Potato

Potato: হিমঘরে জমে আলু, চিন্তায় চাষি-ব্যবসায়ী

দোকান-বাজারে সময়সীমা বাঁধা, লোকাল ট্রেন বন্ধের মতো কারণগুলির জন্য জেলাতেও আলু কম বিক্রি হচ্ছে বলে দাবি ব্যবসায়ীদের বড় অংশের।

Advertisement

সৌমেন দত্ত

বর্ধমান শেষ আপডেট: ০২ অগস্ট ২০২১ ০৬:০৭
Share:

প্রতীকী চিত্র।

জুলাইয়ে আলুর সর্বোচ্চ দর ছিল প্রতি কেজি ১২ টাকা। তা সত্ত্বেও বাজারে বিশেষ চাহিদা নেই। আবার, করোনা-বিধির কারণে ভিন্‌ রাজ্যে আলু পাঠাতেও অসুবিধা হচ্ছে। এর জেরে হিমঘরগুলিতে আলি জমে থাকছে বলে দাবি পূর্ব বর্ধমানের চাষি, ব্যবসায়ী থেকে হিমঘর মালিকদের অনেকের। ব্যবসায়ী থেকে হিমঘর সমিতি সহায়ক মূল্যে আলু কিনে রাজ্য সরকারের বিভিন্ন প্রকল্পে দেওয়ার দাবি জানিয়েছে। কৃষি বিপণন দফতর সূত্রে জানা যায়, ইতিমধ্যে মিড-ডে মিলে দু’কেজি করে আলু দেওয়ার কথা ঘোষণা করেছে রাজ্য সরকার।

Advertisement

জেলার আলু ব্যবসায়ী সমিতি ও হিমঘর মালিক সংগঠনের সূত্রে জানা যায়, গত বছর অতিরিক্ত ফলনের জন্য তুলনায় অনেক বেশি আলু হিমঘরে তোলা হয়েছিল। আবার অনেক চাষির ঘরেও আলু রয়ে গিয়েছিল। সে জন্য খাতায়-কলমে মে মাসে হিমঘর খুললেও আলু বেরোতে জুনের শেষ সপ্তাহ হয়ে গিয়েছে। পূর্ব বর্ধমানে হিমঘরে আলু মজুত হয়েছে দু’কোটি ৯২ লক্ষ ২৬ হাজার প্যাকেট (৫০ কেজি প্রতি প্যাকেট)। ব্যবসায়ীদের দাবি, অন্য বারের চেয়ে প্রায় ৬৫ লক্ষ প্যাকেট বেশি মজুত হয়েছে। অথচ, আলুর প্যাকেট বাজারজাত হচ্ছে কম। গত বার জুলাইয়ের শেষে মজুত প্যাকেটের ৩৮ শতাংশ আলু বাজারে চলে গিয়েছিল। এ বার সেখানে তা প্রায় ৩০.৮ শতাংশ।

হিমঘর মালিক সমিতির কর্তা, মেমারির বাসিন্দা কৌশিক কুণ্ডুর দাবি, ‘‘হিমঘরে চাষিদের আলু বেশি রয়েছে। তাঁদের জন্য সহায়ক মূল্যে আলু সরকার কিনে বিভিন্ন প্রকল্পে ব্যবহার করুক।’’ আলু ব্যবসায়ীরা জানান, হিমঘর খোলার পর থেকেই বাজারে অনিশ্চয়তা। মাঠ থেকে প্রতি প্যাকেট আলু কেনা হয়েছে ৩৮০-৪২৫ টাকা দরে। সেই আলুর বন্ড বিক্রি হচ্ছে এখন ২৬০-৩০৫ টাকায়। দাম বাড়ার আশায় চাষি থেকে অনেক ব্যবসায়ী আলু ধরে রাখছেন। জেলা আলু ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি সাগর সরকারের দাবি, ‘‘১৫ অগস্টের মধ্যে মজুত আলুর ৫০ শতাংশ বিক্রি হওয়া আবশ্যক। তা না হলে হিমঘরে জমে থাকবে। এখনও যা পরিস্থিতি, ৩৭ শতাংশের বেশি আলু বেরোবে না।’’

Advertisement

কেন এই অবস্থা? ব্যবসায়ীদের অনেকের দাবি, পূর্ব বর্ধমানে উৎপাদিত আলুর প্রায় ৩০ শতাংশ ভিন্‌ রাজ্যে পাঠানো হয়। বাকি আলুর প্রায় ৩০ শতাংশ জেলায় ও প্রায় ৪০ শতাংশ ভিন্‌ জেলায় পাঠানো হয়। এ বার করোনা-বিধির জন্য গাড়ি চলাচলে নিয়ন্ত্রণ থাকায় ভিন্‌ রাজ্যে আলু পাঠাতে সমস্যা হচ্ছে। আবার ওড়িশা, ঝাড়খণ্ড, ছত্তীসগঢ়, বিহার, অসমের হিমঘরগুলি থেকেও এখনও আলু বেরোয়নি। ফলে, এই জেলার আলু সেখানে প্রায় ৬২ শতাংশ কম যাচ্ছে। এ ছাড়া, দোকান-বাজারে সময়সীমা বাঁধা, লোকাল ট্রেন বন্ধের মতো কারণগুলির জন্য জেলাতেও আলু কম বিক্রি হচ্ছে বলে দাবি ব্যবসায়ীদের বড় অংশের।

জেলা আলু ব্যবসায়ী সংগঠনের সম্পাদক জগবন্ধু মণ্ডলের দাবি, ‘‘সংরক্ষণকারীদের আলুর প্যাকেট বিক্রি করে নানা কারণে লোকসানে হচ্ছে। এখন প্রতি প্যাকেট আলু বিক্রি করে অন্তত ১২০ টাকা ক্ষতি হচ্ছে। চাষির ঘরে আলু থাকায় হিমঘর থেকে আলু বেরোতে দেরি হয়েছে। তার প্রভাব বাজারে পড়ছে।’’ ব্যবসায়ীরা সহায়ক মূল্যে আলু কেনা ও ভিন্‌ রাজ্যে আলু পরিবহণের সুবিধার দাবি জানিয়েছেন সরকারের কাছে। কৃষি বিপণন দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, চলতি মাস থেকেই মিড-ডে মিলে দু’কেজি করে আলু দেওয়ার কথা জানানো হয়েছে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement