Burdwan Medical College

ওয়ার্ডে পৌঁছে দিতেও টাকা, অভিযোগ রোগীর পরিবারের

রোগীদের পরিজনেদের অভিযোগ, অপারেশন থিয়েটার থেকে ওয়ার্ডে ট্রলি করে রোগীকে পৌঁছে দিতে গুনতে হয় ২০০ থেকে ৫০০ টাকা।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

বর্ধমান শেষ আপডেট: ০৫ অক্টোবর ২০২০ ০০:০৭
Share:

সচেতনতায় বোর্ড। নিজস্ব চিত্র।

ওয়ার্ডের চারিদিকে বড় বড় বোর্ড টাঙিয়ে লেখা রয়েছে, ‘প্রসূতিদের চিকিৎসা সম্পূর্ণ বিনা পয়সায় করা হয়। কোনও কারণে কাউকে টাকাপয়সা দেবেন না’। কিন্তু ওই বিভাগেই পরিষেবা দেওয়ার বিনিময়ে রোগী পরিবারের কাছ থেকে টাকা নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে।

Advertisement

রোগী পরিবারের অভিযোগ, ট্রলি ঠেলে ওয়ার্ডে পৌঁছে দেওয়া থেকে শুরু করে, হাতের চ্যানেল লাগানো বা খুলে দেওয়া, সবের জন্যই রয়েছে আলাদা আলাদা ‘রেট’। সরকারি হাসপাতাল বিনামূল্যে চিকিৎসার আশ্বাস দিলেও গরিব রোগীদের পরিষেবা পেয়ে টাকা গুনতে হচ্ছে, দাবি তাঁদের। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, এ নিয়ে মৌখিক ভাবে অভিযোগ পেলেও কোনও লিখিত অভিযোগ হয়নি। তবে কর্মীদের সতর্ক করা হয়েছে।

রোগীদের পরিজনেদের অভিযোগ, অপারেশন থিয়েটার থেকে ওয়ার্ডে ট্রলি করে রোগীকে পৌঁছে দিতে গুনতে হয় ২০০ থেকে ৫০০ টাকা। রোগী নিয়ে যাওয়ার আগেই ‘রফা’ করে নেন ওয়ার্ডের একাংশ কর্মী। আবার ওয়ার্ডে পৌঁছে দেওয়ার পরে হাতে থাকা স্যালাইন চ্যানেল খুলে দেওয়ার বা নতুন করে চ্যানেল করে দেওয়ার জন্য ২০ থেকে ৫০ টাকা নেওয়া হয় বলে অভিযোগ। বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালের বর্হিবিভাগের উপরে তিন তলা থেকে পাঁচ তলার প্রসূতি বিভাগ পর্যন্ত ‘টাকার খেলা’ চলে, দাবি তাঁদের। যদিও নির্দিষ্ট অভিযোগ জমা না পড়ায় কিছু করা সম্ভব নয়, দাবি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের।

Advertisement

রোগীদের একাংশের দাবি, সিজার করে সন্তানের জন্ম দেন যাঁরা, তাঁদের ট্রলির প্রয়োজন বেশি। তাই কোপটাও তাঁদের ওপরেই পড়ে। গলসির কলিগ্রামের বাসিন্দা প্রিয়াঙ্কা মাঝি গত বুধবার অস্ত্রোপচার করে সন্তানের জন্ম দিয়েছেন। তাঁর অভিযোগ, অপারেশন থিয়েটার থেকে ওয়ার্ডে ট্রলি করে পৌঁছে দিতে তাঁকে দু’শো টাকা দিতে হয়েচে। চারশো টাকা দিতে হয়েছে, দাবি মন্তেশ্বরের বাঘাসনের দীপিকা দাসেরও। আবার ছয় মাইলের বাসিন্দা ফাল্গুনী দাসের কথায়, ‘‘ওয়ার্ডে নিয়ে যাওয়ার আগেই কত টাকা দিতে হবে, সেটা জানিয়ে দেওয়া হয়। নাহলে ওই কর্মীরা নিয়ে যেতে চায় না।’’ তাঁর ক্ষেত্রেও পাঁচশো টাকায় রফা হয়েছিল, দাবি তাঁর। দেওয়ানদিঘির বাসিন্দা তাপসী বাগদী আবার বলেন, ‘‘আমার নর্মাল ডেলিভারি হয়েছে। তাই ট্রলি লাগেনি। কিন্তু হাতের চ্যানেল লাগানো ও খুলে দেওয়া মিলিয়ে দেড়শো টাকা দিতে হয়েছে। আর মিষ্টি খাওয়ার টাকা তো আছেই।’’ ওই পরিবারগুলির দাবি, বিনা পয়সায় চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে আসা। সেখানেই টাকা দিতে হলে যাব কোথায়!

হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, কোনও রকম মৌখিক অভিযোগ পেলেও বৈঠক ডেকে সতর্ক করা হয়। হাসপাতালের সুপার প্রবীর সেনগুপ্ত বলেন, ‘‘নির্দিষ্ট কারও নামে অভিযোগ পেলে কড়া ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement