বর্ধমান স্টেশনে জলের ট্যাঙ্ক ভেঙে পড়ার পরের মুহূর্তের ছবি। —ফাইল চিত্র।
লোহার চাদরের ৮৮ বছরের পুরনো বড় জলের ট্যাঙ্কের নীচ থেকে নিরাপত্তার স্বার্থে তাঁদের দ্রুত উঠে যেতে বলেছেন রেলকর্মীরা, এমনই দাবি করছেন বর্ধমান স্টেশনের ৮ নম্বর প্ল্যাটফর্ম লাগোয়া ওই ট্যাঙ্কের নীচে থাকা বস্তির বাসিন্দাদের অনেকের। তাঁদের দাবি, রেলের তরফে সাদা কাগজে হাতে লেখা একটি বিজ্ঞপ্তিও শনিবার দুপুরে সাঁটিয়ে দিয়ে গিয়েছেন রেলকর্মীরা। যদিও বর্ধমান স্টেশন কর্তৃপক্ষের দাবি, কোন বিভাগ থেকে এ রকম বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হয়েছে, তা জানা নেই।
বুধবার বর্ধমান স্টেশন চত্বরে ১৭৪ বছরের পুরনো লোহার ট্যাঙ্কের দু'দিকের চাদর ভেঙে পড়ে প্ল্যাটফর্মের ছাউনির উপরে। তার জেরে মৃত্যু হয়েছে ৩ যাত্রীর। এর পরেই ৮৮ বছরের ওই ট্যাঙ্কের অবস্থা কেমন, তা জানতে রেল খোঁজখবর নিতে শুরু করে। রেলের কর্মীরা সেখানে গিয়ে দেখেন, ট্যাঙ্কে জলধারণ ক্ষমতা ৫৬,৮৭০ গ্যালন। এক-চতুর্থাংশ জল থাকে। আর ট্যাঙ্কের নীচে ১৫-২০টি পরিবার অস্থায়ী ভাবে বসবাস করছে।
পড়েছে এই নোটিস। —নিজস্ব চিত্র।
রেল সূত্রে জানা যায়, ২ ও ৩ নম্বর প্ল্যাটফর্মের উপরের ট্যাঙ্কটি ভেঙে যাওয়ায় জলের পরিষেবা স্বাভাবিক রাখার জন্য আরও একটি পুরনো ট্যাঙ্কের উপরে ভরসা করতে হবে। সে ক্ষেত্রে ক্ষমতা অনুযায়ী সব জল ভরতে গিয়ে বিপত্তির আশঙ্কা উড়িয়ে দিচ্ছেন না রেলের আধিকারিকেরা। সে কারণেই সাদা কাগজে লিখে জানানো হয়েছে, অনিবার্য কারণে যত তাড়াতাড়ি সম্ভব ট্যাঙ্কের তলা ও পার্শ্ববর্তী জায়গা থেকে সরে যাওয়ার নির্দেশ দেওয়া হচ্ছে। রেলের তরফে যে এই বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হচ্ছে, তার কোনও চিহ্ন অবশ্য কাগজটিতে নেই। তবে ট্যাঙ্কের নীচে বসবাসকারীদের দাবি, রেলের কর্মীরাই এই পোস্টার দিয়ে গিয়েছেন। প্রতিটি বাড়িতে গিয়ে উঠে যাওয়ার জন্যও বলেছেন।
সেখানকার বাসিন্দা সোমা রামের দাবি, “ঘর খালি করে দিতে বলা হয়েছে। ১০ বছর ধরে আছি। এখন কোথায় যাব ভেবে পাচ্ছি না!” আর এক বাসিন্দা আবীর সিংহের দাবি, “ট্যাঙ্ক ভর্তি করতে হবে, সে ক্ষেত্রে বিপদ ঘটতে পারে বলে রেল আশঙ্কা করছে। আমাদের জানিয়েছে, ট্যাঙ্কের পরিস্থিতি খুব ভাল নয়। সে কারণেই উঠে যেতে বলেছে।’’