নোটিস সাঁটাচ্ছে পুলিশ। নিজস্ব চিত্র
চার বছরেও অভিযুক্তের ‘খোঁজ’ না পেয়ে বাড়ির দেওয়ালে নোটিস সাঁটিয়ে আদালতে হাজির হওয়ার নির্দেশ জানিয়ে গেল উত্তরপ্রদেশের উন্নাও জেলার গঙ্গাঘাট থানার পুলিশ। বুধবার দুপুরে পূর্ব বর্ধমানের দেওয়ানদিঘি থানার শিবপুরের কাছে নতুনগ্রামের বাসিন্দা শেখ তাজউদ্দিনের বাড়িতে ওই নোটিস সাঁটানো হয়। সেখানে জানানো হয়েছে, অভিযুক্ত আদালতে আত্মসমর্পণ না করলে, আইন মোতাবেক পুলিশ ব্যবস্থা নেবে। এ দিন পুলিশ গিয়ে অভিযুক্তের খোঁজ পায়নি।
উত্তরপ্রদেশের পুলিশ সূত্রে জানা যায়, ২০১৭ সালে ৯ ডিসেম্বর আদালতের নির্দেশে শেখ তেজউদ্দিনের বিরুদ্ধে প্রতারণার মামলা রুজু হয়। গঙ্গাঘাট থানার কাঞ্চননগরের বাসিন্দা রোহন শর্মা আদালতকে জানিয়েছিলেন, অভিযুক্ত-সহ দু’জন এলাকার নামী লোকের সঙ্গে পরিচয় রয়েছে দাবি করে চাকরি করে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিত। বিনিময়ে মোটা টাকা নিত। কিন্তু চাকরি বা টাকা কোনওটাই পাননি তিনি। রোহন জানান, বিহারের আরা ও ভোজপুর এলাকার শ্যামপ্রকাশ সিংহ, তাঁর এক আত্মীয় রাজেশ সিংহ ও তেজউদ্দিন মিলে ওই কারবার চালাত। রোহন শর্মা ছাড়াও, অঙ্কিত সিংহ ও হরি ওমের সঙ্গে ওই তিন জনের পরিচয় হয়। তাঁদের চাকরি দেওয়ার আশ্বাস দিয়ে রেল, সেনা, পুলিশ ও বন বিভাগে পরীক্ষা দেওয়ার ব্যবস্থা করান অভিযুক্তেরা। ২০১৬ সালের ৫ এপ্রিল থেকে পরপর তাঁদের পরীক্ষার ফল বের হয়। অভিযুক্ত তাজউদ্দিন দাবি করেন, প্রতিটি তালিকাতেই তাঁদের নাম উঠেছে। বড় কর্তাদের সঙ্গে তাঁর কথা হয়ে গিয়েছে। চাকরি পাকা।
অভিযোগ, এর পরেই তাঁদের কাছ থেকে কয়েক লক্ষ টাকা করে দাবি করা হয়। ইন্টারভিউয়ের আগে কয়েক লক্ষ টাকা নিয়েও নেয় সে। রোহনের দাবি, ইন্টারভিউয়ের পরে, তাঁরা উত্তীর্ণ জানিয়ে মেসেজ আসে। বাকি থাকা টাকাও আদায় করে তাজউদ্দিন। নিয়োগের চিঠিও ধরানো হয় তাঁদের। কিন্তু চিঠি নিয়ে কাজে যোগ দিতে গিয়ে তাঁরা বুঝতে পারেন, ‘প্রতারিত’ হয়েছেন। অভিযোগকারীর দাবি, টাকা আদায়ের জন্য তাজউদ্দিনের সঙ্গে বেশ কয়েক মাস ধরে যোগাযোগের চেষ্টা করেন তাঁরা। কিন্তু যোগাযোগ হয়নি। এর পরেই থানা ও আদালতের দ্বারস্থ হন তাঁরা।
পুলিশের দাবি, চার বছর ধরে অভিযুক্তের নাগাল মেলেনি। গত ১ ডিসেম্বর আদালতকে পুলিশ জানায়, প্রতারণার মামলায় নিয়ম মেনে নোটিস দেওয়ার পরেও অভিযুক্ত আত্মসমর্পণ করছে না। ওই দিনই অভিযুক্তকে তিন সপ্তাহের মধ্যে আদালতে হাজির হওয়ার নির্দেশ দেন বিচারক। ওই জেলার তদন্তকারী অফিসার আবু মহম্মদ কাসিম দাবি করেন, ‘‘উত্তরপ্রদেশেই চাকরি দেওয়ার নামে ৩০-৩৫ লক্ষ টাকা প্রতারণা করেছে অভিযুক্ত। শুধু উত্তরপ্রদেশ নয়, মধ্যপ্রদেশ, পশ্চিমবঙ্গের শিলিগুড়ি, বিহারেও বেশ কয়েকটি মামলায় তিন কোটি টাকার উপরে প্রতারণার অভিযোগ রয়েছে ওর নামে। আমরা সব তথ্য জোগাড় করছি।’’