বর্ধমান মেডিক্যালে। নিজস্ব চিত্র
সোমবার বেলা ১টা। তখনও বর্ধমান মেডিক্যালের শিশু বিভাগের আউটডোরে থিকথিক করছে ভিড়। সন্তানদের কোলে নিয়ে চিকিৎসকের জন্য অপেক্ষা করছেন মায়েরা। হাসপাতালের দাবি, গত দু’সপ্তাহ ধরেই হাসপাতালে এই চিত্র দেখা যাচ্ছে। জ্বর, ঠাণ্ডা লাগার সমস্যা নিয়ে প্রচুর শিশু হাসপাতালে আসছে।
মেডিক্যাল কলেজ সূত্রে জানা গিয়েছে, প্রতিদিন গড়ে শিশুবিভাগের আউটডোরে ২০০-৩০০ জন রোগী আসে। গত দু’সপ্তাহে সে সংখ্যা ৬০০ ছুঁয়েছে। আউটডোরের সময় পেরিয়ে যাওয়ার পরেও এ দিন অনেককে লাইনে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা যায়।
শিশুবিভাগের এক চিকিৎসক জানান, ঋতু পরিবর্তনের সময় বাচ্চাদের জ্বর ও ঠান্ডা লাগার সমস্যা হয়। তবে এ বার তা উল্লেখযোগ্য হারে বেড়েছে। জ্বর, সর্দি এবং বুকে সর্দি বসে শ্বাসকষ্টের সমস্যাও আগের থেকে বেশি হচ্ছে। ছ’মাসের বাচ্ছা থেকে কিশোর, সকলেই ভুগছে এই সমস্যায়।
ভর্তি হওয়া শিশুদের সংখ্যাও লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে বলে হাসপাতাল সূত্রে খবর। এক চিকিৎসক বলেন, ‘‘আগে যেখানে গড়ে ৫০টি করে শিশু ভর্তি থাকত, এখন সেখানে সে সংখ্যা একশো ছাড়িয়েছে। ভর্তি থাকা শিশুদের সিংহ ভাগই জ্বর-সর্দি-শ্বাসকষ্টে আক্রান্ত। ভর্তির সংখ্যা এ ভাবে বাড়তে থাকলে শয্যার ব্যবস্থা করা কঠিন হয়ে পড়বে।’’ তিনি জানান, খুব বাড়াবাড়ি হলে সে ক্ষেত্রেই ভর্তি করানো হচ্ছে। রোগ সারাতে ‘ইনহেলার’ ব্যবহার করা হচ্ছে, জানিয়েছেন চিকিৎসকেরা।
চিকিৎসকদের দাবি, মূলত ভাইরাল সংক্রমণের কারণেই এই রোগ বেশি হচ্ছে। সংক্রমণের ধরন বোঝার জন্য অনেক ক্ষেত্রেই রক্তের নমুনা পাঠানো হচ্ছে মেডিক্যালের ল্যাবরেটরিতে।
মেডিক্যালের অধ্যক্ষ তথা হাসপাতালের শিশু বিভাগের প্রাক্তন বিভাগীয় প্রধান কৌস্তুভ নায়েক বলেন, ‘‘আমাদের নিজস্ব পরীক্ষাগারে (ভাইরাস রিসার্চ অ্যান্ড ডায়াগনস্টিক ল্যাবরেটরি) নমুনা পরীক্ষা হচ্ছে। রোগের কারণ নির্ণয় করা গেলে চিকিৎসা করা সহজ হবে। পাশাপাশি, রোগ নিয়ন্ত্রণও দ্রুত হবে।’’ তাঁর পরামর্শ, ‘‘ঠান্ডা লাগলেই আতঙ্কিত না হলে বাচ্চাদের দ্রুত চিকিৎসকের কাছে নিয়ে যেতে হবে।’’