সাহেবনগরের স্বাস্থ্যকেন্দ্র। নিজস্ব চিত্র
দেওয়াল ভেঙে তৈরি হয়েছে জানালা। ঘরে আসবাব রেখে চলছে বসবাস। কাটোয়ার সাহেবনগরে গৃহস্থের ওই উঠোন দেখে বোঝার উপায় নেই, সেখানে কোনও সময়ে ছিল স্বাস্থ্যকেন্দ্র! বাসিন্দাদের অভিযোগ, এই পরিস্থিতিতে অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রে চলছে স্বাস্থ্যকেন্দ্রের কাজ। আরও অভিযোগ, বিষয়টি নিয়ে মহকুমা প্রশাসনের কাছে দরবার করেও লাভ হয়নি।
অগ্রদ্বীপ পঞ্চায়েতের ওই এলাকায় ১৯৮২-তে স্থানীয় মসজিদ কমিটির দান করা ৩৩ শতক জায়গায় ওই স্বাস্থ্যকেন্দ্রটি চালু হয়। এই স্বাস্থ্যকেন্দ্রের উপরে নির্ভর করেন সাহেবনগর ও লাগোয়া বাবলাডাঙার বাসিন্দারা। অভিযোগ, ১৯৯০ থেকে ওই স্বাস্থ্যকেন্দ্রের দু’টি ঘরে থাকতে শুরু করেন সামাদ শেখ ও জেহের আলি শেখ নামে দুই ভাই। সরিফ শেখ, সাবেদ আলি শেখ, সিরাজুল শেখ-সহ স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, ‘‘ওই দু’জনের আর্থিক অবস্থা খারাপ ছিল। এক বার প্রাকৃতিক দুর্যোগে ওঁদের বাড়ি ভেঙে যাওয়ায় প্রশাসন সাময়িক ভাবে তাঁদের থাকতে দিয়েছিলেন স্বাস্থ্যকেন্দ্রে। কিন্তু তার পরেই তাঁরা স্বাস্থ্যকেন্দ্রের ভবনটি দখল করে রেখেছেন।’’
এই পরিস্থিতিতে স্বাস্থ্যকেন্দ্রের দুই ফার্মাসিস্ট জানান, ফি বৃহস্পতিবার অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রের ঘরে বসেই তাঁরা কাজকর্ম সারেন। স্থানীয় পঞ্চায়েতের দাবি, ২০১৭-১৮ অর্থবর্ষে ‘ইন্দিরা আবাস যোজনা’ প্রকল্পে দু’কামরার বাড়ি পেয়েছেন ওই দুই ‘জবরদখলকারী’। তবে অভিযুক্ত দুই ভাইয়ের দাবি, ‘‘দু’দশকেরও বেশি সময় ধরে রয়েছি। এত দিন তো প্রশাসন উঠে যেতে বলেনি। তাই রয়েছি।’’
স্বাস্থ্যকেন্দ্রটি পুনরুদ্ধারের দাবিতে কিছু দিন আগে মহকুমাশাসককে (কাটোয়া) স্মারকলিপিও দিয়েছিলেন এলাকাবাসী। পঞ্চায়েত প্রধান নিতাইসুন্দর মুখোপাধ্যায় অবশ্য বলেন, ‘‘বিষয়টি প্রশাসনের নজরে আনা হয়েছে। প্রয়োজনে পুলিশের সহযোগিতায় জবরদখল উচ্ছেদ করা হবে।’’ বিডিও (কাটোয়া ২) শমীক পানিগ্রাহীও বলেন, ‘‘বিএমওএইচ বিষয়টি নিয়ে খোঁজ নেবেন। উনি বিষয়টি নিশ্চিত করলে উপযুক্ত পদক্ষেপ করা হবে।’’