Alok Das

বারবার বিতর্কে, তবুও অলোক দলেই

নির্বাচনী প্রচারে মলয় ঘটকের উপরে হামলার প্রতিবাদ করতে গিয়ে সিপিএমের তদানীন্তন উপপ্রধানকে খুনের চেষ্টার অভিযোগ ওঠে অলোকবাবুর বিরুদ্ধে।

Advertisement

নীলোৎপল রায়চৌধুরী

জামুড়িয়া শেষ আপডেট: ০৮ মার্চ ২০২০ ০১:০৭
Share:

অলোক দাস। ফাইল চিত্র

১৯৯৮-এ তৃণমূলের জন্মলগ্ন থেকেই দলের ‘বিশ্বস্ত সৈনিক’ তিনি। এ ভাবে দলে নিজের অবস্থান সম্পর্কে বারবার দাবি করেন অলোক দাস। কিন্তু বিতর্ক তাঁর পিছু ছাড়েনি। শনিবার তাঁর ও তাঁর অনুগামীদের বিরুদ্ধে পিকে-র টিমের উপরে হামলার চেষ্টা করার অভিযোগই প্রথম নয়। অতীতেও বহু বার বিতর্কে জড়িয়েছেন অলোকবাবু। ‘শাস্তি’-ও মিলেছে। কিন্তু তার পরেও তিনি দলেই রয়েছেন।

Advertisement

বিতর্ক এক: ১৯৯৮-এর পঞ্চায়েত নির্বাচন। জামুড়িয়ার মদনতোড় পঞ্চায়েতে নির্বাচনী প্রচারে মলয় ঘটকের উপরে হামলার প্রতিবাদ করতে গিয়ে সিপিএমের তদানীন্তন উপপ্রধানকে খুনের চেষ্টার অভিযোগ ওঠে অলোকবাবুর বিরুদ্ধে। এই সময়ে পুলিশ তাঁকে গ্রেফতারও করে। জামিন পেয়ে জেল থেকে বেরিয়ে পঞ্চায়েত ভোটের দিন বুথ লুটের চেষ্টার অভিযোগে ফের জেল হেফাজতে থাকতে হয় তাঁকে। তৃণমূলের স্থানীয় নেতা, কর্মীদের একাংশ জানাচ্ছেন ক্রমে দলে মলয়বাবুর অনুগামী হিসেবে পরিচিত হয়ে ওঠেন অলোক।

বিতর্ক দুই: ধীরে ধীরে দলেও গুরুত্ব বাড়ে অলোকবাবুর। ২০০৯-এ যুব তৃণমূলের জামুড়িয়া ১ নম্বর ব্লকের কোর কমিটির সদস্য হন। ২০১৩-য় হন যুব তৃণমূলের ব্লক সভাপতি। ওই বছরই পঞ্চায়েত ভোটে মধুডাঙা এলাকায় দলের ভোটের দায়িত্বে ছিলেন তিনি। ভোটের দিন সকালে মধুডাঙা বুথের সামনে সিপিএম প্রার্থীর স্বামী এবং পাল্টা তৃণমূলের এক জন কর্মী খুন হওয়ার ঘটনা ঘটে। এই অশান্তিতেও নাম জড়ায় অলোকবাবুর অনুগামীদের বিরুদ্ধে।

Advertisement

বিতর্ক তিন: ২০১৪-য় ইকড়া শিল্পতালুকে বিজয়নগর এলাকার একটি স্পঞ্জ আয়রন কারখানায় হামলা চালানোর অভিযোগ ওঠে অলোকবাবু ও তাঁর অনুগামীদের বিরুদ্ধে। এই পরিস্থিতিতে তাঁকে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়।

কিন্তু ফের দলে ফেরেন অলোকবাবু। ২০১৫-য় আসানসোল পুরভোটে দলের তরফে জামুড়িয়ার আটটি ওয়ার্ডের দায়িত্বও পান তিনি। তবে এর এক বছরের মাথায়, ২০১৬-র বিধানসভা ভোটের পরে ফের শৃঙ্খলাভঙ্গের অভিযোগে দল থেকে বহিষ্কৃত হন অলোকবাবু। ২০১৮-য় পঞ্চায়েত ভোটের আগে ফের তৃণমূলে ফেরা।

কেন বারবার এমন ‘বিতর্কিত’ নেতাকে দলে ফেরানো, তা নিয়ে জল্পনা রয়েছে জামুড়িয়ায় তৃণমূলের স্থানীয় নেতা, কর্মীদের একাংশের মধ্যে। তবে অলোক-ঘনিষ্ঠদের ব্যাখ্যা, পুরভোট হোক বা পঞ্চায়েত, সব ক্ষেত্রেই দলকে জেতানোর নেপথ্যে বড় ভূমিকা নিয়েছেন অলোকবাবু। তাঁর এই ‘সাংগঠনিক ক্ষমতা’র কারণেই তিনি বহিষ্কৃত হয়েও দলে ফেরেন বারবার। তৃণমূলের জেলা চেয়ারম্যান ভি শিবদাসন বলেন, “দল যখন শৃঙ্খলাভঙ্গের অভিযোগ পেয়েছে তখনই অলোকবাবুকে বহিষ্কার করা হয়েছে। ফের তাঁর স্বচ্ছতা দেখার পরেই তাঁকে ফেরানো হয়েছে। দল এ বারের অভিযোগের অবশ্যই তদন্ত করবে।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement