টোটোর মালিককেই চালক হতে হবে।
টোটোর মালিককেই চালক হতে হবে। রেজিস্ট্রেশন নম্বরের সঙ্গেই কোন রুটে টোটো চলবে, তা জানিয়ে দেবে পরিবহণ দফতর। টোটোর রেজিস্ট্রেশন পেতে গেলে চালকের লাইসেন্স থাকাও বাধ্যতামূলক। এমনই একগুচ্ছ সিদ্ধান্ত নেওয়া হল ‘পথ সুরক্ষা কমিটি’র বৈঠকে। বৃহস্পতিবার কয়েক ঘণ্টা ধরে চলা এই বৈঠকে হাজির ছিলেন জেলাশাসক বিজয় ভারতী, পুলিশ সুপার ভাস্কর মুখোপাধ্যায় ও পরিবহণ দফতরের আধিকারিকেরা।
বর্ধমানে টোটোর দৌরাত্ম্য নিয়ে অভিযোগ বহু দিনের। বাস চালকেরাও রাজ্য সড়কের উপর দিয়ে টোটো চলাচল করায় তাঁদের যাত্রী কমছে বলে বারবার অভিযোগ করেছেন। দিন-দিন টোটোর সংখ্যা বাড়ায় রুট নির্দিষ্ট করে দেওয়ার দাবি উঠছে সেই ২০১৭ সাল থেকে। সেই সময় বর্ধমান পুরসভা ৭৩টি রুট তৈরি করে আঞ্চলিক পরিবহণ দফতরে জমা দিয়েছিল। মাস খানেক আগে আরটিও এবং পুলিশ যৌথ অভিযান করে আরও ১৮টি রুট বাড়ানোর প্রয়োজন রয়েছে বলে জানায়।
গোটা জেলায় প্রায় ২৫ হাজার টোটো চলাচল করে। এর মধ্যে ‘রেজিস্ট্রেশন’ রয়েছে সাড়ে তিন হাজার টোটোর। জেলাশাসক বলেন, “এক মাসের মধ্যে বাকি টোটোর রেজিস্ট্রেশন করাতে হবে। আবেদন করার এক সপ্তাহের মধ্যে রেজিস্ট্রেশন নম্বর দেওয়া হবে। রেজিস্ট্রেশন না থাকলে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’ ‘রেজিস্ট্রেশন’-এর জন্যে পরিবহণ দফতরে কাউন্টার খোলা হবে বলেও জানান তিনি।
বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয়েছে, পুরসভা ও পঞ্চায়েত স্থানীয় প্রশাসনের সঙ্গে আলোচনা করে ‘রুট’ তৈরি করবে। রুটের তালিকা জেলা পরিবহণ দফতরে পাঠাতে হবে। ‘রেজিস্ট্রেশন’ নম্বর দেওয়ার সঙ্গেই ‘রুট’ও দিয়ে দেবে পরিবহণ দফতর। বৈঠকে হাজির এক কর্তার কথায়, “কোন রুটে চালক টোটো চালাতে চান, সেটা লিখিত ভাবে জানালে বিবেচনা করে দেখা হবে। চালকের ঠিকানা দেখে কাছাকাছি রুট দেওয়া হবে।’’ এ ছাড়া, যাঁর নামে রেজিস্ট্রেশন হবে, অর্থাৎ মালিক ও চালক একই লোক হতে হবে বলেও জানানো হয়েছে।
পুলিশ সুপার ভাস্কর মুখোপাধ্যায় বলেন, “গাড়ির রেজিস্ট্রেশন যাঁর নামে থাকবে তাঁকে টোটোর চালক হতে হবে। যৌথ অভিযান চালানোর সময় রেজিস্ট্রেশন ও চালকের লাইসেন্স এক ব্যক্তি নামে হলে তবেই টোটো চালাতে দেব। না হলে আইন মোতাবেক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’
শহর ও পঞ্চায়েত এলাকায় টোটো চলাচল নিয়ে অশান্তি লেগেই থাকে। সেই সমস্যা মেটাতে পুরসভা, পঞ্চায়েত ও মিশ্র এলাকার জন্যে টোটোর গায়ে তিন রকম ‘স্টিকার’ লাগানোর প্রস্তাব দিয়েছেন ভাস্করবাবু। তাঁর কথায়, “এর ফলে পুর এলাকার টোটো পঞ্চায়েত এলাকায় ঢুকতে পারবে না। উল্টোটাও হবে। এতে টোটো চলাচল অনেকটাই নিয়ন্ত্রণ করা যাবে।’’
টোটোর জেরে যানজট নিয়েও আলোচনা হয়েছে এ দিন। কর্তাদের দাবি, বিসি রোডের কার্জন গেট থেকে রানিগঞ্জ বাজার পর্যন্ত রাস্তায় যানজট অনেকটাই কমানো গিয়েছে। বীরহাটা থেকে তেলিপুকুর, খোসবাগান ও বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালের সামনের রাস্তা থেকেও যানজট কমাতে জেলা পুলিশের বিশেষ পরিকল্পনা রয়েছে।