চলে সব রকম যান। নিজস্ব চিত্র
পারাজের সেতুর উপর দিয়ে ভারী যান চলাচল বন্ধের পরিকল্পনা নিয়েছে প্রশাসন। সেতুর উপর দিয়ে চলতে দেওয়া হবে না কোনও যাত্রী বোঝাই বাসও। এই পরিস্থিতিতে বেসরকারি বাস-সহ অন্য যানবাহন কোন পথে চলবে, তা ঠিক করতে শনিবার পুলিশ, প্রশাসন ও সেচ দফতরের কর্তারা বৈঠকে বসেন। এর পরে স্থানীয় পঞ্চায়েত, বাস মালিক, এলাকার চালকল মালিক ও ব্যবসায়ী সংগঠনের সঙ্গে বৈঠক করে প্রয়োজনীয় সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে বলে প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে।
প্রশাসন ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, পারাজ সেতু দিয়ে শিল্ল্যা, সোদপুর, লোয়াপুর— এই তিনটি রুটে প্রায় ৩২টি বাস চলে। আপাতত সেই রুটগুলির কোনও পরিবর্তন হচ্ছে না। তবে ওই সমস্ত রুটের বাসগুলির যাত্রাপথ বদল হচ্ছে। বাসগুলি রাইপুরের পাশ দিয়ে সুজাপুর হয়ে ভাসাপু্ল এসে দুর্গাপুর এক্সপ্রেসওয়েতে উঠবে। ওই রুটেই ফিরবে। তবে ৩ টনের নীচে সব যানবাহন সেতুর উপর দিয়ে যাওয়া-আসা করতে পারবে। মালবাহী কোনও যান ৩ টনের বেশি হলে ওই সেতু দিয়ে যেতে পারবে না। গলসি ১ পঞ্চায়েত সমিতির সহ-সভাপতি অনুপ মণ্ডল বলেন, ‘‘পূর্ত দফতরের ইঞ্জিনিয়ারেরা রিপোর্ট দিয়েছেন, সেতুটি বিপজ্জনক। ৩ টনের বেশি ভারী গাড়ি যাতাযাত করলে দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। তাই এই সিদ্ধান্ত। শীঘ্রই ভারী যান চলাচল বন্ধ করা হবে।’’
দুর্গাপুর এক্সপ্রেসওয়ের পারাজের মোড় থেকে শিল্ল্যা যাওয়ার রাস্তাতেই পড়ে দামোদর সেচখাল। সেই খালের উপরে পারাজ গ্রাম লাগোয়া জায়গায় রয়েছে সেতুটি। পারাজ, বোলপুর, করোকডাল, রাণাডি, ভীমশারা, জাগুলিপাড়া, আটপাড়া, রাইপুর, রামগোপালপুর, সোদপুর, লোয়াপুর-সহ প্রায় পঞ্চাশটি গ্রামের বাসিন্দাদের বড় ভরসা প্রায় ৩০ মিটার লম্বা এই সেতুটি। তবে সেটির স্তম্ভের হাল খারাপ, কংক্রিটের রেলিংও খসে গিয়েছে। কিছু দিন আগে সেতুটি পরীক্ষা করেন পুলিশ ও পূর্ত দফতরের কর্তারা। তাঁরাই সেতুটি বিপজ্জনক চিহ্নিত করেন। এর পরেই বিকল্প রাস্তার খোঁজ শুরু হয়।
ডিএসপি (ট্রাফিক) আব্দুল কায়ুম বলেন, ‘‘রাইপুর থেকে সুজাপুর হয়ে যে রাস্তাটি ভাসাপুলে আসছে সেটি সংকীর্ণ। বেশ কিছু জায়গা আছে যেখানে দু’টি গাড়ি পাশাপাশি যাবে না। তবু আর কোনও উপায় নেই দেখে বিকল্প রাস্তা হিসাবে আমরা সেটিকেই চিহ্নিত করেছি।’’ প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, বিকল্প রাস্তা দিয়ে শুধু বাস ও ছোট যানবাহন চলবে। ওই রাস্তা দিয়েও কোন ভারী গাড়ি যেতে দেওয়া হবে না। বিডিও (গলসি ১) বিনয়কুমার মণ্ডল বলেন, ‘‘শীঘ্রই স্থানীয় দুই পঞ্চায়েত, একাধিক চালকলের মালিক ও ব্যবসায়ী সমিতি এবং এলাকার জনপ্রতিনিধিদের নিয়ে বৈঠক করে ভারী গাড়ি বন্ধের দিনক্ষণ স্থির করা হবে।’’