স্মারকলিপি জমা দিচ্ছেন বিক্ষুব্ধ কাউন্সিলরেরা। নিজস্ব চিত্র
দলে গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব চলবে না জানিয়ে কড়া বার্তা দিয়েছেন তৃণমূল নেত্রী তথা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কিন্তু তৃণমূল সূত্রের দাবি, পূর্ব বর্ধমানের কাটোয়া পুরসভার চলতি বোর্ডের শেষ বৈঠকেও প্রকাশ্যে এসেছে ‘দ্বন্দ্ব’।
সোমবারের বৈঠকে হাজির হননি দলের চার কাউন্সিলর। পুরসভায় গিয়ে কার্যনির্বাহী আধিকারিকের কাছে পুরপ্রধানের বিরুদ্ধে একাধিক লিখিত অভিযোগ জানিয়ে স্মারকলিপিও দেন তাঁরা। অভিযোগ জমা দেন মহকুমাশাসকের কাছেও। ‘লকডাউন’-এ মানুষের জন্য কাজ না করে তৃণমূলের নেতারা নিজেদের মধ্যেই লড়ছেন বলে কটাক্ষ করেছেন বিরোধীরাও।
এ দিন বেলা ১১টা নাগাদ ওই বৈঠক শুরু হয়। ‘বিক্ষুব্ধ’ তিন কাউন্সিলর ভাস্কর মণ্ডল, প্রণব দত্ত, শ্যামল ঠাকুরেরা পুরসভার সামনে দাঁড়িয়ে অভিযোগ করেন, ‘‘পুরপ্রধান প্রতিটি কাজে আমাদের সঙ্গে বিমাতৃসুলভ আচরণ করেন। আমাদের কোনও কথা শোনা হয় না। তাই, বোর্ড মিটিংয়ে যাওয়া আগেই ছেড়ে দিয়েছি। দুর্নীতির প্রতিবাদে স্মারকলিপিও দিয়েছি।’’ আর এক কাউন্সিলর তথা দলের শহর সভাপতি অমর রামেরও দাবি, ‘‘দলের পুরসভা হলেও আমরা ন্যূনতম সম্মান পাই না। আমাদের চার কাউন্সিলরকে অন্ধকারে রেখেই নানা কাজ করা হয়। পুরপ্রধান কর্মী নিয়োগ, ঠিকাদারদের কাজ পাইয়ে দেওয়া, নানা প্রকল্পে দুর্নীতি করেছেন। করোনাভাইরাস মোকাবিলা নিয়েও আমাদের কিছু জানানো হয়নি।’’ তাঁর দাবি, ‘‘দলের প্রতি আমাদের ভরসা আছে বলেই নেতৃত্বকে সব জানিয়েছি। প্রশাসনকেও লিখিত ভাবে সব জানানো হয়েছে।’’
যদিও পুরপ্রধান রবীন্দ্রনাথ চট্টোপাধ্যায়ের দাবি, দলের কাউন্সিলর হয়েও ওঁরা কোনও বোর্ড মিটিংয়েই আসেন না। তিনি বলেন, ‘‘আমার বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ ভিত্তিহীন। আইন ও শৃঙ্খলার বাইরে গিয়ে আমি কোনও দিনই কোনও কাজ করিনি।’’
২০১৫ সালে কাটোয়া পুরবোর্ড কংগ্রেসের হাত থেকে তৃণমূলের দখলে যায়। প্রথমে অমর রাম পুরপ্রধান হলেও, রবিবাবু দলে যোগ দেওয়ার পরে পরিস্থিতি বদলায়। অনাস্থা ডেকে বোর্ড ভেঙে নতুন পুরপ্রধান হন রবিবাবু। তৃণমূল অন্দরের খবর, দু’জনের দ্বন্দ্বও শুরু তখন থেকেই।
তার পরে পুরসভার একাধিক প্রকল্প, ক্লাবঘর তৈরি নিয়ে দু’জনের মতান্তর হয়েছে। বারবার দলের উপরতলা থেকে বার্তাও দেওয়া হয়েছে দ্বন্দ্ব মিটিয়ে নেওয়ার। তার পরেও একাধিক বার পুরসভার কাজে দুর্নীতির অভিযোগ তুলে ধর্নায় বসেছেন অমরবাবুরা।
কাটোয়ার বিজেপি নেতা অনিল দত্তের দাবি, ‘‘এত দিন আমরা দুর্নীতির অভিযোগ করতাম। এখন তৃণমূল নিজেই দুর্নীতির কথা বলে প্রমাণ দিচ্ছে দুর্নীতি হয়েছে।’’ পুরসভার কার্যনিবার্হী আধিকারিক তাপস ভট্টাচার্য বলেন, ‘‘চার কাউন্সিলরের লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। বিষয়টি খতিয়ে দেখা হবে।’’
(অভূতপূর্ব পরিস্থিতি। স্বভাবতই আপনি নানান ঘটনার সাক্ষী। শেয়ার করুন আমাদের। ঘটনার বিবরণ, ছবি, ভিডিয়ো আমাদের ইমেলে পাঠিয়ে দিন, feedback@abpdigital.in ঠিকানায়। কোন এলাকা, কোন দিন, কোন সময়ের ঘটনা তা জানাতে ভুলবেন না। আপনার নাম এবং ফোন নম্বর অবশ্যই দেবেন। আপনার পাঠানো খবরটি বিবেচিত হলে তা প্রকাশ করা হবে আমাদের ওয়েবসাইটে।)