ডাক্তারিতে ভর্তি করিয়ে দেওয়ার নাম করে লক্ষ লক্ষ টাকার প্রতারণা। — প্রতীকী ছবি।
বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজের ভিতরে বসে এমবিবিএস কোর্সে ভর্তি করিয়ে দেওয়ার নাম করে টাকা লুঠের চক্র চালানোর অভিযোগ। মেডিকেল কলেজের প্রিন্সিপ্যালের নামে জাল সই করে নথিপত্রও দেওয়া হচ্ছে। বিনিময়ে ভর্তি হতে আসা পড়ুয়াদের কাছ থেকে আদায় করা হচ্ছে মোটা টাকা। কারও কাছ থেকে ২০ লক্ষ, আবার কারও কাছ থেকে ৩০ লক্ষ টাকা দাবি করছে প্রতারকরা। অভিযোগ, পড়ুয়াদের শিক্ষা সংক্রান্ত যাবতীয় নথি যাচাই করার নামে আটকে রাখা হচ্ছে। টাকা না দিলে নথিপত্র ফেরত দেওয়া হচ্ছে না।
অভিযোগ, মেডিকেল কলেজের মধ্যেই একটি ঘরে পড়ুয়াদের ডাকা হচ্ছে। জমা নেওয়া হচ্ছে নথিপত্র। চলছে টাকা নিয়ে সওদা। হাসপাতাল চত্বরেই রমরমিয়ে চলছে প্রতারণা চক্রের কারবার। অথচ, হাসপাতালের নিরাপত্তায় রয়েছে পুলিস ক্যাম্প। রয়েছেন বেসরকারি নিরাপত্তারক্ষীরাও। দিন কয়েক আগে এক প্রতারিত এ নিয়ে মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষের কাছে লিখিত অভিযোগ করেছেন। অধ্যক্ষ বিষয়টি নিয়ে তদন্ত করার জন্য থানায় জানিয়েছেন।
অধ্যক্ষের অভিযোগ পেয়ে বর্ধমান থানার পুলিস পরিকল্পনা মাফিক জাল নথিপত্র তৈরি করে প্রতারণা ও অর্থ আত্মসাতের ধারায় মামলা রুজু করেছে। যদিও এখনও কেউ গ্রেফতার হননি। অধ্যক্ষ কৌস্তভ নায়েক বলেন, ‘‘আমার কাছে এ নিয়ে দু’টি অভিযোগ আসে। একটি ক্ষেত্রে কলকাতার বেহালার এক বাসিন্দাকে এমবিবিএস কোর্সে ভর্তির জাল চিঠি দেওয়া হয়। বিনিময়ে তাঁর কাছ থেকে ১৮ লক্ষ টাকা নেয় প্রতারকরা। অপর ক্ষেত্রে এক সেনা জওয়ানও প্রতারকদের খপ্পড়ে পড়েন। তিনিও বিষয়টি আমাকে জানান। এ নিয়ে থানায় অভিযোগ জানিয়েছি। এরপর যা ব্যবস্থা নেওয়ার পুলিস নেবে।’’ পাশাপাশি কৌস্তুভ বলেন, ‘‘প্রতারকরা ছুটির দিনে হাসপাতালের একটি ঘরে এ সব কাজ করছে বলে জেনেছি। এ ভাবে এমবিবিএসে ভর্তি হয় না। ভর্তির ব্যবস্থা করে দেওয়ার কোনও সুযোগ নেই।’’
কিন্তু মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের মধ্যেই যে ভাবে প্রতারণা চক্রের রমরমিয়ে বোকা বানানোর কারবার চলছে, তাতে সার্বিক ভাবে নজরদারি নিয়েই প্রশ্ন উঠছে।