Prachesta Scheme

প্রচেষ্টার নির্দেশিকা বদল, ক্ষুব্ধ কর্মহীনেরা

প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, এই প্রকল্পে মাসে এক হাজার টাকা করে ভাতা দেওয়ার কথা জানানো হয়েছে।

Advertisement

নিজস্ব প্রতিবেদন

শেষ আপডেট: ২৮ এপ্রিল ২০২০ ০২:১৬
Share:

আপাতত ফর্ম নয়। বোঝাচ্ছেন নিরাপত্তারক্ষী। দুর্গাপুরে। নিজস্ব চিত্র

‘লকডাউন’-এর জেরে কাজ হারানো মানুষের জন্য রাজ্য সরকার ‘প্রচেষ্টা’ প্রকল্প নিয়ে এসেছে।

Advertisement

বিরোধীদের দাবি, সরকারি ঘোষণায় ১৫ এপ্রিল থেকে আবেদনপত্র জমা নেওয়ার কথা বলা হলেও, দুর্গাপুরে সে প্রকল্পের আবেদন কেউ জমা দিতে পারছেন না। মহকুমাশাসক অনির্বাণ কোলে ফোন ধরেননি। তবে ফর্ম নেওয়ার কোনও নির্দেশিকা আসেনি বলে তিনি এসএমএস করে জানিয়েছেন। কিন্তু তাঁর দফতর সূত্রে জানানো হয়েছে, নির্দিষ্ট সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখা নিশ্চিত করতে এতদিন পর্যন্ত একটি ফর্মও জমা নেওয়া হয়নি।

প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, এই প্রকল্পে মাসে এক হাজার টাকা করে ভাতা দেওয়ার কথা জানানো হয়েছে। রাজ্যের স্থায়ী বাসিন্দা, ‘লকডাউন’-এর জেরে রোজগার বন্ধ হয়ে গিয়েছে, পরিবারের একমাত্র উপার্জনকারী এবং রাজ্য সরকারের অন্য কোনও ভাতা পান না, এমন মানুষজনই এই প্রকল্পে আবেদন করতে পারবেন। একটি পরিবারের এক জনই আবেদন করার সুযোগ পাবেন। বিরোধীদের দাবি, ঘোষণায় বলা হয়, ওয়েবসাইট থেকে ফর্ম ডাউনলোড করে তা পূরণ করে বাসিন্দারা মহকুমাশাসকের কার্যালয়ে এবং গ্রামীণ এলাকায় ব্লক অফিসে জমা দেবেন। ১৫ এপ্রিল থেকে ১৫ মে পর্যন্ত আবেদন জমা দেওয়া যাবে।

Advertisement

দুর্গাপুরের কাজ হারানো মানুষজনের অভিযোগ, গত কয়েকদিন ধরে মহকুমাশাসকের কার্যালয়ে গিয়ে ফর্ম জমা না দিয়ে তাঁদের ফিরে আসতে হয়েছে। বৃহস্পতি মাহাতো নামে ব্যক্তি বলেন, ‘‘আবেদনপত্র পূরণ করে বসে আছি। কিন্তু জমা দিতে পারছি না। মহকুমাশাসকের কার্যালয়ে জমা নেওয়া হবে বলে জানানো হয়েছিল। কিন্তু সেখানে গিয়ে ফিরে আসতে হয়েছে।’’ অটোচালক অসীম রুইদাস বলেন, ‘‘রোজগার একেবারে বন্ধ। এই অবস্থায় মাসে হাজার টাকা করে পেলে সুবিধা হত। কিন্তু আবেদনপত্রই জমা করতে পারছি না।’’

দুর্গাপুরের মহকুমাশাসকের কার্যালয়ের সামনে সোমবার গিয়ে দেখা গিয়েছে, অনেকেই ফর্ম হাতে হাজির হয়েছেন। তবে পুলিশের তরফে তাঁদের ভিড় না করে চলে যেতে বলা হয়। একই চিত্র অণ্ডাল, জামুড়িয়া, রানিগঞ্জ, সালানপুর, বারাবনি প্রভৃতি এলাকায়ও। তবে এ দিন সকালের দিকে পাণ্ডবেশ্বর ব্লক কার্যালয়ে আবেদনপত্র জমা নেওয়া শুরু হয়েছিল। পরের দিকে এই প্রক্রিয়াও বন্ধ হয়ে যায়। পাণ্ডবেশ্বর ব্লক সূত্রে জানা গিয়েছে, আগে যেমন নির্দেশিকা এসেছিল, সেইমতো কাজ শুরু হয়েছিল। দুপুরের দিকে আপাতত বন্ধ রাখার নোটিস আসে। এ নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন সিপিএমের জেলা সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য পঙ্কজ রায় সরকার, রানিগঞ্জের সিপিএম বিধায়ক রুনু দত্ত।

পঙ্কজবাবু বলেন, ‘‘কংগ্রেস ও বাম পরিষদীয় দলের তরফে ২৫ এপ্রিল চিঠি দিয়ে মুখ্যমন্ত্রীকে চিঠি দিয়ে জানানো হয়, নির্দিষ্ট সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখা নিশ্চিত করতে এই প্রকল্পে আবেদন অনলাইনে ও অ্যাপের মাধ্যমে করার ব্যবস্থা করা হোক। এখন কয়েকহাজার কাজ হারানো মানুষ ফর্ম পূরণ করে বসে আছেন। অথচ জমা দিতে পারছেন না।’’ দুর্গাপুরের তৃণমূল নেতা উত্তম মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘কাজ হারানো সব মানুষ যাতে এই প্রকল্পের সুবিধা পান, সে জন্য তা নিশ্চিত করতে সরকার ব্যবস্থা নেবে।’’

এ প্রসঙ্গে জেলাশাসক পূর্ণেন্দু মাজি বলেন, ‘‘প্রচেষ্টায় নাম নথিভুক্ত করতে প্রথমে একটি নির্দেশিকা এসেছিল। সোমবার অর্থ দফতর থেকে ফের জানানো হয়, এই প্রকল্পে নাম নথিভুক্ত করতে বিডিও বা এসডিও অফিসে মানুষজন এলে সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখা যাবে না। তাই পুরো প্রক্রিয়া অনলাইনে করা হবে। পরবর্তী নির্দেশিকা এলে ,পদক্ষেপ করা হবে।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement