প্রতীকী চিত্র
মাস দুয়েক ধরে বেতন মিলছে না, এই অভিযোগে কাজ বন্ধ করে দিয়েছেন কর্মীরা। তার জেরে ডিসেম্বরের গোড়া থেকে কাজ বন্ধ রয়েছে জামুড়িয়ায় ইসিএলের কেন্দা এরিয়ার নিউকেন্দা খোলামুখ খনিতে। ফলে, ইতিমধ্যে প্রায় ৪৫ কোটি টাকা ক্ষতি হয়ে গিয়েছে বলে দাবি ইসিএল কর্তৃপক্ষের।
খনি সূত্রে জানা গিয়েছে, এই খনিতে কয়লা উত্তোলনের দায়িত্ব পেয়েছে একটি ঠিকাদার সংস্থা। সেই সংস্থার অধীনস্থ কর্মীদের অভিযোগ, তাঁরা অক্টোবর ও নভেম্বরের বেতন পাননি। ১ ডিসেম্বর থেকে কাজে নামা বন্ধ করে দিয়েছেন তাঁরা। ওই কর্মীদের অনেকে অভিযোগ করেন, ঠিকাদার সংস্থা বেতন দেয়নি। সংস্থার কোনও প্রতিনিধি খনিতেও আসছেন না। তাই তাঁরা দিশাহারা অবস্থার মধ্যে পড়েছেন। তদারক করার কেউ নেই, তাই তাঁরা কাজেও নামছেন না বলে দাবি কর্মীদের।
ইসিএল সূত্রে জানা গিয়েছে, এই খনিতে দৈনিক সাতশো টন কয়লা উৎপাদন হত। প্রতি টনের দাম চার হাজার টাকা। সম্প্রতি দৈনিক চার হাজার টন কয়লা উত্তোলনের লক্ষ্যমাত্রা নেওয়া হয়। সেই হিসাবে কাজ বন্ধ থাকার কারণে এখনও পর্যন্ত প্রায় ৪৫ কোটি টাকা ক্ষতি হয়ে গিয়েছে। রাজ্য সরকার প্রতি টনে ২২৫ টাকা সেস পায়। উৎপাদন না হওয়ায় সরকারের তহবিলে প্রায় ১৮ লক্ষ টাকা জমা পড়েনি।
কেন্দা এরিয়া সূত্রে জানা যায়, ২০১৬ সালের নভেম্বরে এই খনিটি চালু হয়। কিন্তু জমির দাম বাড়ানো, পুনর্বাসন, এলাকার উন্নয়ন-সহ নানা দাবিতে এলাকাবাসীর আন্দোলনের জেরে ২০১৭ সালের মার্চ থেকে প্রায় দেড় বছর খনির উৎপাদন বন্ধ ছিল। গত বছর ডিসেম্বর থেকে আবার কাজ চালু হয়। বছরখানেক চলার পরে এখন আবার ঠিকাদার সংস্থা কাজ বন্ধ করে দিয়েছে, জানান খনিকর্তারা।
সংশ্লিষ্ট ঠিকাদার সংস্থার আধিকারিকদের অবশ্য দাবি, খনিটির কয়লা উত্তোলনের জমি প্রায় শেষ। আর যেটুকু জমি রয়েছে তাতে সপ্তাহখানেক কাজ করা যাবে। জটিলতা কাটিয়ে জমি অধিগ্রহণ না করা হলে তাঁদের পক্ষে কাজ চালানো সম্ভব হচ্ছে না। তা করতে গেলে সংস্থার আর্থিক ক্ষতি হবে অভিযোগ করে তাঁরা দাবি করেন, জমির জটিলতা মিটলেই কাজ শুরু করা হবে।
ইসিএলের সিএমডি-র কারিগরি সচিব নীলাদ্রি রায় অবশ্য বলেন, ‘‘জমির জটিলতা কেটে গিয়েছে। এখন যে জমি চিহ্নিত করা হয়েছে সেখানে লক্ষাধিক টন কয়লা মজুত আছে। তা সত্ত্বেও ঠিকাদার সংস্থা কাজ করছে না। প্রয়োজনে ওই সংস্থাকে সরানোর প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে।’’