ষা হয়। চারটি বিষয়ই খুব কঠিন। সেখানে আর কেউ অনার্স পেলেন না, স্রেফ অভীক-ঘনিষ্ঠ কিংবা বর্ধমান শাখার হয়ে ‘দাদাগিরি’ করার সুবাদে ওই পাঁচ জন চারটি বিষয়েই অনার্স পেয়ে গেলেন!”

Advertisement

অধ্যক্ষের কাছে জমা দেওয়া লিখিত অভিযোগে আন্দোলনকারীদের দাবি, বহিরাগত সংস্থার মাধ্যমে খাতা ফের পরীক্ষা করে দেখা দরকার। ওই নম্বর পরীক্ষার্থীরা নিজেদের ক্ষমতায় পেয়েছেন, না কি একটি গোষ্ঠীর সঙ্গে ঘনিষ্ঠ থাকার সুবাদে, তা জানা দরকার। চিঠিতে অভিযোগ করা হয়েছে, জুনিয়রদের ‘শাসানি’ দেওয়া হয়েছে। পরীক্ষার ফল আটকে দেওয়া, ফেল করিয়ে দেওয়া, রেজিস্ট্রেশন আটকে দেওয়ার কথা বলে ভয় দেখানো হয়েছে।

মেডিক্যাল কলেজ কাউন্সিলের এক সদস্য বলেন, “চিঠি এসেছে। কলেজ কাউন্সিলে আলোচনা হয়েছে। অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে বিশ্ববিদ্যালয়ে রিপোর্ট দেওয়া হবে।”

বর্ধমান থানায় যাঁদের বিরুদ্ধে অভিযোগ জানানো হয়েছে, তাঁদের মধ্যে রয়েছেন প্রাক্তনী, হাউস স্টাফ, ইন্টার্ন-রা। আন্দোলনকারীদের দাবি, এত দিন নানা পন্থায় মিথ্যা অভিযোগ করা হচ্ছিল। তাতে তাঁদের ব্যক্তিগত ও সামাজিক সুনাম নষ্ট হয়েছে। কর্মক্ষেত্রেও অসুবিধা তৈরি করা হচ্ছিল। গত কয়েক দিনের টানা আন্দোলন ওই সাত জনের মুখোশ খুলে দিয়েছে। তাঁরা প্রকাশ্যে মিথ্যা অভিযোগ করেছেন, যা অপমানজনক। এক আন্দোলনকারী বলেন, “ওই সাত জনই ‘হুমকি-শাসানি’ দিয়ে আন্দোলন বন্ধ করতে চেয়েছিলেন। তাতে পিজিটি, হবু চিকিৎসকেরা অপমানিত বোধ করেছেন।”

কলেজ কর্তৃপক্ষের দাবি, ওই সাত জনের মধ্যে এক জনের কলেজে ঢোকা নিষিদ্ধ করা হয়েছে। সবার বিরুদ্ধেই তদন্তের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement