পরীক্ষা দেওয়াতে বাড়িতে প্রশাসন

পুলিশ সূত্রে জানা যায়, সবথেকে আশঙ্কায় ছিলেন আসানসোলের রেলপাড় এলাকার অভিভাবক ও পড়ুয়ারা। কারণ, এই এলাকাতেই গত দু’দিন গোলমাল বেধেছিল। আর, এই এলাকাতেই রয়েছে এনসি লাহিড়ী হাইস্কুল।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

আসানসোল শেষ আপডেট: ৩০ মার্চ ২০১৮ ০১:১৭
Share:

পুলিশের গাড়ি থেকে নামছেন পরীক্ষার্থীরা। আসানসোলের ধাদকা এনসি লাহিড়ী স্কুলে। বৃহস্পতিবার। নিজস্ব চিত্র

গত দু’দিন গোলমালের পরে বৃহস্পতিবার উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষা নির্বিঘ্নে মিটবে কি না, তা নিয়ে আশঙ্কায় ছিলেন অভিভাবক, প়়ড়ুয়া থেকে শিক্ষক, সকলেই। তবে পুলিশ-প্রশাসনের টানা নজরদারি ও ব্যবস্থার পরে নির্ঝঞ্ঝাটেই পরীক্ষা শেষ হয়েছে বলে জানিয়েছে শিক্ষা দফতর।

Advertisement

পুলিশ সূত্রে জানা যায়, সবথেকে আশঙ্কায় ছিলেন আসানসোলের রেলপাড় এলাকার অভিভাবক ও পড়ুয়ারা। কারণ, এই এলাকাতেই গত দু’দিন গোলমাল বেধেছিল। আর, এই এলাকাতেই রয়েছে এনসি লাহিড়ী হাইস্কুল।

তবে এ দিন সকাল থেকেই দেখা যায় পশ্চিম বর্ধমানের সহকারী জেলা স্কুল পরিদর্শক অজয় পাল ও উচ্চ মাধ্যমিক কাউন্সিলের জেলা আহ্বায়ক নিমাই মহান্তির নেতৃত্বে একাধিক দল পুলিশকে সঙ্গে নিয়ে আসানসোলের রেলপাড়ের নানা এলাকায় গিয়ে পরীক্ষার্থীদের সঙ্গে দেখা করেন। তাদের পুলিশ-প্রশাসনের গাড়ি ও বিশেষ বাসের সাহায্যে শহরের নানা পরীক্ষাকেন্দ্রে পৌঁছে দেওয়া হয়।

Advertisement

প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, অতিরিক্ত সতর্কতা নেওয়া হয়েছিল ধাদকা এনসি লাহিড়ী হাইস্কুল ও বালবোধন উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয়। এই দু’টি স্কুলের কাছাকাছিই বসানো হয় পুলিশ ক্যাম্প। সকাল ৬টা থেকেই ধাদকার স্কুলটির চারপাশ দখলে নেয় কমব্যাট ফোর্স। সাড়ে ৮টা থেকে পরীক্ষাকেন্দ্রের মূল গেট খুলে দেওয়া হয়। পরীক্ষা দিতে স্কুলে ঢোকে পরীক্ষার্থীরা। অনেককেই দেখা যায়, অভিভাবকদের সঙ্গেই গাড়ি, মোটরবাইকে চড়়ে পরীক্ষাকেন্দ্রে এসেছে।

পুলিশ-প্রশাসনের ভূমিকায় খুশি অভিভাবক ও শিক্ষকেরা। দেবাশিস দত্ত নামে এক অভিভাবক জানান, ছেলেকে নিয়ে বার্নপুর থেকে এসেছেন। তিনি বলেন, ‘‘বিএনআর মোড় পেরনোর সময়ে পুলিশকে বলি, ছেলে পরীক্ষা দিতে যাবে। এর পরে পুলিশই পাহারা দিয়ে আমাদের ধাদকায় পৌঁছে দিয়েছে।’’ আরকে ডাঙালের বাসিন্দা জহায় ঠাকুর, সুমিতকুমার যাদবেরা বলেন, ‘‘রাতে পরিস্থিতি যা ছিল, তাতে মেয়ে আদৌ পরীক্ষা দিতে পারবে কি না, তা নিয়ে সন্দেহ ছিল। কিন্তু সকালে এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট ও পুলিশ বাড়ি এসে মেয়েদের নিয়ে যান।’’

শিক্ষা দফতর সূত্রে জানা যায়, বুধবার রাতে শহরের সব কটি পরীক্ষাকেন্দ্রের দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকদের মাধ্যমে পরীক্ষার্থীদের মোবাইলে এসএমএস পাঠানো হয়। পড়ুয়াদের কাছে আর্জি জানানো হয়, তারা যেন সকাল সাড়ে ৮টার মধ্যে পরীক্ষাকেন্দ্রে পৌঁছে যায়। এ দিন আসানসোলের বেশির ভাগ পরীক্ষাকেন্দ্রেই দেখা যায় পরীক্ষার্থীরা পৌঁছে গিয়েছে সাড়ে ৮টার মধ্যে। এ দিন শহরে সকালে বাস পরিষেবা স্বাভাবিক হলেও বেশির ভাগ পরীক্ষার্থীই অভিভাবকদের সঙ্গে ব্যক্তিগত গাড়ি বা মোটরবাইকে চড়ে পরীক্ষাকেন্দ্রে আসে। অজয়বাবু বলেন, ‘‘রেলপাড় ও লাগোয়া এলাকায় মোট চারটি পরীক্ষাকেন্দ্রে বিশেষ নজরদারি ছিল। এখানে মোট পরীক্ষার্থী ছিল ১৪৪৪ জন। পরীক্ষা দিয়েছে ১৩৭০ জন। পরীক্ষা দিতে আসতে পারেনি ৭৪ জন। তবে এই অনুপস্থিতি গোলমালের কারণে নয় বলেই মনে হয়।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement