প্রতীকী ছবি।
হাসপাতালের ভিতরে মহিলার সঙ্গে ‘আপত্তিকর’ অবস্থায় ডেপুটি সুপার, ‘সোশ্যাল মিডিয়া’য় এমন দু’টি ‘সিসিটিভি ফুটেজ’-এর (সত্যতা যাচাই করেনি আনন্দবাজার) অংশ ছড়িয়ে পড়ার ঘটনা নিয়ে তদন্ত শুরু করল স্বাস্থ্য দফতর। মঙ্গলবার কাটোয়া মহকুমা হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ও প্রশাসন এ নিয়ে বৈঠক করে। হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই ডেপুটি সুপার অনন্য ধরকে এ দিন সকালেই অসুস্থ অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছে।
পূর্ব বর্ধমানের মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক (সিএমওএইচ) প্রণব রায় এ দিন বলেন, ‘‘হাসপাতাল সুপারের কাছে এ বিষয়ে রিপোর্ট চাওয়া হয়েছে। বিভাগীয় তদন্ত হবে।’’ জেলাশাসক বিজয় ভারতীর বক্তব্য, ‘‘কাটোয়া হাসপাতালের ‘ভাইরাল’ হওয়া ভিডিয়োটি নিয়ে তিন সদস্যের কমিটি তদন্ত করবে। রিপোর্ট আসার পরে, যথাযথ পদক্ষেপ করা হবে।’’
কাটোয়া মহকুমা হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, সম্প্রতি ‘সোশ্যাল মিডিয়া’য় ছড়িয়ে পড়ে ১ মিনিট ৮ সেকেন্ড ও ৫৩ সেকেন্ডের দু’টি ‘ভিডিয়ো ফুটেজ’। তাতে বছর তেতাল্লিশের অনন্যবাবুর সঙ্গে এক মহিলাকে ‘আপত্তিকর’ অবস্থায় দেখা গিয়েছে। দু’জনেরই শরীরে শীতবস্ত্র থাকায় ভিডিয়ো দু’টি পুরনো বলে মনে করছেন হাসপাতালের কর্তারা। মহিলার পরিচয়ও খতিয়ে দেখা হচ্ছে বলে তাঁরা জানান।
মঙ্গলবার দুপুরে বিষয়টি নিয়ে বৈঠকে বসেন কাটোয়া পুরসভার প্রশাসক তথা তৃণমূল বিধায়ক রবীন্দ্রনাথ চট্টোপাধ্যায়, হাসপাতালের সুপার রতন শাসমল এবং মহকুমাশাসক (কাটোয়) প্রশান্তরাজ শুক্ল। পরে মহকুমাশাসক বলেন, ‘‘বিষয়টি নিয়ে হাসপাতাল সুপারকে তদন্ত করতে বলা হয়েছে।’’ হাসপাতালের সুপার রতন শাসমল বলেন, ‘‘ভিডিয়োটি দেখে মনে হয়েছে, সেটি হাসপাতালের একতলার। বিষয়টি জানার পরে, সোমবার রাতেই ডেপুটি সুপারের সঙ্গে ফোনে যোগাযোগ করেছিলাম। তিনি আমাকে জানান, বিষয়টি তাঁর অজানা, সকালে ভিডিয়ো দেখে বলতে পারবেন। কিন্তু সকালে অসুস্থতার জন্য হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। পুরো ঘটনাটি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি।’’
হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, বছর ছ’য়েক আগে হাসপাতালে প্রতিবন্ধী শংসাপত্র দেওয়ার ঘরে এক মহিলার সঙ্গে অশালীন আচরণের অভিযোগ উঠেছিল ডেপুটি সুপার অনন্যবাবুর বিরুদ্ধে। মহিলার স্বামী তাঁর উপরে চড়াও হয়েছিলেন বলেও অভিযোগ। পরে পুলিশের মধ্যস্থতায় বিষয়টি মিটে যায় বলে দাবি হাসপাতালের চিকিৎসক থেকে স্বাস্থ্যকর্মীদের একাংশের।
হাসপাতালের রোগীকল্যাণ সমিতির সদস্য তথা বিধায়ক রবীন্দ্রনাথবাবু এ দিন দাবি করেন, ‘‘এর আগেও হাসপাতালে প্রতিবন্ধী শংসাপত্র নিতে আসা এক মহিলার সঙ্গে অশালীন আচরণের মৌখিক অভিযোগ হয়েছিল ডেপুটি সুপারের বিরুদ্ধে। এক জন সরকারি আধিকারিক হাসপাতালের মধ্যেই এমন কাজ করছেন, তা ভিডিয়োয় দেখা গিয়েছে। এ নিয়ে তদন্ত হবে। সত্য প্রমাণ হলে ওঁকে বরখাস্ত করা উচিত।’’
হাসপাতাল সূত্রে জানায় যায়, অনন্যবাবু এখন এইচডিইউ-তে ভর্তি রয়েছেন। তাঁর অবস্থা স্থিতিশীল। অনন্যবাবুর পরিবারের কেউ গোটা বিষয়টি নিয়ে কোনও মন্তব্য করতে চাননি। হাসপাতালের ‘সিসিটিভি ফুটেজ’ কী ভাবে ‘সোশ্যাল মিডিয়া’য় ছড়িয়ে পড়ল, সে নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। যদিও এ বিষয়ে এ দিন হাসপাতালের কর্তারা কেউ কিছু বলতে চাননি।