বিতর্কিত পোস্ট। নিজস্ব চিত্র
জেলা পরিষদের উদ্যোগে রাস্তা সংস্কার শুরু হয়েছে কাটোয়ায়। সরকারি টাকায় রাস্তা তৈরির কাজ ঠিক মতো হচ্ছে কি না, ‘সোশ্যাল মিডিয়া’য় সেই প্রশ্ন তুলে বিতর্কে জড়ালেন জেলা পরিষদের সদস্য, তৃণমূল নেতা মণ্ডল আজিজুল।
শুক্রবার একটি পোস্টে তিনি লেখেন, ‘গৌরডাঙা থেকে ঘুমুরিয়া পর্যন্ত রাস্তার কাজ কী ভাবে হচ্ছে পূর্ত কর্মাধক্ষ্য উত্তম সেনগুপ্তকে জানান।’ আর একটি পোস্টে লেখেন, ‘মা মাটি মানুষের সরকারের দেওয়া টাকায় ঠিক মতো কাজ হচ্ছে কি না দেখে নিন’। সদস্য হয়ে জেলা পরিষদের কাজ নিয়ে প্রশ্ন তোলায় ‘দ্বন্দ্ব’ দেখছেন বিরোধীরা। যদিও ওই নেতার দাবি, ‘‘যে ঠিকাদার ওই কাজটি পেয়েছেন তিনি কাজের শিডিউল দিচ্ছেন না। অর্থাৎ, কত টাকায় কোন সামগ্রী কিনে রাস্তা সারাই হচ্ছে তা জানতে পারা যাচ্ছে না। সংশ্লিষ্ট পঞ্চায়েতকেও তিনি কিছুই জানাচ্ছে না বলে শুনেছি। জেলা নেতৃত্বের নজরে আনার জন্য সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করেছি।’’
সিঙ্গী পঞ্চায়েত সূত্রে জানা যায়, গৌরডাঙা বাসস্ট্যান্ড থেকে ঘুমুরিয়া পর্যন্ত সাড়ে ছ’কিলোমিটার বেহাল রাস্তা সংস্কারের কাজ সম্প্রতি শুরু করেছে জেলা পরিষদ। দিন বারো আগে ভাঙাচোরা রাস্তাটিতে পাথর বসিয়ে নতুন করে ঢালাই দেওয়া হয়েছে। তবে কাজ নিম্ন মানের বলে অভিযোগ করেছেন ৪৩ নম্বর সংসদ থেকে নির্বাচিত সদস্য মণ্ডল আজিজুল। ওই পঞ্চায়েত প্রধান দিব্যেন্দু চট্টোপাধ্যায়ের দাবি, ‘‘জেলা পরিষদের দু’জন ইঞ্জিনিয়ার ও কাটোয়া ২ ব্লকের দুই সাব অ্যাসিটেন্ট ইঞ্জিনিয়ার রাস্তাটি পরিদর্শন করেছেন। জানা গিয়েছে, ঠিকাদার এমন ভাবে কাজ করছিলেন যাতে রাস্তায় ঠিকমতো জল পড়ছিল না। কাজ করতে করতেই পিচ, ইট উঠে যাচ্ছিল। তবে পরিদর্শনের পরে, ঠিক ভাবে কাজ হচ্ছে।’’
যদিও তৃণমূলেরই একাংশ নেতা-কর্মীর দাবি, মণ্ডল আজিজুলের মেয়ে মাসুদা খাতুন বর্তমানে কাটোয়া পুরসভার ১ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর। আগামী পুরভোটে মেয়ের টিকিট পাওয়ার সম্ভাবনা কম বুঝেই ক্ষুব্ধ হয়ে এমন পোস্ট করেছেন ওই নেতা। যদিও এই দাবি মানেননি বাবা-মেয়ে কেউই।
কাটোয়ার বিজেপি নেতা অনিল দত্তের টিপ্পনী, ‘‘এত দিন শাসকদলের সঙ্গে থেকেও মেয়েকে টিকিট পাইয়ে দিতে না পেরে এখন দলের উপর ক্ষোভ উগরে দিচ্ছেন উনি।’’ যদিও জেলা পরিষদের সহ-সভাধিপতি দেবু টুডুর দাবি, ‘‘উনি কী উদ্দেশ্যে পোস্ট করেছেন জানি না, তবে যে কোনও জনপ্রতিনিধি তাঁর নির্বাচিত এলাকায় কোনও সরকারি কাজ হলে তার ভাল-মন্দ সম্পর্কে মত দিতে পারেন। ওই রাস্তার সংস্কারের বিষয়টি জেলা পরিষদের তরফে নজরে রাখা হবে।’’
জেলা পরিষদের পূর্ত কর্মাধ্যক্ষ উত্তম সেনগুপ্ত বলেন, ‘‘উনি প্রবীণ নেতা। ওঁর অনুরোধেই সিঙ্গীর ওই রাস্তাটি সারানোর কাজ শুরু হয়েছে। কাজে খামতি থাকলে উনি ব্যক্তিগত ভাবে জানাতে পারতেন। এ ভাবে সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করলে জনগণের কাছে ভুল বার্তা যায়। এটা ওঁর থেকে কাম্য নয়।’’