বাঁ দিকে, ৬০ নম্বর জাতীয় সড়কে রানিগঞ্জের শিশুবাগান এলাকার এই অংশেই গর্ত। ডান দিকে, এই ‘আর্চ ড্রেন’-এর কারণেই বিপত্তি বলে অনুমান। নিজস্ব চিত্র
পাঁচ দিনের মধ্যে ফের একই জায়গায় ধস নামল ৬০ নম্বর জাতীয় সড়কে। শনিবার জাতীয় সড়কের ধারে পশ্চিম বর্ধমানের রানিগঞ্জের শিশুবাগান মোড়ে কাজী নজরুল ইসলাম মূর্তির কাছে ঘটনাটি ঘটে। স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, রাস্তার একাংশে পিচ ও মাটি ধসে গিয়েছে।
এলাকাবাসী জানান, এ দিন ভোরে দেখা যায়, প্রায় চার ফুট চওড়া এবং প্রায় বারো ফুট লম্বা এলাকা জুড়ে সড়কের ধারে গর্ত তৈরি হয়েছে। ঘটনাচক্রে, রাস্তার ওই অংশেই গত ৯ জুন প্রায় পাঁচ ফুট চওড়া ও দশ ফুট লম্বা এলাকা জুড়ে পিচ ও মাটি ধসে গর্ত তৈরি হয়েছিল। জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষ মাটি ও বালি ভরাটও করেছিলেন।
আসানসোল পুরসভার মেয়র পারিষদ (জল) পূর্ণশশী রায় এ দিন ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। তিনি জানান, ইংরেজ আমলে ওই এলাকায় মাটির অনেকটা নীচে একটি ‘আর্চ ড্রেন’ (গোলাকার ইটের তৈরি নালা) তৈরি করা হয়। দু’টি সংযোগকারী নর্দমা ‘আর্চ ড্রেন’-এ মিশেছে। ‘আর্চ ড্রেন’টি আড়াআড়ি ভাবে রাস্তার তলা দিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। পরে সেটি প্রায় ৫০০ মিটার দূরে একটি পরিত্যক্ত খোলামুখ খনিতে মিশেছে।
পুরসভার ইঞ্জিনিয়ার ও এলাকাবাসীর একাংশের মতে, ওই ‘আর্চ ড্রেন’টিই সমস্যা তৈরি করেছে। কারণ, সেটির কংক্রিটের দেওয়ালে ছিদ্র তৈরি হয়েছে। সেই ছিদ্র চুঁইয়ে পিচের নীচে থাকা মাটির তলায় ক্রমাগত জল জমছে। সেই জলের তোড়েই সড়কের একাংশে গর্ত তৈরি হয়েছে।
বিষয়টি নিয়ে জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষের তরফে এগজ়িকিউটিভ ইঞ্জিনিয়ার প্রলয় চক্রবর্তী জানান, সড়কের তলায় ঠিক কতটা গভীরে ‘আর্চ ড্রেন’টি রয়েছে তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। তার পরে কতটা ছিদ্র তৈরি হয়েছে তা বোঝা যাবে। এর পরেই স্থায়ী ভাবে মেরামত করা সম্ভব হবে। তা না করে মাটি ভরাট করলে ফের তা ধসে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে বলে দাবি প্রলয়বাবুর। তবে, এ দিন অস্থায়ী ভাবে ওই অংশে আসানসোল পুরসভা ও জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষ মাটি ভরাটের প্রক্রিয়া শুরু করেছে।
এ দিকে অফিসার ইনচার্জ, ট্র্যাফিক (রানিগঞ্জ) প্রসেনজিৎ বসাক বলেন, ‘‘যেখানে বিপত্তি ঘটেছে, সেই অংশটি ব্যারিকেড দিয়ে ঘিরে দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি, সেখানে ট্র্যাফিক কর্মীও নিয়োগ করা হয়েছে।’’ পুলিশকর্তারা জানান, যেখানে এই বিপত্তি ঘটেছে, সেই অংশ দিয়ে রাস্তায় ভিড় থাকলে গাড়ি যাতায়াত করে। তবে সেই সময়ে রাস্তায় জট না থাকায় বিপত্তির হাত থেকে বাঁচা গিয়েছে।