কচুরিপানায় ভরা। নিজস্ব চিত্র।
পরিযায়ীদের নতুন ঠিকানা হিসাবে চিহ্নিত হয়েছিল কালনার ছাড়িগঙ্গা। গত বার বন দফতরের গণনায় খোঁজ মেলে কয়েক হাজার দেশ বিদেশের রঙিন পাখির। ছাড়িগঙ্গায় পাখিদের আনাগোনা দেখতে ভিড় বাড়ে পর্যটকদেরও। এ বার সেই ছাড়িগঙ্গা ভরেছে ঘন কচুরিপানায়। জলাশয়ের দু’পাড়ে চাষের জন্য প্রস্তুতি নিতে শুরু করেছে বেশ কিছু লোকজন। পক্ষীপ্রেমীদের দাবি, কচুরিপানায় জলাশয়ে ভরে থাকলে অনেক পাখি বসবাসের উপযুক্ত পরিবেশ পাবে না।
বর্ষায় ছাড়িগঙ্গা টইটুম্বুর থাকলেও শীতকালে জল অনেকটাই কমে যায়। কিলোমিটার তিনেক এলাকা জুড়ে জমে থাকে কচুরিপানা। গত বছর শীত পড়তেই প্রচুর পরিযায়ী পাখি এসেছিল এই জলাশয়ে। পাখিদের উপরে নজরদারি শুরু করে বন দফতর। প্রশাসনিক আধিকারিকেরাও কয়েক বার এই জলাশয় পরিদর্শন করেন।পর্যটকদের সুবিধার জন্য ধীরে ধীরে এই জলাশয়কে ঘিরে নজরমিনার-সহ নানা পরিকাঠামো গড়ার সিদ্ধান্ত হয়। পাখিদের পছন্দমতো গাছ লাগানোর কথা হয়। কিন্তু বছর ঘুরে গেলেও কাজের কাজ কিছু হয়নি। এ বার দু’একটা পাখি দেখা গেলেও ঝাঁক বেঁধে আসা পরিযায়ী পাখিদের দেখা মেলেনি।
কালনার পক্ষীপ্রেমী অলোক মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘কচুরিপানায় ঢেকে থাকায় জল দেখা যাচ্ছে না। কিছু জায়গায় কচুরিপানা সরিয়ে না দিলে পাখিরা ঠিকঠাক পরিবেশ পাবে না।’’ তাঁর দাবি, চাষ যত বাড়বে কীটনাশকের প্রয়োগও তত বাড়াবে। কীটনাশক দেওয়া জমিতে খাবার খেতে এসে পাখিদের মৃত্যু ঘটতে পারে। ফলে ছাড়িগঙ্গায় পাখিদের জন্য উপযুক্ত পরিবেশ গড়ে উঠতে গেলে চাষ বন্ধের দাবি করেছেন তিনি। শহরের আর এক বাসিন্দা অমল ঘোষ বলেন, ‘‘গত বছর প্রশাসনের আধিকারিকরা জানিয়েছিলেন, ছাড়ি গঙ্গাকে ঘিরে পাখিরালয় তৈরির কথা ভাবা হচ্ছে। এই কাজ ঠিকঠাক করা গেলে পর্যটকের সংখ্যা বেড়ে যাবে। কিন্তু কাজ হচ্ছে কই?’’
বন দফতরের কাটোয়া রেঞ্জ অফিসার শিবপ্রসাদ সিংহ বলেন, ‘‘চাষাবাদের বিষয়টি প্রশাসন দেখবে। পরিযায়ী পাখিরা আসতে শুরু করলে নিরাপত্তার বিষয়টি দেখব।’’ কালনার উপ-পুরপ্রধান তপন পোড়েল বলেন, ‘‘ছাড়িগঙ্গায় জল না পেলে পাখিদের বিচরণ করতে অসুবিধা হবে। বিষয়টি মহকুমাশাসকের নজরে আনা হচ্ছে।’’