পাত-পেড়ে: মঙ্গলবার নতুনডাঙা হাইস্কুলে। নিজস্ব চিত্র
বেশির ভাগ পড়ুয়াই আসে অর্থনৈতিক ভাবে পিছিয়ে পড়া পরিবার থেকে। শিক্ষক দিবসের দুপুরে স্কুলে পড়ুয়াদের জন্য ইলিশ মাছ-ভাতের ব্যবস্থা করলেন শিক্ষক-শিক্ষিকারা। দুর্গাপুর-ফরিদপুর ব্লকের নতুনডাঙা হাইস্কুলে মিড-ডে মিলের আওতায় না থাকা পড়ুয়াদেরও এ দিন পাত পেড়ে খাওয়ার ব্যবস্থা করেন তাঁরা। ভাত, ডাল, তরকারির সঙ্গে সর্ষে ইলিশ পেয়ে মুখে হাসি পড়ুয়াদের।
স্কুলে মোট পড়ুয়া ১০৯৭ জন। তার মধ্যে মিড-ডে মিলের আওতায় রয়েছে পঞ্চম থেকে অষ্টম শ্রেণির প্রায় ৬০০ জন পড়ুয়া। মঙ্গলবার দুপুরে অবশ্য পঞ্চম থেকে দ্বাদশ শ্রেণির সব পড়ুয়ার জন্য রান্নার ব্যবস্থা হয়। স্কুল সূত্রে জানা গিয়েছে, এ দিন প্রায় ৮০০ পড়ুয়া হাজির ছিল। মিড-ডে মিলের আওতায় থাকা পড়ুয়াদের জন্য ইলিশ ও বাকিদের ইলিশ-সহ খাওয়ার পুরো খরচই বহন করেছেন স্কুলের ২৩ জন শিক্ষক।
প্রধান শিক্ষক সন্তোষ চট্টরাজ জানান, শিক্ষক দিবসে পড়ুয়ারা নানা ভাবে শিক্ষকদের সম্মান জানায়। শিক্ষকেরা তাদের মিষ্টি খাওয়ান। এ বার একটু অন্য ভাবে পালনের পরিকল্পনা করেন শিক্ষকেরা। স্কুলের সব পড়ুয়াকে নিয়ে সবাই মিলে পাত পেড়ে খাওয়ার ব্যবস্থা হবে বলে ঠিক হয়। তিনি জানান, স্কুলের অনেকেই প্রথম প্রজন্মের পড়ুয়া। তারা আসে প্রত্যন্ত গ্রাম থেকে। অনেকেরই বাড়িতে দিন আনি দিন খাই পরিস্থিতি। আবার, আর্থিক সঙ্গতি থাকলেও ইলিশ মেলে না স্থানীয় বাজারে। সম্প্রতি ইলিশের দাম অনেকটা কমেছে। তাই এ দিন দুপুরে পড়ুয়াদের ইলিশ খাওয়ানোর পরিকল্পনা হয়।
সন্তোষবাবু বলেন, ‘‘পঞ্চম থেকে অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত মিডে-ডে মিল বাধ্যতামূলক। তাদের সঙ্গে বাকিদেরও দুপুরের খাওয়ার ব্যবস্থা করা হয়। সবার পাতে ইলিশ।’’ পড়ুয়া সৈকত মুখোপাধ্যায়, নেহা দেওয়াসিরা বলে, ‘‘ভাবতেই পারিনি দুপুরে স্কুলে ইলিশ খাওয়ানো হবে!’’ নবম শ্রেণির অর্ণব রায়, পাপিয়া ঘোষেরা বলে, ‘‘শিক্ষক দিবসের অনুষ্ঠানে এসে ইলিশ-ভাত খাব ভাবিনি! পেট পুরে খেয়েছি।’’