ঝাউডাঙায় এ ভাবেই ভাঙছে পাড়। নিজস্ব চিত্র।
রাজ্যে বর্ষা ঢোকার মুখেই ভাঙন দেখা দিয়েছে পূর্বস্থলী ২ ব্লকের ঝাউডাঙা এলাকায় ভাগীরথীর পাড়ে। প্রায় ২০ মিটার এলাকা জুড়ে তৈরি এই ভাঙনের একাংশ ভেঙে পড়তে দেখা যায় মঙ্গলবার সকালে। আতঙ্কিত এলাকাবাসীর দাবি, দ্রুত ভাঙন মেরামতি শুরু না হলে গ্রাম
ভেসে যাবে।
জেলার সব থেকে ছোট পঞ্চায়েত হল ঝাউডাঙা। ঝাউডাঙা, হালতাচরা, কাশিপুর, রুদ্রডাঙা, গঙ্গাপুর-সহ ৬টি গ্রাম নিয়ে এই পঞ্চায়েত। এলাকাটির চারি দিকে জল। এখানে গ্রামবাসীদের মূল জীবিকা চাষাবাদ এবং পশু পালন করে দুধ বিক্রি। যাবতীয় কাজে নদী পথেই তাঁদের যাতায়াত। বর্ষায় ভাগীরথী ফুলে ফেঁপে উঠলে, ঝুঁকি বাড়ে। গ্রামবাসীর দাবি, তিন দশকের বেশি সময় ধরে ভাঙনের সমস্যায় ভুগছেন তাঁরা। ২০০৬ সালে ঝাউডাঙার মাঝামাঝি এলাকায় পাথর, বাঁশের খাঁচা ফেলে বাঁধ মেরামতি হয়েছিল। তবে এ দিন সেই অংশ ধসে পড়তে দেখা যায়। ভাঙন এলাকার গা ঘেঁসে রয়েছে কংক্রিটের রাস্তা, মন্দির-সহ প্রায় শ’দেড়েক বাড়ি। ৫০০ মিটারের মধ্যে রয়েছে স্কুল, পঞ্চায়েত, স্বাস্থ্যকেন্দ্র। প্রভাত দে নামে এক গ্রামবাসী বলেন, “নদীর কাছেই বাড়ি। ভাঙন শুরু হওয়ায় রাতে ঘুম হচ্ছে না। মনে হচ্ছে এই বুঝি নদী গিলে খেল গ্রামটাকে। দ্রুত মেরামতির কাজ শুরু হোক।”
গ্রামের বাসিন্দা পূর্বস্থলী ২ পঞ্চায়েত সমিতির প্রাক্তন সদস্য নির্মল দে বলেন, “ধসে পড়া অংশে ২০০৬ সালের পরে আর কাজ হয়নি। এখম যে ভাবে নদী ভাঙতে শুরু করছে, দ্রুত কাজ না হলে বিপদের আশঙ্কা রয়েছে।” তিনি আরও জানান, নদীর পাড়ে কংক্রিটের রাস্তা পেড়িয়ে একটি ২৫ ফুট গভীর গর্ত রয়েছে। এক সময় ওই গর্তের মাটি বাড়ি তৈরির কাজে ব্যবহার করেছেন গ্রামবাসীরা। এক বার গর্ত পর্যন্ত নদীর জল ঢুকে গেলে গ্রামকে রক্ষা করা কঠিন হবে বলে দাবি তাঁর।
পূর্বস্থলী উত্তর কেন্দ্রের বিধায়ক তপন চট্টোপাধ্যায় জানান, ঝাউডাঙা এলাকায় বছর দেড়েক আগেও ভাঙন মেরামতির জন্য প্রায় ৪ কোটি টাকা খরচ করে পাড় বাঁধানো হয়েছে। নতুন করে যেখানে ভাঙছে, পরিস্থিতি দেখে সেচ দফতরের সঙ্গে কথা বলা হবে। গ্রামবাসীদের তরফে বিষয়টি সেচ দফতরকে জানানো হয়েছে বলে জানা যায়। সেচ দফতরের এক প্রতিনিধি এলাকা ঘুরে গিয়েছেন বলে জানান গ্রামবাসীরা।